Sunday, November 10, 2013

আধখানা যুগ ধরে

আধখানা যুগ ধরে
আধখানা শহর পেরুতেই
অপরিচিত হয়ে গেল
পরিচিত মুখ
আধখানা মনের খড়কুটো সব
ভুল হয়ে নীল হলো
সমুদ্রের গভীরে বিলীন হলো
সুখ শব্দ সব
যা কিছু মিথ্যা ছিল
আটপৌড়ে জীবনে নুন আর পান্তা...
খরিদে ব্যয় হয়ে গেল
আজ আর আগামীকালের ব্যবধান
তবু বুদ্বুদ উঠে
মৃত মাছের ফেনা মুখে
শীতল চোখে সে কিনারাতে ভাসে
আধখানা যুগ ধরে

তোমার মিথ্যাগুলো

তোমার মিথ্যাগুলো
সাজিয়ে রেখেছি সব
সকাল, দুপুর আর মাঝরাত্রিতে
মিথ্যা হাসিগুলো সাজিয়েছি চোখের তারায়
আমার সবচেয়ে প্রিয়
মিথ্যা অভিমানগুলো রেখেছি ঠোটে

ক্ষোভ, আক্রোশ আর মিথ্যা অপবাদ্গুলো
ফিরিয়ে দিয়েছি তোমাকে
ওসবে আমার আগ্রহ নেই...

ভালবাসাতে লোভ ছিল
জানি তা মিথ্যা
তবু
হাত বাড়িয়ে রাখি
স্পর্শ করবো বলে প্রতিদিন
সকাল, দুপুর আর মাঝরাত্রিতে

সকালের হিমেল রোদে
ওরা উধাও হয়ে গেলে
আমি জোরে জোরে হাটি
তারপর দৌড়াতে থাকি
ঘোড়দৌড়ে ক্লান্ত
বাতিল ঘোড়ার মত

অপেক্ষা করি দুপুর অবধি
তপ্ত রোদে হয়তোবা রঙ্গ ফিরে পাবে

তবু মাঝরাত্রি আসে
তবু ওরা মিথ্যা থেকে যায়
তবু সাজিয়ে রেখেছি
সকাল, দুপুর আর রাত্রিতে

তুষার

তোমাকে তো বলা হয়নি
এখানে একেবারে শীত এসে গেল
হাড় কাঁপানো

এই তো আজকালের মধ্যেই
তুষারপাত শুরু হবে
অন্ধকারে
ঘরের ভেতরে বসে
শুভ্র তুষারপাত দেখবো চাঁদনিরাতে
তোমার বুকে মাথা রেখে...

ও ভুলে গেছি বলতে তোমাকে
এখন আমি ভুলে গেছি
ভাপা পিঠে বানাতে

ফাঁকা

আমি সত্যিই কাছে এসেছিলাম

খুব কাছে

জীবন থেকে কিছু দূর
তোমার হাত ধরে যেতে
মৃত্যুর কাছে

সব উৎকণ্ঠা জয় করে
সব বাঁধা পেড়িয়ে...
আমি সত্যিই কাছে এসেছিলাম
অগ্রাহ্য করে
তোমার প্রতিবিম্বের ইশারাকে

প্রতিবিম্ব ইশারাতে বলেছিল
আমাকে খোজনি তুমি কখনও
আমাকে চাওনি তুমি কখনও

এই কাছে আসা ছিল
নিছক আমার মনের ভুল

এই ভালবাসা ছিল সুপ্ত
শুধুই আমার হৃদয়ে

তুমি আমাকে ভালবাসোনি কখনও

বনিক ভালবাসা

আমি হৃদয় খুলে দেখিয়ে দিলাম ভালবাসা
তুমি শিশুর মত বোবা চোখে দেখলে চেয়ে চেয়ে
তোমার হৃদয়ে উকি দিয়ে দেখি
তুমি মুখস্ত করছো যাত্রার পালা
ভুগোলের উত্তর, দক্ষিন, বাম আর ডানের দুরত্ব
কম্পাস দিয়ে মাপজোক করে
ঘড়ি ধরে পৌছে যাবে
কতটুকু সময় থাকবে সেখানে
যতটুকু সময় দর্শকেরা এসে পৌছুতে না পারে
দর্শকেরা পৌছে গেলে তুমি ...
হিসাব করে সময় দেবে
উজাড় করে ভালবাসা নেবে
তারপর তুমি হেটে চলে যাবে
মনের ভুলে চলে আসা অপরিচিত মন থেকে
অন্য কোন মনে
যেখানে অপেক্ষা করে ভালবাসা
তুমি আওড়ে যাবে মুখস্ত করা
যাত্রার পালা
ভালবাসা

সমান্তরাল রেখা

তুমি, আমি আর অন্যরা সবাই
হেটে যায় সমান্তরাল রেখায়
আমরা কেউ কারু হৃদয় ছুতে পারিনি
খুব কাছে ছিল অথচ যোজন দূরে
সমুদ্র আর আকাশের নীলে মিশে
মরিচিকার মত ছুটে
তবু কি রেহায় পেলো কেউ?
হৃদয় খুড়ে আকাশ জুড়ে
লবনাক্ত জল জমে মেঘ হলো
অশ্রু হয়ে নামলো আমার চোখে...
তুমি ভয় পেলে
ভাবলে
দুরত্ব ভেঙ্গে আমি বুঝি পৌছে যাবো
তোমার কাছে
দাবী করে বসবো তাজমহল
তুমি আড়াল করলে তোমাকে
অজুহাতের পাহাড় জড়ো করে

ভুলে গেলে
তুমি, আমি আর অন্যরা সবাই
হাটছি সমান্তরাল রেখায়

যে ভালবাসেনা সে ভালবাসেনা

যে ভালবাসে
সে পাথরকেও ভালবাসে
পাথর খুদে মমতাময়ী মায়ের ছবি আঁকে

যে ভালবাসেনা
সে পেশাদার অভিনেতা
পেশারও এমন দাবী!!

পেশাদার খুনীও মিলনবীর্যে
সন্তাণের পিতা হয়...
সেই সন্তানও
প্রেমিক হতে পারে

যে ভালবাসে সে বার বার
ভুল করে
ভালবাসে
পাথরের বুকে মাথা রেখে
হৃদয় খোঁজে
ঝর্ণার শব্দকে হৃদস্পন্দন ভেবে ভুল করে
যে ভালবাসে
সে ভুল করে
বার বার
ভালবেসে

Thursday, October 17, 2013

নতুন মোড়কে পুরানা মাল

এ্যাতদিন লুকিয়ে ছিল
পাশবিকতা
প্রেমে আর প্রেরণাতে
কিছুদিন হলো বাজারে এসেছে
সব চাইতে আধুনিক পণ্য
এই পাশবিকতা
পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে
এর ব্যাপক চাহিদা
পুঁজিপতিরা কিনছে পাশবিকতা
খুচরা মূল্যে
ক্রমাগত বাজার যাচাই হচ্ছে
সব চাইতে নির্মম ও নিষ্টুর
বেইমান ও হিংস্র পশুকে
দেওয়া হবে
বিশ্ব খ্যাত
নোবেল শান্তি পুরস্কার
পাশবিকতাতে প্রশিক্ষিত করা হবে
ভ্রুন থেকে ভূমিতে 
শিশু থেকে তারুন্যে
তারপর বধ করা হবে
অপরিপূর্ন স্বপ্ন চোখে
মিশে যাবে ধূলিকণাতে
ভূতভবিষ্যৎ না জেনেই
সেই শিশু
পাশবিকতা পরিবর্তিত হবে
আবর্তিত হবে
ক্রমাগত নতুন নামে রুপে গন্ধে
গ্রাস করে নেবে সমগ্র জগত



বিবিধ

বিবিধ ----- ১

কেটে গেল এক মাস
দুঃসময়ের মুখোমুখি বসে
তেমনি ছিল বিগত এক বছর
অগাধ অপরিচিত অপ্রত্যাশিত
অপেক্ষা ছিল প্রেমের
অযাচিত বেদনাতে নীল
নির্বাসিত সুখ
অপরিচিত মুখ
খুঁজে পেয়েছে আশ্রয় অন্য কোথাও
অন্য কোনখানে ।

বিবিধ ----- ২

কিছু কিছু চলে যাওয়া এমন
কোন দাগ না রেখে মনের মাঝে
কিছু কিছু চলে যাওয়া এমন
বেহিসাবী
হিসাব নিকাষের বাইরে
চলে যাওয়া চুপচাপ
কোন স্মৃতি না রেখেই
সময়কে ফাকি দিতে যাবার নির্বুদ্ধিতা নিয়ে
কিছু কিছু চলে যাওয়া এমন

বিবিধ ---- ৩


আমি যা বলেছি
তুমি তা বুঝোনি
আমি যা ভেবেছি
তুমি তা ভাবোনি
আমি যা চেয়েছি
তুমি তা চাওনি
বলা, বোঝা, ভাবা, চাওয়া
যার যার তার তার
দুজনের ছিলনা
 সংযোগ ছিল বিচ্ছিন্ন

বিবিধ ---- ৪

পন্য তো শুধুই পন্য
শুধুই পন্য কেনেবেচা দরদাম কষে
সব পন্য রদ্দি হয়
বাজার হারায়
তখন কেউ কেনেনা
ফেলে চলে যায়
সেই পন্য পথের ধারে গলে যায়
ফাংগাসে ঢেলে ফ্যালে তারে
চুপি চুপি রুপ বদল করে
আবার সে ফিরে আসে বাজারে

বিবিধ ----৫
এমন হয়েছে অনেকদিন
খা খা রোদ্দুরের মাঝখানে
ঝম ঝম করে বৃষ্টি নেমেছে
এমন হয়েছে অনেকদিন
তোমার মুখ ভেসেছে মনের ভেতরে
সেখানে শুধুই আমার মন ছিল
একাকী
কোথাও ছিলেনা তুমি কদাচ
শুধু আমি ছিলাম
শুধু আমার মন ছিল
তুমিও ছিলে
শুধু তুমি ছিলেনা কোনদিন

