Saturday, May 6, 2017

কবিতা লেখা হয়না কোনদিন

সাদা সাদা কাগজে কালির আঁচর নেই
কুয়াশা কুয়াশা 
অস্পষ্ট অবয়ব 
মেঘে মেঘে জমে থাকে অভিমান
ভেবে ভেবে 
রাত ভোর হয়
কালো আর কমলা রেখার নীচে সূর্য হাসে
আলোতে সে অন্য রকম
গাড়, রক্তিম, সুদীপ্ত
তারপর ক্লান্তি
বিষাদে ছেয়ে যায় সমস্ত বিকেল
মুছে যায় সব কাহিনী
সাদা সাদা কাগজে কালির আঁচর নেই
কবিতা লেখা হয়না কোনদিন

বাদুরের মত ঝুলে থাকা

সেটা এমন দিন
না বৃষ্টি না রোদ্দুর
মাঝখানে থেমে যাওয়া কথা
বুকের ভেতর ঝিমুনো ব্যাথা
সেটা এমন মুহূর্ত 
না শনি না বৃহস্পতি
উথলে উঠে অপূর্ণতা
অচল, আড়ষ্ট, আকাঙ্ক্ষা
সেটা এমন এক আসা
যাওয়া আর না যাওয়ার মাঝে
বাদুরের মত ঝুলে থাকা

বন্ধ কপাট

এই মুহূর্তে তুমি কি আমায় শুনছো?
আগে কখনো শুনতে পাওনি
আর আশা করিনা তুমি আমায় শুনতে পাবে
শব্দ, দুরত্ব, এসব কিছুনা
তুমি আমায় শুনতে চাওনি
তুমি সেজন্য আমায় শোনোনি
অথচ আমি কত কিছু বলেছি তোমাকে অবিরত
বলার কারণ ছিল
তুমি যদি শুনতে
তাহলে কারণগুলো বুঝতে
আকাশ শুনেছে সেসব কথা
মেঘেরা টুপটাপ নেমেছে বর্ষা হয়ে
ভিজেছে একাকী দুপুর
আমার চোখে জল নেমেছে
আমার বুক ভেংগেছে
আমার কথাগুলো সব ফিরে এসেছে
তোমার বন্ধ কপাটে ধাক্কা খেয়ে
ফিরে এসেছে আহত, ব্যাথিত, অবনত
শব্দ, দুরত্ব, এসব কিছুনা
তুমি শুনতে চাওনি
তুমি বন্ধ কপাট
নিজেকে ছাড়া আর কারুকে তুমি শুনতে পাওনা
তুমি বুঝতে পারোনি
আমার কথারা সব তোমার জন্য ছিল
আমার জন্য নয়
এই মুহূর্তে তুমি আমাকে শুনছোনা
বন্ধ কপাট

বুক আর কন্ঠার মাঝখানে

এমন অনেক কথাই আটকে থাকে
বুক আর কন্ঠার মাঝখানে
সূর্য তেতে উঠে বলা হয়না
এমন অনেক কথাই আটকে থাকে
দ্বিধাদ্বন্দ্বে 
আর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে
চাঁদ ডুবে যায় বলা হয়না
কথা বলা হয়না
কথা আর কথা থাকেনা
কথা শত্রু হয়ে যায়
এমন অনেক কথা বলা হয়না
থেকে যায়
আটকে
শ্বাসরোধ করে রাখে
বুক আর কন্ঠার মাঝখানে

একটি শুন্যস্থান

ছিল তো সে সামনেই সর্বক্ষণ
তবু কেউ দ্যাখেনি তাঁকে
কেন যেনো মিশে গেছিল
অচেনার দলে
মরচে ধরা হৃদয় নিয়ে
আকাশ ভরা আলোর নিচে
বিদ্যুতের ঝকমকে আলোর অন্ধকারে
ছিল সে দাঁড়িয়ে সবার সামনে
সর্বক্ষণ
কেউ দ্যাখেনি তাঁকে
সে চলে গেলে সবাই দেখেছে
একটি শুন্যস্থান

ইউটোপিয়া


একদিন
আমিও যাবো ভেসে
জ্যোৎস্নার প্লাবনে 
স্বপ্নের ভেলাতে চড়ে
দক্ষিনা বাতাসে
শ্বাস নেবো বুকভরে
সবগুলো
মনের জানালা খুলে দিয়ে
দেখে নিও
একদিন আমিও অনুভব করবো
ভালবাসা
বন্ধ্যা হৃদয়ে
একদিন আমিও সিক্ত হবো
স্নেহের বরসনে
বলে দিও সবাইকে
সেদিন
যুদ্ধক্ষেত্রগুলোতে
গোলাপের ফুল ফোটাবো
একদিন
আমিও হাসবো
শিশুর মত
পবিত্র হাসি

