Saturday, May 5, 2012

পরকীয়া - প্রেম, প্রয়োজন নাকি স্বেচ্ছাচারিতা


কোথাও কিছু নাই বিনা মেঘে বজ্রপাত হলো। একদিন বিবাহিত নারীপূরুষের একজন বা দুইজনই সিদ্ধান্ত নিলেন যে তারা বিবাহের বাইরে কারু সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলবেন। পরিকীয়া কি আসলে তাই? তাতো না।কোন কারনে যখন বিবাহিত নারীপুরুষ তাদের সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতি দৈহিক আকর্ষন বোধ করেনা তখন তারা বিবাহের বাইরে অন্য কারু সাথে দৈহিক সম্পর্ক করে। পরকীয়ার কারন গুলো নিম্নরুপঃ

খাইজলত - খাইজলত বা বেহায়াপনা বা অবস্থার সুযোগ নেওয়া --পরকীয়ার একটি অন্যতম কারন। সুযোগ পেলেই লুঙ্গী উঠায় ফ্যালে। কাজের বেটি হোক আর অফিসের কর্মচারী হোক বা ছাত্রী হোক। কেউ এগিয়ে এলে "না" করিনা। কেউ এগিয়ে না এলেও মাঝে মাঝে টোকা দিয়ে দেখি যদি রাজী হয়ে যায় তাহলে তো করা যাবে। বোনাসে খাইলাম এই তো। আর না হলেও ক্ষতি নেই ঘরে তো বউ আছেই। এই খাইজলত মাঝে মাঝে জেদ হয়ে যায় মাঝে মাঝে অভ্যাস হয়ে যায়। চাকুরী হারাবার ভয়, প্রোমোশন পাবার লোভ, ভাল মার্কস পাবার ইচ্ছা, অথবা মানসিক দুর্বলতার কারনে এই পরকীয়া অনেক দিন পর্যন্ত চলতে পারে। মেয়ে যদি কোন কারনে বিবাহিত পুরুষের চেয়ে মানসিকভাবে দুর্বল হয় তাহলে সে এই পরকীয়ার কারনে পুরুষের স্ত্রীর প্রতি হিংসা বা এই পুরুষকে আপন করে পাবে না ভেবে মানসিক কস্টে ভুগতে পারে। মন ভেংগে যেতে পারে। আত্মহত্যা করতে পারে। যদি আত্মহত্যা না করে তবুও এই পুরুষ তার দেহ ভোগ করে হাসতে হাসতে ভালবাসার গল্প বলতে বলতে এক সময় ঠিকই বউয়ের কাছে চলে যাচ্ছে। পুরুষের আর তার বউয়ের জগতে সে একজন তৃতীয় ব্যক্তি। শরীর ছাড়া এই মেয়েকে এই পুরুষের আর কোন প্রয়োজন নেই। এই বোধ এক সময় এই মেয়েকে ধ্বংস করতে পারে। একইভাবে এই অনুভূতি ছেলেদেরও হতে পারে। যদি মেয়ে বিবাহিতা হয় আর পুরুষ কি অবিবাহিত।বিবাহ এখানে অমূলক বা গুরুত্বপূর্ন না। শরীর ভোগ করে স্বামী বা স্ত্রী কাছে চলে যাওয়া -- শূন্যতার সৃষ্টি করে। প্রতিযোগীতা, হিংসা ইত্যাদি সৃষ্টি করে ।