বিবিধ ---৬

যা কিছু আমি চেয়েছি
আমাদের জন্য
 সেইসব কিছু  করতে চেয়েছ তুমিও
অন্য কারো সাথে
আমার সাথে নয়
তুমি আমার স্বপ্ন ছিনিয়ে নিয়ে
অন্য কোন চোখ দিয়ে তা দেখতে চেয়েছ
সব চোখে সব স্বপ্ন আটেনা
সব হৃদয় ভালবাসেনা
তোমার হৃদয়কে শুধাও
তুমি যেমন ভালবাসোনি আমাকে
তেমনি ওরা বোঝেনা ভালবাসা কাকে বলে
তাই সেখানে গভীরতা নেই
মুখস্ত করে কি ভালবাসা যায়?
ভালবাসা কি পুস্তকে লেখা হয়?
ভালবাসা কি বিক্রি হয়
দালালের মাধ্যমে
আদম ব্যাপারীর খাটালে?
অথবা কোন রুপসীর স্তনে?
ভালবাসা হৃদয়ে থাকে
সবার ভালবাসা সবার হৃদয়ে আটেনা
সব হৃদয় ভালবাসেনা


বিবিধ ----৭





Melted Away

The heart has multiple layers
Each layers camouflaged
One has mellow
One has shallow
One layer was all so blue
One layer was filled with autumn sun
another layer was filled with rocks
after been gone through trillion years of pain
The visible layer is decisive
Envelop intoxicated slowly
Layers jolted together
melt down desire in rages

একঘেয়ে

জীবন স্বরিসৃপের মত
মন্থর অথবা জড়
নিকোটিনে বন্দি
বেশ্যার যোনিতে বিলুপ্ত হয়
গ্রাহকের নাম, ঠিকানা, মান, সন্মান
খাটি গাওয়া ঘি বলে চলে যায়
দরদাম হেকে বাজারে বাজারে
সিএনজির চাকায় রোদ থেতলায়
পেটে ভাত নেই
হাতে আইপড আছে
জঙ্গলে হায়েনার উল্লাস
শহরের কোলাহলে মিশে
বিপদের সাইরেন হয়ে বাজে
জীবন স্তব্ধ হয়
স্রোতের মাথায় মাথায়
মরা মাছ ভাসে  
ঘাতকেরা পালিয়ে বেড়ায়
শহর থেকে শহরে
পুরানা আর পরিচিত লাশেরা
হারানো জীবন দাবী করে
নতুন শহরে




দাস-মালিক সম্পর্ক

সব দাসেরই প্রভু হবার বাসনা থাকে
সব প্রভুরাই কারু না কারু দাস থাকে
সব স্তরেই দাস আর প্রভু আছে
মুক্তি রুপকথা তাই প্রিয় পাঠ সবার কাছে
মুক্তি রুপকথা রাজ্যের মূল ফটকে
এক মৃত তালা ঝুলে
দাস আর প্রভুরা পালা করে
এই মৃত্যুর দায়ভার বহন করে

অধরা




খোলা মাঠ
গনগনে রোদ্দুরে
এক ঝাঁক কাক
মধ্যখানে বসে
অলস গাভী জাবর কাটে
নিমের নরম ডালে
দোল খায় চড়ুই পাখী
সেখান থেকে একটু নিচে
 খালের হাটু জলে
খেলা করে ছেলেপুলে
মৃত গাছের গুড়িতে বৃদ্ধ বসে
স্মৃতির দুয়ার খুলে
নেমে আসে কিশোর হয়ে
হাতের কব্জিতে ছ্যাচা খায়
হাটু জলে ঝাপ দিয়ে

কবর

আমি সূর্যকে ভয় করি
আলোতে স্পষ্ট দেখা যায়
অদ্যবধি যা কিছু ঘটে গেছে
এই হাটে
ভাঙ্গা হাড়ি, চুরমার কাঁচ
হতাশা, ক্রোধ, অমীমাংসিত বোধ
উচ্ছিষ্টের মত ছুড়ে ফেলে দেওয়া মন
কালাবাজারে বিক্রি হয়
মান সন্মান আপনজন 

আমি সূর্যকে ভয় করি
আঁধারের অপেক্ষা করি
চাঁদের মিষ্টি আলোতে
গল্প বলতে পারি
যা কিছু জ্বলে গেছে
সূর্যের আগুনে

আঁধারের অপেক্ষা করি

আলোতে হারিয়ে যাবার বড্ড ভয়
আঁধারে নিজেকে খুঁজে পাই


Sunday, September 22, 2013

শূন্য

বুকে হাত রেখেছি
খুঁজে পাইনি
এমনকি অবশ হৃদপিন্ড
চোখে চোখ রেখেছি
সম্পুর্ন অনুপস্থিত ছিল
ভালবাসা
শুধু ক্ষুধা ছিল
না মনে না দেহে
শুধু বেঁচে থাকার প্রয়োজনে
শুধু ক্ষুধা ছিল কাগজের...
কাগজ ঠাসা পেটের ভেতরে
জ্বলে আগুন দাউ দাউ করে
সেখানে শুধু ছাই
বিশুদ্ধ আর পবিত্র ছাই
কেটে রাখে কালো আঁচড়
ফেলে যাওয়া সময়ের
এমনকি কোন টিউমার
পাইনি খুঁজে
হৃদপিন্ড খুঁজে খুঁজে
কেটে গেছে কত কত কাল
শুধু কালো কালো আঁচড়ের দাগ
কাঁটা ছিল শূন্য ডেকের উপরে
উড়ে গেলে বিশুদ্ধ ছাই
বাতাসে

জড়ো

অপ্রয়োজনে কেউ কাছে এলে
সবাই তিরস্কার করে
তাই ভালবাসার রুপকথা বলতে হয়
প্রয়োজনের কথা খামে ভরে রেখে
তারপর ভালবাসার রুপকথা শুনে শুনে
মন আছন্ন হলে গভীর ঘুমে
খাম থেকে প্রয়োজনের সব গল্পেরা এসে
খুঁজে নেয় যার যার অবস্থান
ভালবাসার রুপকথার নেশা কেটে গেলে
সূর্য উঠে নিদারুন আগুন হয়ে ...
শুখিয়ে দেয় ভালবাসার ফল্গুধারা
প্রয়োজনের গল্পেরা বুকের কাছে এসে
শ্বাস নেয় জোরে জোরে
রুপকথা ঝাপি বন্ধ করে উদাস হয় চোখ
অকারনে অশ্রু ঝরে
মাটির ভাঙ্গা পুতুল ভাগাড়ে ছুরে ফেলে
প্রয়োজনের গল্পেরা রুপকথা খেয়ে ফ্যালে
পরিতৃপ্তির ঢেকুর তুলে
যার যার অবস্থান থেকে
নতুন এক দিন শুরু করে

বুনো ফুল

আমি কেঁদেছি ঠিকই
তবে লুকিয়ে ফেলেছি অশ্রু
মিশে যেতে দেইনি মেঘে
মিশে গেলে মিলে যেতো
হারিয়ে ফেলতো স্বকীয়তা
আমি লুকিয়ে ফেলেছি অশ্রু
আলো আঁধারে ডেউয়ের দোলায়
ভেসে যেতে দিইনি স্রোতে
ভেসে গেলে খুঁজে নিতো
অন্য এক নাম অন্য এক বাকে
হারিয়ে ফেলতো আমার নাম
বুনো ফুলের সুবাস
আমি লুকিয়ে ফেলেছি অশ্রু
কারু চোখে পড়তে দেইনি
দেখে ফেললে মূল্য হারাতো
অমূল্য মনিমুক্তো

Saturday, August 17, 2013

সুহাসিনী

মরুভুমি ছিল
মরিচিকা ছিল
বুক বেঁধেছিল মরূদ্যানের
সুহাসিনী সেই মেয়ে
জোছনাতে ভেজা স্নিগ্ধ চুলে
নেচেছিল খুশী চোখের তারায় নিয়ে
হেসেছিল ঠোটে মিষ্টি হাসি
নগ্ন পায়ে পথ চলে চলে
মরু মাকরসা শুষেছিল
তার শোনিত ধারা...
চিকচিকে বালু
দিয়েছিল ঢেকে
ফ্যাকাসে সেই মেয়ে্র শবে
নুপুরটা শুধু ঝিকমিক করে
জেগেছিল

তারার আলোতে
সারারাত ধরে

Saturday, June 29, 2013

পাশবিক

মানুষের ভেতর এক পশুও বাস করে।
মানুষ যখন স্কুলে যায় সেই পশু ঘুমায়।
মানুষ যখন লোকালয়ে
সমাজের সভ্যতা চচ্চড়ি ভাঁজা করে
তখন সেই পশু ঘুমায়।
মানুষ যখন দ্যাখে শক্তিশালী মহিলা
বা মহিলার বাপের অগাধ টাকা সেই পশু ঘুমায়।
মানুষ যখন দ্যাখে কোথাও কেউ নাই -
সেই পশু হাই তোলে।
মানুষ যখন দ্যাখে এই বিশাল দুনিয়াতে
এই মেয়ে সম্পুর্ন একা সেই পশু নখ বিস্তার করে।
মানুষ যখন বুঝতে পারে
এই মেয়ে কাদা মাটি ভীত সন্ত্রস্থ
ভালবাসার কাঙ্গাল
বুক ভরা আবেগ চোখ ভরা জল;
এই পশু তখন সেই মেয়ের ঘাড়ে নখ বিধিয়ে দেয়।
এই মেয়েকে রক্তাক্ত করে
এই মেয়ের চোখের জল শুষে নেয়
এই মেয়ের হৃদয় মরুভুমি হলে
এই পশু ধীরে ধীরে হাটে, ঢেকুর তোলে, এদিক সেদিক দ্যাখে
পেটের নীচে হাত বুলিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে
আবার কোন নির্জন দ্বীপে জেগে উঠবে বলে
যেখানে পাশবিকতার মান মর্যাদা আছে
সুধুমাত্র নরম জাগাতেই এই পশু বীর্যপাত ঘটায়