কাফন

দেখো এই দেখো
সাদা কাপড়
আমার কাফন
এটা দিয়ে দেহ ঢাকবো আমি
শেষবারের মত
এই দেখো
আজ, কাল, আর গত পরশু
আমার জীবন
কেমন কেটে গেছে কেউ
রাখেনি খবর
ঠিক যেমন রাখবেনা খবর
আগামীকাল
আমার ইহলোক থেকে প্রস্থানে
অনেকেই স্মিত হাসবে
সুখের হাসি
দেখো এই দেখো
কিছুই সাথে নেবোনা আমি
এই দেখো সাদা কাপড়টা
একেবারে আনকোরা
লেগে নেই কোন দাগ
দেনাপাওনা, ঋন, ক্লেশ
অবহেলা, অপমান
আমার কাফন
আমার উপার্জন
এ কাফনে কারু দাবী নেই
না ভালবাসার
না ঘৃনার
না অবহেলার
না অভিনয়ের
দেখো এই দেখো
এই দেহ মাটিতে মিশে গেলে
জেনো ফুরাবেনা মেলা
শুধু শুরু হবে
নতুন এক জীবনযাত্রা
সব জীবন ফিরে আসে
নতুন এক রুপ নিয়ে
দেখো এই দেখো
আমার অফুরন্ত জীবন
সাদা কাফন

অর্ধেক চাঁদ

ফেলে রেখে গেলে
অর্ধেক চাঁদ 
এলোমেলো চুলের একপাশে
কোথায় যেন এক শিশু কেঁদে উঠলো
এক নিমেষে ভেঙ্গে গেল নিস্তব্ধতা
বদ্ধ ঘরে
আর কেউ নেই শুধু অন্ধকার
আর কেউ নেই শুধু অপেক্ষার সকাল
ব্যস্ত দুপুর
কাদামাটি ভেজা সড়ক
আর কিছু নেই শুধু অগোছালো জীবন
আর কিছু নেই শুধু
অনিশ্চিত আগামীকালের
পিছু পিছু ছুটে চলা
ব্যর্থ আর বিষাদের গান গেয়ে
আর কিছু নেই শুধু
অর্ধেক জোছনাতে স্নান করা

দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে আসে

কটু চিড় খেয়ে গেলে
এইতো শুরু হয় চিনচিনে ব্যাথা
একটু পরেই সব স্তব্ধ 
ফের সেই 
খুটখাট শব্দের রেশ
এইতো ক্ষীন আলো
এইতো থাকা না থাকার মাঝে
দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে আসে

তোমার শব্দে শব্দে চারিদিক নিঃশব্দ

তোমার শব্দে শব্দে চারিদিক নিঃশব্দ
আমার শব্দগুলো হারিয়ে গেছে বোবাতে
উথাল পাথাল
লিলুয়া বাতাসে উড়ে গেছে অপেক্ষা
সুন্দর সময়ের
সুনীল সাগরের
শুভ্র কপোতের
সেখানে জগাখিচুড়ি
কর্দমাক্ত সড়কে মলীন মুখে
তবু লেগে আছে স্নিগ্ধ হাসি অমলীন
কাগজেরা সব কিনতে গেছে সুখ
আর সুখেরা সব লেপ্টে আছে
আলোছায়া
শুখিয়ে যাওয়া অশ্রুতে
তোমার শব্দে শব্দে আটকে গেছে সব কথা
আমার শব্দগুলো আলো ভেবে
থেতলে গেছে
ধাক্কা খেয়ে কাঁচে
সারি সারি কাফনে ঢাকা অপেক্ষারা
হাসিকান্না সুখদুঃখ ব্যাথাবেদনা
সবাই হারিয়েছে স্বকীয়তা

ওরা যেন ছিলনা এখানে কোনকালে

তারপর সূর্য ঢলে গেলে 
শীতল হলো নদী পাড়
সারিবদ্ধ পিপীলিকারা
ঢিবির নীচে ফিরে আসতে হলো সন্ধ্যা
অন্ধকার গাঢ় হলে 
ঝোপের ভেতর থেকে বেড়িয়ে এলো হলুদ শেয়াল
ল্যাজ নিচু করে ধেই ধেই করে চলে গেল
গর্ত খুড়ে বের করে নিয়ে লুকানো খাবার
ক্লান্ত কাঠঠোকরা ঘুমানোর আয়োজন করে
মধ্যরাতে জেলে নৌকার মাঝি খুক খুক কাশে
এইখানে অনেক প্রান নিয়মিত ধুক ধুক করে
অনেক প্রান নিস্তব্ধ হয়ে যায়
মিশে যায় সহজেই এইভাবে
ওরা যেন ছিলনা এখানে কোনকালে