প্রয়োজন - স্ত্রী বা স্বামীর অসুস্থতার কারনে দৈহিক চাহিদা মেটানোর কারনে পরকীয়া -- অনেকের স্ত্রীর নানা রকম রোগ ব্যধী বা সেক্স করতে আগ্রহী নন অগত্য মধুসূদন স্বামী বা স্ত্রী অন্য নারী বা পুরুষের সাথে গোপনে সম্পর্ক গড়ে তোলে। বিবাহিত জীবনে বাচ্চা কাচ্চা হবার পর স্বামী স্ত্রী মধ্যে এক ধরনের সাথে থাকার অভ্যাস গড়ে উঠে । তাই সুধুমাত্র দৈহিক চাহিদার কারনে সেই সম্পর্ককে নারী বা পুরুষ ছিন্ন করতে চাই না। এখানেই তারা স্পেয়ার কারুকে খুঁজে। অপেক্ষাকৃত দুর্বল কেউ। যাকে মানসিকভাবে ব্ল্যাকমেইল করা যাবে সহজেই যাতে সে তার পরিবারকে এই সম্পর্কে অবহিত না করতে পারে। এই ক্ষেত্রেও অপর পক্ষের মন ভেঙ্গে যেতে পারে একই ভাবে। তোমার বউ বা স্বামী অসুস্থ তো তুমি আমাকে বিয়ে কেন করোনা? তখন অপর পক্ষে বাচ্চাদের বা বয়সের বা সমাজের দোহায় দেয়। কাজ হলেই হলো। সামান্য সেক্স এর জন্য সাজানো সংসার ভাঙ্গা নিরর্থক। পরকীয়া চলতে থাকে। যে পার্টি সুধু ভোগের সামগ্রী হিসাবে আছে বিনিময়ে তেমন কিছু প্রাপ্তি ঘটছে না সেই পক্ষে ভেঙ্গে পরতে পারে।


জরুরী অবস্থা  - অস্থায়ি ব্যবস্থা, সেক্স কেনার খরচ কমানোর জন্যেও অনেকে বিবাহিত নারী পুরুষের সাথে সম্পর্ক করে। দূরো আমার এখনো বিয়া করতে দেরী আছে। লেখাপড়া শেষ করে জজ বারিস্টার হলে তারপর দেখা যাবে। অথবা এই মহিলা বা পুরুষকে মাগনা ট্রাই করা যেতে পারে। যতদিন চলে চলুক মন্দ কি! বেশ্যা খরচ কমলো। বিয়ে করলে এখন অনেক ঝামেলা। সংগীনিকে বলে আমার মাবাবা আমার বিয়ে ঠিক করছেন। তারপর বিয়ে করবো। এখন আমরা একটু প্রেম করি। আমার বিয়ে হয়ে গেলে তুমি অন্য কারু সাথে পরকীয়া করো। আমার বিয়েতে তুমি অবশ্যেই আসবে, ইত্যাদি।

পরকীয়া আর যাই হোক -- হঠাৎ হাওয়ায় ভেসে আসা সুর না। ।পরকীয়া হলো "আরে! আমি তো এমনই একটা সুযোগ খুজছিলাম। তোমার মত একজন যে বেকার দেহ নিয়ে বসে আছে তেমন একজনকে খুঁজছিলাম! তুমি তো বিয়ে করবে না! তাই না? আমি তো বিয়ে করতে পারবোনা । আমার বাচ্চা কাচ্চা আছে। আর আমি আমার বউকে অনেক ভালবাসি। আমার বউ সেক্স করতে তেমন পছন্দ করেনা। আর সেক্স তো কিনতেও পাওয়া যায়। সেক্স করার জন্য বউকে বা স্বামীকে তালাক দেওয়ার কোন মানে হয়না। তাহলে পরিকীয়া কি প্রেম?হতে পারে! ভালবাসাবিহীন প্রেম। এক অস্থায়ী সম্পর্ক। গন্তব্যহীন। কোথাও যাবার সময় বাসের জন্য বাস স্টপে বসে অপেক্ষা করার সময় পাশে বসা আরেক অপেক্ষারত যাত্রির সাথে আলাপ চারিতার মত। এরা কেউ কারু বাড়িতে যাবেনা। যার যার নিজের বাড়ীতে যাবে। কিন্তু একই বাসে চড়ে যাবে।পরকীয়ার সবচেয়ে খারাপ দিক হলো এই অস্থায়ী ভোগকারী বা ভোগকারীনিকে ভালবেসে ফেলা। আর এটা সম্ভব। হলে সেই মানুষ ইর্ষান্বিত হবে আর নিজের ক্ষতি নিজে করবে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন। বিবাহিত নারীপুরুষের সাথে অবিবাহিত নারীপুরষের পরকীয়া করা উচিৎ না। দুই দল যদি বিবাহিত বা বিবাহিতা হয় তাহলে এই মন ভেঙ্গে যাবা বা ইর্ষন্বিত হবার বা আত্মহত্যা করার ঝুকি কম থাকে।