ফাঁকা

মিথ্যা বলে
সত্যের মতো
ভালবাসা নিয়ে
প্রেম নিয়ে
সুধু দেহ পায়
মন হারিয়ে যায়
মিথ্যার আবরন খুলে যায়
মিথ্যার শেকরের পোকাভরা
বিল বিল করে বেরুতে থাকে
নানা রঙের পোকা
নানা আকারের পোকা
নানা ধরনের ইচ্ছা অনিচ্ছা নিয়ে
এই পোকারা দাবী করে
বিবেক
দেহ থেকে ছিলে বিবেক বের করে নিয়ে
যায় টুকরো টুকরো দাঁতে
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নোংরা নখে
বিবেকের টুকরোগুলো ঝুলে
অসহায়
সেই স্বাস্থ্যবান পোকাদের আহল্লাদী
হেলেদুলে চলা
বিবেকের
টুকরোঁ পেটে চিক চিক করে চামড়া
মিথ্যারা সব বেরুতে থাকে
কিল বিল করা পোকা
সত্য বলেনা ওরা
প্রেমের কবিতা - মিথ্যা
ভালবাসার কথা - মিথ্যা
দেহ পায় সুধু
হৃদয়ের পচাগলা পানি পানি
সতেরো, সাতাশ, সাইত্রিশ, সাতচল্লিশ, সাতষট্টি
সব গুলো দেহ সত্যের অপুষ্টিতে ভোগে
মিথ্যার বেসাতী
সব গুলো হৃদয় পচাগলা
পানি পানি

কুড়ে খায়

জীবন ধ্বংস হয়ে যায়
ধূলো হয়ে যায়
বেদনা বুকের ভেতর
কুঁড়ে খায় সুখের শেষ টুকরো
সেই ধ্বংস দিব্যি হাসে
ভালবাসে ধোঁকা দেয়
অভিনয় করে অবিকল দেবদাস
কি নিখুঁত যারা বোঝে তাঁরা টোকে
যারা বোঝেনা তাঁরা ঝোকে
যারা ধোকা খায়
তাঁরা ভেসে যায় বানের জলে
কুঁড়ে খায় সুখের শেষ টুকরো

মাঝ রাতের দর্শন



 ধর্ম কি?
ধর্ম হলো বিশ্বাস ।
বিশ্বাস কি?
বিশ্বাস হলো স্বার্থ।
স্বার্থ কি?
নিজের জন্য কিছু পাওয়া।
ধর্মে বিশ্বাস করি নিজ স্বার্থে।

ধনী ধর্মে বিশ্বাস করে কেন?
যাতে দরিদ্ররা তাদের অনুসরন করে।
ইহকালে বা পরকালে
কোন না কোনকালে সম্পদ কুক্ষিগত হবে।
পরকাল অজানা
ইশ্বর অজানা
এই অজানাকে অবিশ্বাস করা পাপ,
মহাপাপ।

ভয় কি?
অজানা ক্ষতির আশংকা।
ভয় কি কি কাজে লাগে?
বেঁচে থাকার জন্য দৌড়ানোর প্রয়োজন,
ভয় ফেউয়ের মত পেছনে লেগে থাকে
যাতে মানুষ দৌড়াতে পারে,
জীবিকা নির্বাহের পদ্ধুতিগুলোকে ধরার আশায় ।

একজন সর্বহারার কি কি হারাবার ভয় থাকে?
ইহকালে কিছু পাইনি
পরকালের পাইবার পথগুলো যাতে রুদ্ধ না হয়
সেই অজানা ক্ষতির
সেই “নেই”কে না পাবার ভয়।

আকাশ কি ধরা যায়?
যায়না।
আকাশে কে কে থাকেন?
যা কিছু ভাল, যা কিছু অধরা, যা কিছু অজানা, যেমন, ইশ্বর।
এ্যাত জাগা থাকতে ইশ্বর আকাশে কেন থাকেন?
ধরা ছোয়ার বাইরে তাই।
ইশ্বর অজানা তাই আকাশে থাকেন।
স্বপ্ন অধরা তাই আকাশে থাকে।
সম্পদশালীরা শক্তিশালী তাই উঁচুতে তাদের বসবাস
আকাশকে স্পর্শ করতে ভয় – উচ্চতার জন্য
সম্পদশালীদের সবাই ভয় পায় উঁচুতে থাকে তাই
ধরাছোয়ার বাইরে। তাই আকাশে ইশ্বর আর পাতালে সম্পদশালীরা
এরা সবাই দুরে থাকে
তাই ধর্মে বিশ্বাস করি ইহকালে বা পরকালে –
কোন না কোন কালে স্বার্থসিদ্ধি হবে।।

পানির নীচে

পানির নীচে বসবাস
ডুবুরীর মত নয়
কারন ডুবুরীরা পানির নীচে বসবাস করেনা
তলদেশে যায় সুধু মাঝে মাঝে
কুড়াতে মুক্ত মনি মূল্যবান পাথর

পানির নীচে বসবাস
জলজ উদ্ভিদের মতোন
জলজ উদ্ভিদ ঘরে
বসবাস করে তলদেশে
তাই অভ্যাস হয়ে গেছে

পানির নীচে বসবাস
যে বার বার ডুবে যায়
নাকেমুখে পানি ঢুকে যায়
বিনা অনুমতিতে
চুবানি খেতে খেতে
এক সময় অভ্যাস হয়ে যায়
পানি খুঁজে নেয় নাকে মুখে
যাবার সোজা পথঘাট

অসম্পুর্ন

কবিতা অসম্পুর্ন
জীবনের মত
স্বপ্ন দেখা শেষ না হতেই ঘুম ভেঙ্গে যায়
ভাল স্বপ্ন হলে খুঁজে ফিরি
দুঃস্বপ্ন হলে ভুলে যেতে চেষ্টা করি
তবুও অসম্পুর্ন থাকে
স্বপ্ন, কথা, প্রত্যাশা, বাদবাকী পরিকল্পনা
কোন কিছু শেষ হলেও অতৃপ্তি থেকে যায়
কোথায় যেন কি যেন থাকা উচিৎ ছিল
সেটা কি ছিল? কেন যেন মনে করতে পারিনা
তবে এইসব কিছু
এই ভাবনা অসম্পুর্ন
অমুক পাওয়া উচিৎ ছিল
তমুক পেতে পেতেও কে যেন নিয়ে গেল ছিনিয়ে
সব দোষ সেই ছিনতাইকারীর
আমার জীবনের অসম্পুর্নতার জন্য
আমার কোন দায় দায়িত্ব নাই
আমার কবিতার অসম্পুর্নতার জন্য
আমি দায়ি না
ভাবনাতে হাল ছেড়ে দিয়েছি
জীবনে হাল ছেড়ে দিয়েছি
নৌকা বয়ে গেছে একাকী
উত্তাল সমুদ্রে ঝড় এলে
দিকবিদিক হারিয়েছে
যেখানে যা কিছু থাকার
সেখানে সেই সব কিছু নেই
যেখানে যা কিছু থাকার নয়
সেখানে সেইসব অযাচিতরা ভীর করে
অনাহূত অপ্রত্যাশিত আগন্তুক
পথের ধারের জানালাগুলোতে
শিমুল তুলো থেকে বোনা কাপড়ের পর্দায়
সুঘ্রাণ মোটেই অপরিচিত নয়
সুধু আমি অপরিচিত
আমার কবিতা আর জীবন অসম্পুর্ন

নিঃশব্দে

চলে গেলে
নিঃশব্দে
হেসে হেসে বললে
নিঃশব্দে
শব্দ না করেও বুঝে নিতে হবে
সব দুঃখ
নিঃশব্দে
শুধু মুখ দেখে
শুধু চোখে চোখ রেখে
জানালায় বাতাসের আসা যাওয়া
বুঝে নিতে হবে
পাতার কাঁপন দেখে
তবু উৎকণ্ঠা
তবু ভয়
নিঃশব্দে
চলে গেলে
হেসে হেসে
নিঃশব্দে

থেমে থাকা

চলে যাওয়া মানে থেমে থাকা
গল্পে, হাসিতে, স্মৃতির আবেশে
এক বিষন্ন সন্ধ্যায় কার্নিশের কাক
নেই কোন হাক ডাক
উড়ে যায় হঠাৎ
ডানার শব্দে চকিতে চেয়ে
দেখি সে ছিল বসে
এ্যাতক্ষন জানিনি
এখন আর নেই
চলে যায় কালো ডানা নিয়ে
চলে যাওয়া মানে
থেমে থাকা অলস দুপুরে
ক্লান্ত পদযুগল থেমে গেলে
টুকরোঁ হাসি বিঁধে থাকে
মাথার পেছনে টেনে বাঁধা চুলের ক্লিপে
থেমে থাকে পথের মধ্যিখানে
রোদ্দুরে
চলে যাওয়া মানে থেমে থাকা
আনমনা হওয়া না হওয়া সময়ে

শক্ত

ইট কাদা মাটি থেকে হয়
রুটিও আটা থেকে হয়
কাদামাটি বা আটা
শুরুতে ছেনে নিতে হয়
ফাইনাল ফর্মে যাবার পর
ইট কেউ ছানতে যায়না
রুটি ছিনিয়ে নিতে চায়

শান্তির অন্বেষণে



পারস্য থেকে হেবরনে
আব্রাহামের আগমনের পর
হিট্টিদের জীবনে শান্তি আসেনি
কোনদিন তারপর আর

হোসেনের শিরোচ্ছেদের পর
কারবালাতে শান্তি আসেনি
কোনদিন তারপর আর

সাড়া বিশ্ব ইহুদীদেরকে বিতারিত করে
নিজ ভূমে প্যালেস্টাইনিরা মরে
ভিটা ছেড়ে সাড়া বিশ্বে ছড়িয়ে পরে
ইহুদীরা প্যালেস্টাইনে এসে বসত গড়ে

এইভাবে মিউজিক্যাল চেয়ার খেলাতে
শান্তির গান বাজে
শিয়া সুন্নীরা লড়াই করে
বিদেশীরা এসে সম্পদ লুন্ঠন করে
ফোরাতে রক্তের স্রোত নাচে
শান্তির বাদ্যের তালে তালে