এখন আমি এক বাক্সের ভেতর বসবাস করি

এখন আমি এক বাক্সের ভেতর বসবাস করি
বাক্সের চারিপাশে যা কিছু আছে এর বাইরে
আর কিছু জানিনা
আর কিছু বুঝিনা
আর কিছু শুনিনা
এখন আমি এক কবরের ভেতর বসবাস করি
কবরের চারিপাশে পোকামাকড় ছাড়া
আর কারুকে চিনিনা
আর কারুকে খুঁজিনা
এখন আমার দেহের ভেতরে কোন মন নেই
এখন আমি লাশের মতন
সামুকের মত ধীর আর
কচ্ছপের মত স্থির
লাশেরা হাসেনা,
লাশেরা কাদেনা,
লাশেরা অপেক্ষা করেনা
কোন কবিতা বা গানের জন্য
লাশেরা মিশে যায় মাটিতে তারপর একদিন ফসিল হয়।

বুকের মাঝে

দূরত্ব? 
সাত সমুদ্র তেরো নদীর পাড়!
পৌছুতে লাগে
এক নি:শ্বাস
ফিরে যেতে লেগে যায় 
পুরো জীবনের অর্ধেক মাস
বুকের খোঁদলে লুকিয়ে রাখি
না বলা না কওয়া
বেড়িয়ে যায় সে
খুঁজি খুঁজি খুঁজি তারে
পত্রহীন শাঁখে ঝুলে থাকা রোদে
ব্যস্ত শহরে
ক্লান্ত কাকের চকিত চোখে
নেই নেই নেই
কোত্থাও নেই
ফিরে এসে দেখি সেখানেই আছে
অভিমানে মুড়ে
বুকের মাঝে

ওরা কেউ জানেনা

সেদিনের মত আজো
আকাশ চুপচাপ
অপেক্ষা করে গুমসুম
বৃষ্টি হবে কি হবেনা
মেঘেরা কেউ জানেনা
সেদিনের মত আজো
আকাশ নীল নীল
হরেক নীলে নিলাভ
কার যেন মুখ দ্যাখে অনিমেষ
সেকি সাগর নাকি সূর্যের রশ্মি
পাখীরা কেউ জানেনা
সেদিনের মত আজো তুমি নেই
কোনদিন ছিলেনা
কোনদিন আসবে কি আসবেনা
ওরা কেউ জানেনা

এসো দু:খ দু:খ খেলি

এসো দু:খ দু:খ খেলি
দু:খের আদি থেকে অন্ত 
কার কার কাছে
কত শত দু:খ আছে
সব ঢিবি করে রাখো
দু:খের পাহাড়ে চড়ে
নদী দেখবো
পৃথক করবো
পানি
পাতালের
বৃষ্টির
অশ্রুর
মিশতে দেবোনা
এক দু:খের সাথে অন্য দু:খ
সবার সব দু:খ
আলাদা আলাদা
শত শত ভাগে বিভাজিত
সেখানেই খেলার মজা
সবাই মিলিয়ে গুলিয়ে খিচুড়ি পাকাতে চায়
অথচ সব আলাদা আলাদা
দু:খেরা অকৃত্রিম

খেলা চলে নিরন্তর

খেলা চলে নিরন্তর
দীর্ঘ আর ক্লান্ত পথে
বিস্তীর্ণ চরাচরে
হাজার ভাবনাতে আচ্ছন্ন মনে
খেলা চলে নিরন্তর
বার বার ফিরে যায় সেখানে
যেখানে দু:খ ছিল, বঞ্চনা ছিল, স্বপ্নগুলো
দুমড়ে মুচড়ে ছিল
আয়নাতে কি দেখলে?
দ্যাখোনি তোমার মুখ?
নিজেই কেনো চিনতে পারোনা নিজেকে
না পাওয়ার বেদনা কি অন্য বুকে
অন্য ভাবে অনুভূত হয়?
সবার রক্ত লাল
বেদনার রং নীল
ক্ষুধায় কামড়ে ধরে জঠর
ওদের সবার মুখ মিলেমিশে এক হয়ে যায়
তবু খেলা চলে নিরন্তর
বঞ্চিত বঞ্চনা করে বঞ্চিতরে
খেলা চলে নিরন্তর

দুমড়েমুচড়ে

বাইরেটাতে কি ঝলমল রোদ্দুর
অথচ কনকনে শীত
প্রকৃতি আজকাল মানুষের মত কপোট আর মুখোশধারী 
শিশুর মত অনুকরণ করে
দেখলাম পানির মত
নিমেষে বিষাক্ত হয়ে যায়
বুঝলাম ঝড়ের মত
উড়িয়ে নিয়ে যায় দুমড়েমুচড়ে
ভাবলাম আমি এমন কেনো?
সাথে থেকে থেকে
হাওয়া লেগে লেগে
আমিও উবে যাবো - স্পর্শ করতেই ধুলোর মত