কারন যাই হোক। হৃদয় আর যোনাঙ্গ এক শরীরের দুই অঙ্গ । তাই যৌন চাহিদার সাথে মনের সম্পর্ক আছে। কারুকে যদি ভাল লাগে তাকে পেতে চাওয়া অপরাধ না। তবে সেই মানুষ যদি আইনত আরেকজনের সাথে বৈবাহিকসূত্রে আবদ্ধ থাকে তাহলে এই সম্পর্ক আত্মপ্রতারনা হয়ে যায়। কারন এই মানুষকে পেতে চাইলেও পাওয়া যায়না। সেখানেই সব সমস্যা শুরু হয়। তাই যৌন চাহিদা পুরনের জন্য পরকীয়া হলো নিছক প্রয়োজন -- প্রেম না। বিয়েই কি সব কিছু? না এবং হ্যাঁ । বিয়ে যদি এ্যতই ফ্যালনা হতো তাহলে তুমি এখনও বিবাহিত কেন? বউ বা স্বামীকে তালাক কেন দিচ্ছোনা? বিয়ে অবশ্যি ফ্যালনা না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন হলো বিয়ে। টাকা, বাড়ী, গাড়ি, ইত্যাদি তারপর অনেকে সন্তানের দোহায় দেয় সেটাও আরেক প্রতারনে। পরকীয়া করলে সন্তানের কোন ক্ষতি নাই বউরে বা স্বামীরে তালাক দিলেই যত ক্ষতি হবে!!

পরকীয়া হলো দায়িত্বজ্ঞানহীনতা। দুই পক্ষই দায়িত্বজ্ঞানহীন। যে ভোগ করছে আর যে ভোগের সামগ্রি হিসাবে নিজেকে বিলাচ্ছে বিনিময়ে নেই মামার চেয়ে কানা মামা পাচ্ছে -- দোষ উভয়েরই। কারন পরকীয়া কেউ মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে করেনা। মানসিক ব্ল্যাকমেইল করে পরকীয়া করে। দুর্বলতার সুযোগে করে। সেই জন্য পরোকীয়ার জন্য কোন বহুজাতিক কোম্পানী নাই। কোন অফিস নাই। "এখানে পরকীয়া পাওয়া যায়" নামক কোন সাইনবোর্ড কোন দরজাতে লাগানো নাই। অথচ এই কর্মটি বিশ্বের সব জাগাতেই অহরহ হচ্ছে। সুবিধাবাধী লোকজনের গোপন অভিসার হলো পরকীয়া। পরকীয়া নোংরা। কোন গর্ব নাই। তাই লোকে লুকিয়ে করে যাতে বউ বা স্বামী না টের পায়। লুকিয়ে করে যাতে সমাজ টের না পায়। লুকিয়ে করে যাতে সন্তানরা টের না পাই। যদি গর্বে কিছু হলো তাহলে তো বিজ্ঞাপন আর ঘোষনা দিয়ে লোকে পরকীয়া করতো।

পরকীয়া সহজেই যৌন রোগ ছড়াতে পারে । এইসব রোগের মধ্যে আছে সিফিলিস, গনোরিয়া, যৌনাঙ্গএ ক্যান্সার, HIV/AIDS । আমার এই নোট পড়ে যদি কারু কোন অমত থাকে এই ব্যাপারে তাহলে ধরে নিতে হবে সে পরকীয়াতে লিপ্ত। রোগ ছড়ায় এইজন্য যে কেউ জানেনা এক জন বহুচারী বা বহুচারীনির কতজন সঙ্গী বা সঃঙ্গীনি আছে আর তাদের কতজন আছে -- পুরা নেটঅয়ার্কে কাহারা কাহারা বাজার থেকেও ক্রয় করেন এই ভাবে জাল বিছানো আছে রোগের ।
১।  মনের ক্ষতি
২। শরীরের ক্ষতি
৩। বিবেকের কাছে অপরাধী হয়ে থাকা
৪। স্বামী বা স্ত্রী যদি জানতে পারে তাদের মন ভেঙ্গে যেতে পারে, বিশ্বাস হারাতে পারে, জীবন নস্ট হতে পারে।
এক ঝামেলা মিটিয়ে আরেক ঝামেলা শুরু করাই শ্রেয়। [বানান ভুল হলে সারিয়া পড়িও। এডিট করার ধর্য্য নাই ]

No comments:

Post a Comment