এইভাবে সাড়া বিশ্বের বেইমানেরা
বিদেশীদের কাছে বিক্রী করে মা, মাটি, মাথা

নিজ বাসভূমি পিছে ফেলে
রিফুজীরা
রক্তাক্ত শেকড় ফেলে আসে পৃথিবীর এক প্রান্তে
জন্ম দেয় আরও শান্তিপূর্ন জনমানবের
পৃথিবীর অন্য আরেক প্রান্তে

ধর্ম নয়
মানবতা নয়
শান্তি নয়

সম্পদ গ্রাসের লোভ
নিয়ন্ত্রন করে শান্তিকে

শান্তি নয় - যুদ্ধ এনে দেয় মুষ্টিতে
বিশ্ব নিয়ন্ত্রনের কলকাঠি
শান্তি মরিচিকা শুধু
শান্তি এক মূলো - গাধার নাকের ডগায় বাঁধা

নিরুপায়

নিরুপায়, অসহায় আর দুর্বলেরা ধর্মরে গালি দেয়
কর্তৃপক্ষের কিছু ছিড়তে পারেনা
ভারতের বানানো গাড়িতে চড়ে
কার্বন এমিশনে ভাইয়ের শ্বাসরোধ করে
নিজ দেশে ভারতীয় হুজুরের অধীনে চাকুরী করে
বেতনের পুরাটাই ভারতীয় পন্য ক্রয়ে শেষ
ঋনের জন্যেও ভারতের কাছে হাত পাতে
দুই পুরুষ ভারতের কাছে বন্ধক
ভারতের কিছু ছিড়তে পারেনা
হাজার বছর আগের কিসসা ও কাহিনীরে ছেড়ে
দুর্বল, ভিরু, কাপুরুষেরা
নিজের ভাইয়ের গলাতে পা দিয়ে দাঁড়ায়ে
ভারতের আপদমস্কক চাটাচাটি করে
মিরজাফরের বাচ্চারা এখন জেগেছে
পুজাপাঠে মেতেছে
দালালীর কমিশনে যদি আরও এক পুরুষেরে
রাখা যায় বন্ধক
আশায় বুক বেঁধে মেরুদ্বন্ডহীন স্থবির
পশুরা বুকে হাটে
লালা ফ্যালে - বিদেশী প্রভু খোঁজে
হাত ধরে উঠে দাঁড়াতে
হাজার বছরে পুরানা রুপকথা ছেড়ে
ভাঙা মেরুদ্বন্ডে গোঁজে

খুব ছোট্র এক পাখী – ফিঞ্চ

খুব ছোট্র এক পাখী – ফিঞ্চ
গলাতে সরু বাদামী
সরু নীল রঙ দুই ডানাতে ছড়িয়ে
চলে গেছে ল্যাজের শেষ পর্যন্ত
শীষ দেয় এডালে সেডালে এসে
তারপর নিমেষেই উড়ে যায়
একেবারে বনের আরেক প্রান্তে
এইভাবে খুঁজে নেয় সাথীরে
খুব ছোট্র এক পাখী – ফিঞ্চ

বিশ্বাসের দরদাম

বিশ্বাস দুইভাবে অর্জিত হতে পারে
কিনে
মাগনা
খরিদ করা বিশ্বাস মোটামুটি টেকসই
না হলেও বিক্রিত মালের গারান্টি আছে
মাগনা বিশ্বাস করলে সাথে ঝুকি থাকে
হারাবার
বিশ্বাস হারিয়ে পাগল হবার বেদনা
বিশ্বাস হত্যা হলে তার দাফন কাফনের যাতনা

মাগনা বিশ্বাস অনেকটা
নিজের পায়ে নিজেই কুড়ুল মারার মতো
নিজ দায়িত্বে বিশ্বাস করো
নিজ দায়িত্বে কাঁটার উপরে চলো
রক্তাক্ত করো গোড়ালি
বাকী পথে পথে
ফেলে রেখে যাও চিহ্ন

যা কেউ চিনতে পারেনা
বুঝতে পারেনা কখনও

বিশ্বাস করতে পারেনা অবিশ্বাসকে
কেউ বিশ্বাস করেনা তোমাকে
বেদনাকে/যাতনাকে/মর্মপীড়াকে

সেই মাগনা বিশ্বাসে মোহিনী যাদু আছে

আগে আসিলে আগে পাইবেন ভিত্তিতে
খুব কাটতি বাজারে
যদি এই বিশ্বাস সত্যি হয়
মন্দ নয়!
টাকা দিয়ে বিশ্বাস কিনে যদি ঠকতে হয়!
তারচেয়ে মাগনা দিয়ে ট্রাই করো
তাই মাগনা বিশ্বাস যদি ঠকায়
তবু ভাল
মন্দের

তবু মন মানেনা
মাগনা আর কেনা
দুটোতেই ঝুকি মনে পচন ধরার

আবর্জনার সজ্ঞা


 একজনের কাছে পরিত্যক্ত
আরেকজনের কাছে পরম সম্পদ

একজনের কাছে প্রয়োজনীয়
আরেকজনের কাছে অপ্রয়োজনীয়

একজন ফেলে দেয়
আরেকজন কুড়িয়ে নেয়

একজন ঘৃনা করে
আরেকজন ভালবাসে

একজনের আছে অঢেল
আরেকজনের আছে ঘাটতি তাই নিরুপায়

স্ত্রী দ্বারা পরিত্যাক্ত পুরুষের স্ত্রীর অভাব নাই
স্বামী পরিত্যাক্তাদের স্বামীর অভাব
পুরুষেরা ভয় পায় পু্নরায় বা পরিত্যাক্ত হবার।

সরে এসো দুঃখ থেকে

সরে এসো
সেই প্রান্ত থেকে
স্বব্ধ সময়ের
জঙ ধরা করাত দিয়ে ভেজা গাছ কাটা
এক চিলতে রোদ
এসে বসতে না বসতেই
উধাও
আরেক হেমন্তের আশায়

পড়ে দেখো সব শব্দ
হোচট খাবে নিজেরই কল্পনাতে
একদিন এইসব গল্প, গল্প ছিলনা
প্রত্যাশিত শব্দ ছিল
ভাতের জন্য অপেক্ষারত ক্ষুধার্ত পেটের মত

সরে এসো
কার্নিশের অতটা কাছে গেলে
হাত যদি রেলিং ফসকায়
মুখ থুবড়ে পড়বে তুমি
নিজেরই ছায়ায়

দুঃখের অন্যপিঠে একটি নয়
আমাদের দুজনেরই নাম ছিল
লেখা প্রতিশ্রুতির সবুজ কালিতে
সেই রঙ ফ্যাকাসে হলো
সেই গল্প প্রাচীন হলো
তুমি শুধু এখনও দাঁড়িয়ে আছো
মিউজিয়ামের বৃহৎ ঘরে

সরে এসো – দু’পা হেটে মোর পেরুলেই
ঝম ঝম করে বৃষ্টি নেমে
ধুয়ে যাবে এই প্রাচীন গল্প
তখন ঝির ঝিরে বাতাসে
শেষ রোদ্দুর মুঠোতে ধরে ফেলো
আলতো করে

সরে এসো দুঃখ থেকে

যথাক্রমে পবিত্র ও অপবিত্র

গোসল করে
অজু করে
পাক পবিত্র হলো দেহ
আর মন?
নামাজে আসার আগে
নতুন কাজের বেটির
আটোসাটো দেহ আঁকা
যে মনে
সেই মন হলো পবিত্র

প্রেম পবিত্র হয় দুইভাবেঃ
আইনের কাগজে দস্তখত করে দেহদান
স্বামী ছাড়াও বিবাহ বহির্ভূত প্রেমিককে দেহদান
এই দুই সম্পর্কই পবিত্র

এখানে অপবিত্র কি কি?
উপরের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা
স্ত্রীর চোখের তারাতে সন্দেহের ঘনঘটা
পান থেকে
খসে যাওয়া চুন অপবিত্র

চাহিবামাত্র দেহদান - পবিত্র
সমঝোতাতে অস্বীকৃতি অপবিত্র
শরীরে বহু ভালবাসার ঘ্রান পবিত্র
মনে একাকী ভোগের আকাঙ্ক্ষা অপবিত্র
ভাগ বাটোয়ারা পবিত্র
যদি তা কেউ জেনে যায় - অপবিত্র
প্রকাশ আর অপ্রকাশের মাঝামাঝি
পবিত্রতা আর অপবিত্রতার বসবাস

মন অপবিত্র
যে মন বহুগমনে ইর্ষান্বিতা

ভূত ভবিষ্যত

জ্যোতিষীর সব কথা রাতারাতি ঠিক হয়না
সেটা আমিও জানতাম
আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেছে
বলেই তো গেলাম
হাতের মুঠো খুলে দিলাম
আর সব ভাগ্য উবে গেল রাতারাতি
সেটা আমিও জানতাম

যদি বলি ভালবাসি
তুমি বোঝো মাল বিকোচ্ছেনা
বাজার খারাপ

যদি বলি ঘৃনা করি
তুমি বলো মাগী দেমাগ দেখাচ্ছে
ভাউ বাড়াচ্ছে বাজারে

আমিও জানতাম সেটা
বাজারে মাল বেচাকেনার
দক্ষতা সবার সমান নয়

কেউ বেশী মুনাফা করে কেউ কম
এই দক্ষতাই মাল বিক্রী করে
ব্যবসায়ী/টাকাকড়ি মালপানি
সম্পদ/বৈভব/গহনা/শাড়ী
এ্যাত পছন্দ অথচ
বেচাকেনা নাম শুনে নাক কেন সিটকায়

জানতাম সেটা আমিও
মুঠো খুলে দিলাম
পড়ে ফেললে ভূতভবিষ্যত
আর ভেঙ্গে দিলে স্বপ্ন চুরমার
নষ্ট করে দিলে আচ্ছাখাসা বাজার

জ্যোতিষীর কাছেই ঠেলে দিলে অগত্যা
আমি জানতাম
এমন যে হবে তা

সহ্য অসহ্য

তুমি এ্যাত জোরে কেশোনা!
তুমি এভাবে হেসোনা!
তুমি এভাবে বলোনা!

তুমি বেদনাদায়ক হলে
তুমি পরিত্রান পেলে
যাতনা নেই
হাসি, কাশি, উঠাবসা
অসহ্য কথা
নেই, নেই কিছু নেই

এইবার বলো, কেমন আছো?
তুমি কি শান্তি পেলে?

তুমি বিনে আমি শান্তিতে আছি

লালন পালন

সবাই লালন পালনে অভ্যস্থ নয়
কেউ কেউ পালিত হতে ভালবাসে
অন্যগৃহে
নিজগৃহ থেকে বিতারিত হয়ে

কেউ কেউ যাযাবর হতে ভালবাসে
কি যেন জ্বলে যায় প্রতিদিন
আগুনের আঁচ অনুভব হয় শুধু
নেভাতে পারেনা আগুন

অনল নির্বাপনের যাদুর বালি
হারিয়ে গেছে
অনেক আগে
প্রাচীন পুঁথির বিলুপ্ত দাগে

ধরে নিচ্ছি কিছু লেখা ছিল
সেখানে একদিন
এখন যা কল্পনা শুধু

বাস্তবে পা রাখতে ভয়
তাই কল্পনার ফানুসে নির্ভর
কেটে যায় বেশ
একে ওকে দোষ দিয়ে

নিজের দায়িত্ব এড়িয়ে
বাকী সব ছেড়ে দিয়ে
একদা অমুক ছিল
এখন আর সেসব তমুক নাই
হবেনা কোনদিন

নিজের মুরোদ জানা আছে
কি কি অজুহাত
ছিল এইসব প্রাচীরের আশেপাশে

মন

মন বুঝে ফেললে
মন রাখা হলোনা
মন ভেঙ্গে গেলো
মন থেকে উড়ে
অন্যমনে বসলো যেয়ে
ভাঙা মন আর
লাগেনা জোড়
হাজারও সংযোগে
শুধু বিরম্বনা
এলোমেলো ভাবনা
মাঝখানে রইলো ঝুলে
বিদ্যুতের তারে ঝুলে
মৃত কাকের ডানা
একবার রওনা হয়েছিল
শেষ হয়নি যাত্রা
অন্যমনস্ক
এক দুর্বোধ্য বেদনা
আঁটকে দিলো পথিমধ্যে
কি ছিলনা
বোধহয় ভালবাসা
এই সাড়া পথে
বিশাল ভ্রমনে
তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ
শুধু দুঃখ পেলে
ভালবাসতে যেয়ে
আটকে গেলে
মৃত কাক হয়ে

ছাই ফেলতে ভাঙ্গা কুলা

সোনা ফেলে ছাই কুড়িয়ে
তুলে নেয় ভাঙা কুলো
ছাই ফেলতে

এখন সময় শেষ
দেখতে দেখতে দেখার অভ্যাস
বলতে বলতে বলার অভ্যাস
তবু শোনার অভ্যাস হলোনা
শুনতে শুনতে

বার বার
ঘ্যানর ঘ্যানর এক কথা
নতুন কিছু বলো

বচনে সুধা ছিলো
কোন এককালে
সুরভিত হতো
রাতের কামিনী

তৃষ্ণার্ত ঠোট
উষ্ণ প্রেম
একবার মনে হলো
খোসা শুধু
চুষে খেয়েছে ভেতর
খোকলা

মৈথন মিথ্যা
প্রেম নয় দুর্গন্ধ আসে ভাড়া করা দেহের

বিড়ি

শুধু লড়াই চলে চারিদিকে
বিড়ির ধুম্রজালে আটকে থাকে শ্বাস
রুদ্ধ হয়
দগ্ধ হয়
বন্ধ হয়
তবু শ্বাসেরে ভালবাসেনা
বিড়ি ভালবেসে
রুদ্ধ করে শ্বাসেরে
লড়াই করে শ্বাস প্রতি টানে
প্রতিবার
বার বার
ক্ষিন হয়
ধীর হয়
স্থির হয়
হেরে যায় শ্বাস এক সময়
বিড়ির ধুঁয়া বিজয়ের কাশি কাশে
অতঃপর
অক্সিজেন/নেমুলাইজ্যার/মাস্কে
অন্যান্য অষুধে দ্রুত
লড়াইয়ের মাঠে নামে
রেড ক্রসের মত
শ্বাস ফিরে আসে
আবার বিড়ি হাসে
ফাঁসির আসামীর শ্বাসের শেষ ইচ্ছা
বিড়ির সুখটান দেবো
শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের আগে।

ক্লান্ত প্রকৃতি

প্রকৃতির সাথে হেটে হেটে
খুব ক্লান্ত আজকে
পৃথিবী ।

ঝড়, বৃষ্টি, আলো, আঁধার
এদের সাথে ছুটে ছুটে
খুব ক্লান্ত আজকে
আমি।

বিশ্রাম নিতে নিতে
ক্লান্ত ।
একঘেয়ে জীবন টেনে হেচড়ে
ঘষেমেজে বলতে
ক্লান্ত ।

পা চলতে চায়না আর
মন টেনে নিয়ে চলে
হোচট খেয়ে পড়ি
অনিশ্চয়তার গর্তে ।

খুব ক্লান্ত আজকে
আমি।

সাধু

আমরা ভাব ধরতে ভাল পারি
এমন ভাব যেন ভাঁজা মাছ উলটে খেতে জানিনা
এমন ভাব যেন যত দোষ নন্দ ঘোষের
আমরা সবাই সাধু
তাইলে দোষীগুলা থাকে কৈ
সবাই সাধু বলেই
অসাধুদের দৈর্ঘ্যে, প্রস্থ, নির্ণয় করা যায়না
বজ্জ্বাতেরা করে থৈ থৈ
চারিধারে
সাধুর ভাব ধরে

মুখোশ

কে ভাল মানুষের মুখোশ পড়ে?
শয়তানে।
কে নিজের পরিচয় দেয়না?
শয়তানে।
অতিরিক্ত মনোহরন
প্রেমসিক্ত নিবেদন
নরম পদে বিচরন
চাহনি হরিনের মত
ভাব অসহায়
সব সময় হারাচ্ছে
সব সময় দিয়ে যাচ্ছে
ত্যাগে বিশ্বাসী
শয়তানে নেয় না কিছু
শুধু ব্যাথা পায়
বেদনাসিক্ত
ক্ষনে ক্ষনে আহত
তবু কৃতজ্ঞ
এইসব মুখোশ শয়তানের জন্য জরুরি
বিষাক্ত নখ বিস্তারের আগে
মাটি নরম করা প্রয়োজন
শয়তান সবার চেয়ে
সভ্য, ভদ্র
আর নিখুঁত অভিনেতা/অভিনেত্রী

দালাল

ভাই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করে
বিদেশীরা দূর থেকে হাসে
বিজয়ীর হাসি

বিদেশীরা সব সময়ই নির্দোষ
বিদেশীদের সব কিছুই সুন্দর
বিদেশিরা সব সময়ই নির্ভুল
বিদেশীদের পদলেহনে মধু
বিদেশীদের কমিশনে জাদু

ভাইয়ের পিঠে ছোড়া ভুকে
ভাইয়ের রক্তে স্নান করে পবিত্র
বিদেশীদের হুকুমে ল্যাজ নেড়ে
বিস্বস্ত কুকুর পদে পদোন্নতি

বিদেশীরা না থাকলে এ্যাত আরাম আয়েশ
যেতো সব রসাতলে
বেইমানীতে সরগ এসে
হাতের তালুতে তা থৈ থৈ নাচে

আশা

সব চেয়ে ছোট ছিল আশা
করা হতোনা তাই
একেবারে ধরা ছোয়ার বাইরে
থাকতো সব সময়

দুরের জিনিষ ক্ষুদ্র
অজানা অচেনা
কল্পনার ফানুস

যতক্ষন হাতের মুঠোতে না এলো
তো কল্পনার উষ্ণতা থেকেই গেলো

সেই দুর্লভকে পেতে
কতই না কল্পনা জল্পনা
একদিন গজব হলো
তো সে যখন কাছে এলো
ধরা দিলো
ব্যবহৃত হলো

তো ফালনা মনে হলো
আবার
চললো অধরা হননে
এক অভ্যাসের মতো

দুর্লভ প্রাপ্তির যোগ সুভ ।।

শান্তি

সারা বিশ্বে যারা বোমা বর্ষন করে
তারা আসলে শান্তি আর গনতন্ত্র বর্ষন করে
আশ্চর্য আমি এ্যাত পাথর
এই সুন্দর ব্যাপারটা
কোনদিনই অনুধাবন করতে পারিনি
অসহায়ের মত শুধু দেখেছি
মায়ের হাতে শিশুর মগজ
শহরে শহরে ধংসযজ্ঞ
বিষাক্ত বাতাস
জমে মেঘে যেয়ে চুপচাপ
অশ্রু আর কেমিক্যাল মিশে
হয় একাকার
আমি দেখি দাসত্ব
গনতন্ত্র আর শান্তি অনুধাবন করতে পারিনি
কোনদিন কোথাও
কোন বোমা
কোন আগ্নেয়াস্ত্র
কোন দালাল
কোন নেতা
কোন শান্তি পুরস্কার
কোন কিছুতেই কল্যানকর কিছু খুঁজে পাইনি
হতে পারে আমার দেখার ভুল
হতে পারে আমি অন্ধ

বোমা
ধংস
মৃতদেহের সাথে
গনতন্ত্রের সংযোগ
নতুন সময়ের
পুরোনো আর বেমানান
সন্ধান

ছায়ার গল্প

আলো আঁধারে এক ছায়ার গল্প বলি
শব্দ করে কান্না করেনা সে মোটেই
যতই দুঃখ থাকুক
অপেক্ষা করে আঁধার কাটার
কেটে তো যায় তবে
কাটতে না কাটতেই আবার এসে
বসে জেঁকে

সেই ছায়ার মনে
মেঘের মত শব্দ ভাসে
কথা হবার আগেই সেইসব শব্দেরা
উড়ে যায় দূরে
দীর্ঘশ্বাসের দমকা বাতাসে

অন্যমনস্ক আর গভীর দুঃখ
মনের ক্লেদাক্ত পাথরের নীচে
চেপে রাখে
আঁধার এলে
সেইসব তিক্ত স্মৃতি উঁকি দেয়
মনের আনাচে কানাচে
অন্ধকারে খেলা করে একাকীত্বের সাথে

সেই ছায়ার অবয়বে এক পাথরের
পোষাক আছে
উপরে হাসির প্রলেপ মাখানো
আবেগের ঢেউ
কপোলে লাল আভা হয়ে থাকে
সেই ছায়ার নীচে
হাসি আর দুঃখ
বহুকাল বাস করে একসাথে
অচেনা অজানা দুই মেরুর বাসিন্দার মত

কেউ কারু নই

আমরা সবাই কারু না কারু
কেউ না কেউ হই
আমরা কেউই কারু নই

মাঝে মাঝে ঘরের মানুষ
পিঠে ভুকে দেয় ছুরি
অবশ লাগে

চোখে অবিশ্বাস নিয়ে
পিঠের অদৃশ্য ছুড়িতে হাত বুলায়
নাকের উপর নোনা জল গড়ায়
ধাক্কা লেগে
নর্দমাতে শেষ খাদ্যটুকু
উপুর হয়ে নস্ট হলে
যেমন কস্ট হয়

শূন্য মনে হয়
এ্যাত পরিবার পরিজন
এ্যাত সন্তান সন্তুতি
এ্যাত পরিশ্রম আর স্বপ্ন
নিমেষে উবে যায় কর্পুড়ের মত

ঘরের মানুষ নদীর জলের মতন
ঢেউয়ের দোলায় দোলায়
ভেঙ্গে ভেঙ্গে কূল
চলে যায় অন্য এক প্রান্তে

আমরা সবাই সবার
আর কেউ কারু নই

আড়াল

এ্যাত সুন্দর চোখ থেকেও
তুমি অন্ধ!
তুমি তো জন্মান্ধ নও!
সুন্দর চিন্তাশক্তি তবু
মাথার ভেতর এক বৃহৎ টিউমার
আড়াল করে রাখে
সত্য, মিথ্যা, পাপ, পুন্য
তুমি তো অবুঝ নও!

কাকে কষো হাজারবার ?
এইসব আহাজারি, অক্ষমতা, অজ্ঞতা, সীমাবদ্ধতা
আসমানী মেঘের নীচে ঢেকে রাখতে চাও!
তুমি তো পঙ্গু নও!

কেন এই আহাজারি
দিনরাত এটা নেই সেটা নেই
অভিযোগের ছেড়াছেড়ি
কোন প্রাচীন গ্রন্থের গহীনে
রাখতে চাও লুকিয়ে
দীর্ঘ তালিকা
তোমার সকল পাপের!

সব লেনদেনে
শ্বাসের লোল চক চক করে
লোভের লালা দিয়ে বোনা মাকড়শার
অদৃশ্য জাল
বুনে যাও শত সহস্র বছর ধরে
নিজের হাতে নিজের কবর খুড়ে
কাকে খোঁজো রাতদিন
দোষী করবে বলে
যে নেই তাঁকে দোষী করো
যে দোষী তাঁকে এড়িয়ে চলো
নিজের দুর্ভাগ্যের দোষে
নিজের মাথা খুটে মরো
ভাগ্যরে দাও সব দোষ
ইশ্বরে সারা না দিলে !

Tuesday, June 25, 2013

ছাড়পোকার মত দেশপ্রেমিক

ভালবাসা লেপটে থাকে লাল সবুজ পতাকায়
মানুষ মরে গেলে কেউ দাফন করেনা
জীবন চলে যায় হেসে খেলে যার যার কাজ শেষে
সবাই পতাকা ভালবাসে
গান ভালবাসে
মানুষের লাশ ভাসে
নর্দমাতে
জীবন এই রকম
ভালবাসার এক নিরাপদ জাগা আছে
সম্পুর্ন ঝুঁকি মুক্ত
ফেসবুকে পতাকা উড়াও
ঘরের পাশের নোংরা নর্দমাতে
মুখ থুবড়ে ঘুমন্ত যুবককে
পালটে দেখোনা
কে করে ঝামেলা!
কোন ড্রাগস কেস হবে হয়তো
সন্ত্রাসীকে ক্রশফায়ারে নিয়েছে
এইসব ব্যাপারে নিজেকে জড়ানো ভুল
ভালবাসার জন্য আছে পতাকা
বন্ধু গুম হয়েছে
বান্ধবী খুন হয়েছে
এইসব নিয়ে মাথা ঘামাতে নেই
রাজনীতিও আমাদের জন্য নয়
আমরা ভালবাসি দেশকে
হেঁটে যায় মানুষের লাশের উপর দিয়ে
ভালবেসে
এটা সেটা টিপে দ্যাখো
যদি কিছু বেরুই
কাজে লাগবে
জীবন কাটে স্বপ্নে, গর্বে, অহংকারে
সুটকেসে ভরে রাখি
ভালবাসা, রীতিনীতি
ছারপোকার সাথে
বিজয়ের পতাকা

মৃত্যুর অজুহাত

সেদিন মৃত্যু ছিল।
সেদিন উল্লাস ছিল।
অনিশ্চিত ছিল সবকিছু।

আজও পৈশাচিক উল্লাস আছে
আজও মৃত্যু আছে
আজও জীবন অনিশ্চিত
সেদিনের মতই

স্বৈরাচারী যায়
স্বৈরাচারী আসে
প্রতিদিন পথে পথে তাজা লাশ পাওয়া যেতো
ধর্ষকেরা যাওয়া আর আসার মাঝে ছিল
ক্ষুধা ছিল
হাহাকার ছিল
চারিদিকে অস্ত্রের ঝনঝন ছিল
বিদেশী সৈন্যে ছিল
প্রস্থান আর প্রবেশের মাঝামাঝি

সেদিন মৃত্যু ছিল, বারুদের গন্ধ ছিল
আজ আকাশ রক্ত বর্ষন করে
আজও খুন হয় প্রতিদিন
বিজয়ের পৈশাচিক উল্লাসে
এখন
ভাই গলা কাটে ভাইয়ের

স্মৃতির ঝাপিটা

অদৃশ্য হাত
মাথায় আঘাত করে
আচমকা
সেই হাত আসে
স্মৃতি ছিনিয়ে নিতে

ঝিম মেরে থাকি
কেউ প্রশ্ন করলে
উত্তরটা ক্রমশ দূরে চলে যায়
বুঝতে পারি ঐখানে
অথচ পড়তে পারিনা
স্মৃতির ঝাপিটা ছিনতাই হয়ে গেলে
আমি যুদ্ধ করি
বাতাসের সাথে
ভেঙ্গে ফেলতে ইচ্ছা করে
যা কিছু দেখতে পায়
স্মৃতির ঝাপিটা দূর থেকে
আমাকে দ্যাখে
ফ্যাল ফ্যাল করে
তুমি কি এমনই রয়ে যাবে চিরকাল?
ভাল করে দ্যাখো
একেবারে হাতের কাছে
দাঁড়িয়ে আছে
সব প্রশ্নের উত্তর
ভাল করে দ্যাখো
স্মৃতির ঝাপিটা ধীরে ধীরে ফিরে আসে
করুনা করে

দরকারি শব্দ

কোন শব্দ নেই
তবু শুনতে পাই
শ্বাস প্রশ্বাস
মনের ভেতর
অপেক্ষা করে
চলে যায়
দীর্ঘ সময়
কেউ জানেনা কার
তারাহুড়োতে
ভুলে যায়
হঠাৎ মাঝ পথে
সবকিছু নিশ্চুপ হয়
ভাবনার অপেক্ষায়
এই শ্বাস প্রশ্বাসের
শব্দ শুনবো তাই

এক চিলতে রোদ্দুর

সেই রোদ্দুর আজ ছিল
তবে এক চিলতে
শুধু মুখ দেখিয়ে চলে গেলো সূর্য
অনেকদিনের ছুটিতে
বড় আলসেমী করে
উঠেছে দেরী করে
থাকতে বললে
হাসলো শুধু
না অবজ্ঞা
না আগ্রহ
শুধু হাসলো
এক চিলতে ঠোটের কোনে
সেই চলে যাবার আগে
শুধু একবার
বললো
এই অসময়ে
আর বসবোনা
চলে গেলে ভুলে যেও
মনের একপাশে ফেলে রেখোনা
ভুল করে
পরগাছার মত বেড়ে উঠতে পারে
মুছে ফেলো
উপরে ফেলো
মন থেকে
একেবারে সমূলে
না হলে কস্ট পাবে
ক্ষত হলে

শার্দুল

মাথার ভেতরে
আবার সেই ঢূপ ঢূপ
কে যেনো হাতুড়ী পেটাচ্ছে
মাথার ভেতরে
ঘর করছে ব্যাথারা

বাইরে শিতার্থ
হাতুড়ী পিটিয়ে জানালা বানাচ্ছে
মাথার ভেতরে
জানালা দিয়ে চাঁদ দেখবে ব্যাথারা

Saturday, March 30, 2013

কেনো গেলে ?

কেনো গেলে?
শুধু শুধু দুঃখ পেলে!
মুঠোভরে রোদ্দুর
ধরে রেখে
শুখিয়ে নিলে অদৃশ্য অশ্রু
... পেছনে ফেলে রেখে
চলে গেলে
অগোছালো স্বপ্ন
কেনো গেলে ?
শুধু শুধু দুঃখ পেলে!
পোকা বিজ বিজ মাঠে
ফসল কি হয় ?
ক্ষুধার্ত পোকারা খেয়ে ফ্যালে
বীজের অন্তর
সব ক্ষুধা মিটাতে হবে এইভাবে
আকাশ থেকে মাটি
বুঝিয়ে দিতে হবে সবার হিসাব
উপচে গেলে নষ্ট হবে
সেখানে যেখানে ভোক্তারা সব মৃত
ক্ষুধাতে ফেলেছে খেয়ে হৃদপিন্ড
তারপর শেয়াল এসে
ভরেছে পেটে শব
কেনো গেলে?
এইভাবে চুপচাপ শরীর থেকে
গন্ধ মুছে দিয়ে
এখন এখানে বাঁঝা মাটি
স্তব্ধ বাতাস
রোদ্দুর নিয়েছে ফিরিয়ে মুখ
অপেক্ষায় অপেক্ষায়
একদিন শব হবো
ক্ষুধা এসে খেয়ে নেবে হৃদপিন্ড
শেয়ালের পেটে রেখে যাবো শব
তাঁদের বৃষ্টাতে ফলবে ফসল
কোন এক ক্ষুধার্তের পেটে খাদ্য যাবার আগেই
লুট হয়ে যাবে গোলার ধান
কেন গেলে ?

তোমার মন

তুমিও জানো আমিও জানি
তুমি মাঝে মাঝে মিথ্যা বলো
আমিও বলেছি মিথ্যা অনেক
আমি তোমাকে ভালবাসিনি কোনদিন
আমি মিথ্যা বলেছিলাম
আমি কারুকে ভালবাসিনি কোনদিন
আমি মিথ্যা বলেছিলাম
জীবন আসলে নিছক ব্যবসায়ের মত
চারিদিকে শুধু লেনদেন
ভালবাসা একটি ভাল বিনোদনের মত
ক্লান্ত দুপুরে লেবুর সরবত
অথবা
ক্ষুধার্ত পেটে মুঠো ভাত নিঙড়ানো ফ্যান
ক্ষমতা আমাকে আকর্ষিত করে
সম্পদ আমাকে লোভী করে
সারাক্ষণ আমি পিছু পিছু হাটি
টাকা টাকা টাকা পাখী
আমি মিথ্যা বলেছিলাম
আমি ভালবাসিনি কারুকে কোনদিন

জেগে উঠি

সেই বস্তা পচা গল্প বলে আর কত ?
এইবারে নতুন কিছু বলো
এইবারে নতুন কিছু ভাবো
দ্যাখো আজকাল টগর ফুলেরা
নতুন সুবাস ছড়ায়
হাস্নাহেনা দিনে ফুটে
চাঁদের সাথে আড়ি করে
সূর্য ডুবে গেলেই আমি জেগে উঠি
বিকল্প এক সূর্যের স্বপ্ন দেখে

বাঁধা আর মিথ্যা

সত্য কাছে এলে
তুমি ভয় পেলে
ভুত দেখে চীৎকার করে উঠলে
তখন স্তুতি সঙ্গীতে
মিথ্যারা এসে উপস্থিত হলে
তুমি শান্তি পেলে
মিথ্যারা শান্তনা দেয়
এগিয়ে যেতে অনুপ্রানিত করে
সত্যরা দমন করে
বাঁধা দেয় এগিয়ে যেতে

নিজেরই শত্রু নিজের

আমার সবচেয়ে বড় শত্রু
আমি নিজেই
আমি শত্রুদের নিজে না চিনে
অন্যের সাথে পরিচিত করি
শত্রুদের জগত বিখ্যাত করে
সেই খ্যাতির নীচে
আমার সমাধির চারিপাশে
শত্রু বন্ধু হাতে হাত
ধরে মিলনের গান ধরে

কোথায় যেন আগুন লেগেছ

কোথায় যেন আগুন লেগেছে
মনে, বনে বা কারু গৃহে
তুমি ঘুমাও এখনো অঘোরে
রাত আর দিনের মাঝখানে
আমি জেগে উঠি
প্রতিদিন খুঁজি
জীবন আর মৃত্যুর মাঝখানে
প্রতিদিন খুঁজি
গন্তব্যে পৌছুবার পথ

আমি প্রহর গুনি মৃত্যুর

আমি প্রহর গুনি
মৃত্যুর
এক দুই তিন করে
অপেক্ষা করি কিছুক্ষন
ধীরে ধীরে এগুতে থাকি কিছুক্ষন
আমি প্রহর গুনি মৃত্যুর
আমার শরীরে বাদ্য বাজে
মৃত্যুর
পাজড়ের চারিপাশে
মৃত্যুর উল্লাসে থেমে থেমে যায়
শ্বাস
এলোমেলো এক স্মৃতি ঝুলে থাকে
চোখের ঝাপসা আয়নাতে
প্রহর গুনি
মৃত্যুর

যদি হতো!!

ভাঁজ করে রেখে দেওয়া
পুরানা পুঁথি
ভুলে গেছো
ঝাড়ামুছা হয়না তেমন
আদ্দিকালের বদ্দি
.শুধু মিলে গেলে
মনে হয়
এই যাঃ এই ছিল এই নেই
তখন খাটালের উপরে
পুরানা তেতুলের ঘ্রানে
বুদ হয়ে থাকে উইপোকা
থ্যাতলানো রশুনের কোয়া
মাছের আশ
শুখনো জলপাই
চোখের নীচে ঝুলে থাকে
না বলা সব কথা
তখন মনে হয়
কই কোথায় ছিল ?
ছিলনা কিছুই কোনকালেই
শুধু আফসোস ছিল
যদি হতো !!

ঘৃনা

বোধ আর নির্বোধের যুদ্ধে নির্বুদ্ধিতা জয়ী হলে
তুমি ভুল বুঝলে আমাকে
চোখে তোমার ছানি আছে
দেখলেনা সবার মুখের আদলে
তোমার মুখ বসে আছে
ঘৃনা দিয়ে তা ঢেকে দিলে
অন্ধকার গভীর থেকে হলো গভীরতর
এখন আর কেউ কারু মুখ দেখিনা
শুধু রক্ত দেখি
সব রক্ত লাল
কিছুতেই আলাদা করতে পারিনা
তোমাতে আমাতে
মত আর মতামতে
এ্যাত সংক্ষিপ্ত জীবনে কত কত কাজ বাকী
এ্যাত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হাত দিয়ে
এ্যাত শত লাশ সরাবো কিভাবে?

পাশবিকতা সর্বত্র

এ্যাতদিন লুকিয়ে ছিল
পাশবিকতা
প্রেমে আর প্রেরণাতে
কিছুদিন হলো বাজারে এসেছে
সব চাইতে আধুনিক পণ্য
এই পাশবিকতা
পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে
এর ব্যাপক চাহিদা
পুঁজিপতিরা কিনছে পাশবিকতা
খুচরা মূল্যে
ক্রমাগত বাজার যাচাই হচ্ছে
সব চাইতে নির্মম ও নিষ্টুর
বেইমান ও হিংস্র পশুকে
দেওয়া হবে
বিশ্ব খ্যাত
নোবেল শান্তি পুরস্কার
পাশবিকতাতে প্রশিক্ষিত করা হবে
ভ্রুন থেকে ভূমিতে
শিশু থেকে তারুন্যে
তারপর বধ করা হবে
অপরিপূর্ন স্বপ্ন চোখে
মিশে যাবে ধূলিকণাতে
ভূতভবিষ্যৎ না জেনেই
সেই শিশু
পাশবিকতা পরিবর্তিত হবে
আবর্তিত হবে
ক্রমাগত নতুন নামে রুপে গন্ধে
গ্রাস করে নেবে সমগ্র জগত

গনহত্যা ২০১৩

পাখীগুলো সব পালিয়েছে
কাকেরা বিষন্ন
সবুজ পাতারা মনমরা
শূন্য ডালগুলো নড়ে উঠে আতংকে
গুলির শব্দে
বাংলাদেশে এখন গনহত্যা চলছে
সুশীল সমাজের অনুরোধে
লেখা হয়েছে সাইনবোর্ড
কুকুর আর ইন্ডিয়ানদের প্রবেশ নিষেধ
মুসলমানরা সন্ত্রাসী
তুই রাজাকার
ফি নারে জাহান্নামা খালেদিনা ফি হা
এইভাবে বিভিন্ন সাইনবোর্ডের নীচে
দাড় করিয়ে গুলি করা হচ্ছে
এইভাবে ফিরে এসেছে একাত্তর
প্রিয়জনেরা ফিরে আসেনি
যাদের জন্য অপেক্ষা করেছি
একচল্লিশ বছর
একাত্তর এসেছে নিয়ে যেতে
তাদের
যারা এসেছে আরও পরে
অনেক পরে
রাজপথে গুলির শব্দ
দরোজায় বুটের শব্দ
গলিতে মৃতদেহ
একাত্তর এসেছে
আরও একবার
ফাল্গুন আনমনা
চৈত্র পথ হারিয়েছে
জবাই আর ফাঁসী
তালিকাতে স্বাক্ষর করে
শিশুর সরল হাসিতে
এখন গনহত্যা চলছে বাংলাদেশে।

ভালবাসেনি সে কোনদিন

কিছুই ছিলনা
শুধু কিছু শুকনো পাতা
কিছুই ছিলনা
ছাইপাশ কয়লা দিয়ে লেখা নাম
সেখানে কিছু সময় ছিল
হিংস্র এক দমকা বাতাসে
মিশিয়ে দিলো বালুর ঘর
আবার বালুতে মুখ থুবরে
মিশে গেল সব প্রলাপ
ঢেউয়ের দোলায় দোলায় হারিয়ে গেল
পানকৌড়ি অন্য কোথাও
আমি দেখিনি আর তাকে
এমন কি মিথ্যা করেও
ভালবাসেনি সে কোনদিন

ভুল

হেটেছি অনেক দিন
এই পথে
তুমি বলো অন্ধকার
সেই পথে
ভাল করে দ্যাখো
কালশিটে
হাটুতে হেটেছি
সেই পথে
আজ যেখানে তুমি
আছো মুখ থুবড়ে
ভাল করে দ্যাখো
আমিও আছি
ছিলাম
থাকবো চিরদিন
ভুলে
ফেলে এসেছি প্রান
শুধু শরীর এনেছি
সাথে করে

মোড়কের নীচে অপরিবর্তিত

কতকাল হলো পরিচিত উঠনে পা রাখিনি
আমার শৈশবের নদীনালার উপরে দালানকোঠা
হারিয়ে যাবার সখের বশে
হারিয়ে ফেলেছি কৈশরের বর্ষাতে হাটুজলে তেতোপুটি
এখনো অভিমান করি
চলে যাবো সব ছেড়ে এই বলে
যখন সবাই চলে গেছে আমারেই ছেড়ে
যৌবনও চলে গেছে
শত কোটি বছর অপেক্ষায় রেখে
শর্তহীন প্রেমিকের
হাতের সব রেখা স্পষ্ট পড়েছি
কোথাও কোন ভুল নেই
বদলেছে মোড়ক শুধু
নীচে সেই পুরাতন কর্দমাক্ত কঙ্কাল রেখেছে ঢেকে
পেচকের চোখকে ধোঁকা দেবে বলে

বিষন্নতা ভালবাসিনা

আকাশ বিষন্ন হয় হোক
ভালবাসিনা বিষন্নতা
হাসিতে ধরে রাখবো রোদ্দুর
এক বুক ঘৃনা নিয়ে বসে ছিল চুপচাপ
উগড়ে দিলে বিষন্ন হলো আকাশ
ঘুমোট হলে
বৃষ্টি হবে
বৃষ্টি হয়ে
ধুয়ে যাবে ক্লেদাক্ত মন
শুধু ঘৃনারা এসে বার বার স্তূপীকৃত হয়
চুপচাপ অপেক্ষা করে
সুযোগের

ঘৃনা জনপ্রিয়

সব ভাল যারা শেষ ভাল।
শেষ আর হলো কৈ !
চলতে থাকলো
ডামাডোল
আগুন
ঘৃনা
এক সমুদ্র
ভরা ভরা ঘৃনা
নানা মোড়কে বিক্রি হচ্ছে
নানা নামে নানা দামে
সুপারমার্কেটে
জনপ্রিয় ঘৃনা
ঘৃনিতরা বিক্রি করে ঘৃনা
রক্তে রক্তে ছেয়ে যায়
ক্যান্সার
ঘৃনারা ঘাটি গড়ে মগজে
পঙ্গু হয়ে যায় চিন্তা
ঘৃনা ছাড়া আর কিছু নেই
ভাববার

খাদক

মগজগুলো এখন ব্যস্ত
নর্দমা থেকে স্বর্ন অন্বেষণে
কেউ কেউ পেয়ে গেছে
অন্যরা লুটে নিয়েছে
কেউ কেউ হারিয়ে ফেলেছে
নর্দমার পরিত্যাক্ত আবর্জনা এখন উত্তাল
পরিত্যাক্ত আবর্জনা এখন দুর্মূল্য
সবাই ভাগাড়ে সামনে দাঁড়িয়ে
লাইন দিয়ে
দেহ খাবে মৃত
দোকানে কোন খাদ্য নেই
ঘরের মেয়েরা লাক্স সুন্দরীর পোষাকে
পসার সাজিয়েছে দেহের
দাঁড়িয়েছে ভাগাড়ে এসে
কেউ দেহ খায়
কেউ খায় মৃতদেহ
ঘৃনার দেশে এখন শবের উৎযাপন
সবাই যার যার পণ্য এনে হাজির
বেচাকেনা শেষে
খেয়েদেয়ে ঘুমাবে
নিস্তব্ধ কবর ঘরে

নিরুপায় আক্রোশ

আকাশ তো কেউ ছুঁতে পারেনা
পালিয়ে বেড়ায় সর্বক্ষন
বৃষ্টি থেকে
রোদ থেকে
নদী তো কেউ হতে পারেনা
ভেসে যায় অকারনে
নিরুপায় সময়ের স্রোতমুখে
আগুনও কেউ হতে পারেনা
জ্বলে যায় নিজেই
অপূর্ণতার অন্তর্দাহে
শো শো বাতাস বয়ে যায়
পারেনা করতে গতিরোধ
বিশৃংখল করে ফ্যালে
সাজানো মগজ

আমি ছিলাম না সেখানে

হাতের রেখাগুলো পড়ো
কোথাও লেখা নেই আমার নাম।
ফিরে যাও
সেই পথে
সেই সবুজ ঘাসে
আমি ছিলাম না কোথাও
ভোরে দেখা স্বপ্নের মত
কুয়াশাতে কোন এক মানুষের অবয়ব
হতে পারে এসে চলে গেছে
ডেকে ডেকে
আমি ছিলাম না সেখানে
কোনকালে
চৌরাস্তার উড়ে যাওয়া হাওয়াকে সুধাও
জানেনা সে আমাকে
নোনা গন্ধে লেগে থাকা এঁটো বাসনে
বালিশের কোনে
সুটকেসের ছোট্র চাবিতে
কোথাও কোন চিহ্ন নেই
এমাথা থেকে ওমাথা
ট্রেনগুলো চক্কর কাটে রাতদিন
তেতিয়ে যায় ইঞ্জিন
ঝিমিয়ে যায় রেললাইন
মাঝরাতে কেঁদে উঠে কুকুর
কেউ জানেনি আমাকে কোনদিন

বিদায়

চৈত্রের কাট ফাটা রোদ্দুরে
একটু ছায়ার জন্য উড়াউড়ি
গাছকাটা উলঙ্গ শহরে
উত্তরে চলে যাবে কাকেরা
দলবেঁধে উপত্যকার নীচে নীচে
সরু সরু দেবদারু
চকচকে জলাধারে
পাথর আর কাঁচের মন থেকে
মুছে দিয়ে শব্দ
ধুয়ে দিয়ে সময়
সড়কে রক্ত শুধু
অবিশ্বাসী চোখ
অপরিচিত লাশ
দ্বিপদ পশুরা উল্লাস করে
লাশ থেকে খুবলে নিয়ে বিবেক
পাথর ঘষে আগুন জ্বালে
ঝলসানো বিবেক চিবিয়ে ফ্যালে
নির্বিকার
কাকেরা উড়ে যায়
মানুষ না পেয়ে
গাছ কাঁটা উলঙ্গ শহর থেকে

যুদ্ধ

সরল আর গরল
লেগে থাকে যুদ্ধ রাতদিন
দুজনেই দুজনকে মনে করে বেঠিক
কারুকে ঠিক হতে হবে
কারুকে ভুল
সবাই যার যার জাগাতে ঠিক ঠাক
যুদ্ধ চলে যুগে যুগে
সবাই মরে যায়
যুদ্ধরা বেঁচে থাকে যুগ যুগ ধরে

লেনদেন

কিভাবে জানবে
কে শত্রু কে মিত্র
স্পর্শ করতে হলে
কাছে আসতে হবে
বন্ধু হতে হবে
পাওয়া হয়ে গেলে
চলে যেতে হবে
ভাল আর খারাপ
সুখ আর দুঃখ
জরা আর ব্যাধি
সাথে থাকার প্রতিশ্রুতি
লেনদেন শেষে
ভেঙ্গে দিতে হবে
শ্ত্রু বা বন্ধু

আবর্তমান

করুণা করতে চাও
পেতে ভালবাসোনা
কার কার কাছে
আলাদীনের চেরাগ আছে ?
আমারটা হারিয়ে গেছে
বুকে ঘষার আগেই
উষ্ণতা ছিলনা
শব্দ ছিল ধুঁক ধুঁক
বন্দী জন্তুর মত
দম ফুরিয়ে গেলে
অতলে তলিয়ে
নিভে গেছে চেরাগ
গলে গেছে মাটি
ঘুরছে কুমারের চাকিতে
নতুন এক রুপ নেবে বলে

মৃত্যু

ভিন্ন ভিন্ন মন
অভিন্ন মানুষ
দাবী করে অধিকার
মৃত্যুর
মগজে বন্দুকের নল
ঠেকিয়ে জিম্মি রাখে
জীবনের স্পন্দন
সকালে ভাতের থালাতে
লেখা ছিলনা মৃত্যুর কথা
পানির গ্লাসে দেখা
শেষ প্রতিবিম্বে
মনে হয়নি
আজ ছেড়ে যেতে হবে
শহর নয়
মা কে নয়
রোদে জাবর কাটা বাছুরের
পিঠে রোদ দেখে
মনে হয়নি
ছেড়ে যেতে হবে
জীবন
মাথার খুলি থেকে
রক্ত গড়িয়ে নামে
শিরদাঁড়া বেয়ে পায়ে
কেউ একবারও বলেনি
আজই
ছেড়ে যেতে হবে
জীবন

ভালবাসা - এক গোছা নোট

উঁচু এক স্রোতে
এক উদাস পানকৌড়ি
অদৃশ্য হলো
ভালবাসা না পেয়ে
লাবনীকে বলো
ইট কাঠ পাথরের মত
ভালবাসা এক গোছা নোট
ভালবাসা খেলা করা
বয়স আর বসন্তের সন্ধিক্ষন
লাবনীকে বলো
থাক না হয়
এই ভালবাসা সংক্রামিত হয়
এক হৃদয় থেকে অন্য হৃদয়
লাবনীকে বলো
ভালবাসা অপেক্ষা
হাতে নিয়ে প্লাস্টিকের ফুল

অসমাপ্ত

আজও লেখা হয়নি সেই কবিতা
কালশিটে ফেলে দিলে কবজিতে
হাসতে দেখলে ইর্ষান্বিত হয়ে যাও
হাসি কেড়ে নিতে এসে
হতাশ, বিফল, ক্রোধান্বিত তুমি
নতুন পথে নতুন আগুন
নতুন টাকার গন্ধ নতুন
লাভ ক্ষতির হিসাব কষে দেখা গেল
হাসির চাইতে কান্না ভাল
সুখের চাইতে দুঃখ ভাল
... টেকসই আর সম্ভাবনাময়
নতুন কিছু শুরু করতে হলে
দুঃখ দিয়ে আঘাত করে
কান্না দিয়ে নরম হলে
ক্রোধ দিয়ে উপরে ফেলতে হবে
শিকড়
তারপর
ক্রোধ ও দাবানলের পথ উন্মুক্ত হলে
ধবংস আর সৃষ্টি
পাশাপাশি হাসবে দিবানিশি