পুনঃজন্ম ঘৃনা করি

সেই ফাসির আসামী যাকে তার শেষ ইচ্ছা জানতে চাওয়া হলে সে বলেছিল
"যদি হাজার হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের চূড়ার এক চিলতে কোন আঁকড়ে ঝুলে থেকেও সে বাচতে পারে, তবু সে বাচতে চায়"
জীবন কখনো এভাবে প্রলোভন দেখাতে পারেনি
আমি পুনঃজন্ম চাইনা
আষ্টেপৃষ্ঠে বাধা দু:খ, ব্যাথা, বেদনা, মিথ্যা
আর প্রতারণা এইসব ঠাসা জীবন নিয়ে
ঢের হলো এক জীবনে বেচে থাকা
একবার গেলে আর ফিরতে চাইনা
দেখো চারিদিকে কত লাশ
কারু চোখহাত বাধা পচাগলা
কারু যোনিপথ দিয়ে খাদ্য খেয়েছে পোকামাকড়
কারু গলা কাটা
কারু চোখ উপড়ানো
কারু ছিন্নবিচ্ছিন্ন
বিলিয়ন ডলার কর্পোরেশনের তৈরি বোমাতে উড়ে গেছে সভ্যতা, সমাজ,
কত যুগের প্রজন্ম
আমি পুনঃজন্ম ঘৃনা করি
একটুকরো কাগজ দিয়ে
এক পশলা সুখ কিনবে বলে
সুইসাইড বোমার মত
ওরা ব্যাথা ভরে দেয় বুকে
ঢের হলো জোড়াতালি টানাহেঁচড়া
ঢের হয়েছে অভিনয় আর মিথ্যা
ঢের হলো মুখোশ বদল
ভালবাসা আর সত্যের মৃত্যু দেখে
চোখভরা ক্লান্তি এখন
আমি পুনঃজন্ম ঘৃনা করি
ঢের হয়ে এ জন্ম!!
উদগ্রীব হয়ে আছি
ছুটির ঘন্টা বাজার শব্দ শোনার

মাথার উপরে

মাথার উপরে
আকাশটা খুব কাছে এসে গেছে
চাপ দিচ্ছে
পিষে ফেলছে মগজ
বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে যোগাযোগ
তারপর এক সময় আর কিছু নেই
সব ফাঁকা
অবশ আর অন্ধকার

হাতের মুঠোতে আকাশ ধরার স্বপ্ন

তোমার চোখে
তোমার কন্ঠস্বরে
তোমার লেখাতে
ঝুলে থাকে সেই পুরোনো ক্ষোভ
সেই অমীমাংসিত জেদ
আঁচড় কাটে মাঠেঘাটে
আকুলিবিকুলি বুকের মাঝে
তোমার অপূর্ণ আহ্লাদ
মণিমুক্তো
হাতের মুঠোতে আকাশ ধরার স্বপ্ন
মাকালফলের দিকে
তাকিয়ে কেটে যাওয়া অমূল্য সময়
তোমার চোখে
লেগে থাকে সেই পুরোনো হিংসা
যার উপরে মলাটে লেখা আছে
“আমি অহিংস”
তোমার কন্ঠস্বরে
মিশে আছে সেই উষ্মা
মাথা খুঁটে মরে চার দেওয়ালের মাঝখানে
তোমার লেখাতে
পষ্ট হয়ে ফুটে উঠে
হৃদয়ের প্রতিচ্ছবি
যার উপরে মলাট আর মলাটে লেখা আছে
এখানে ছবি আঁকা নিষেধ !!!
তোমাকে আমি এক অসীম আকাশ দিলাম
বাঁধাহীন অদম্য প্রান দিলাম
সব দুমড়ে মুচড়ে তুমি ফেলে দিলে
তোমার কন্ঠে রাগ ভৈরবী
অথচ এখন মধ্যরাত!

বুধোর ঘাড়ে

উধোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে
বেশ কেটে যায় 
রাতদিন আর সময় অসময় 
মিথ্যাগুলো মিথ্যা হয়েই
চোখের ভাঁজে ঘুমিয়ে থাকে
চোখ খুললেই মিথ্যা হাসে
স্বপ্নগুলো উবে যায়
রোদ উঠলেই স্পষ্ট হয়
অভিনেতার ময়দা মাখা মুখ
কুন্ডুলি পাকানো
ইতস্তত বিক্ষিপ্ত
চিন্তা, মিথ্যা, কৃত্রিম শুভ কামনা
ভালমানুষের বিজ্ঞাপণ এটে কপালে
উধোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চেপে
ভাবনাতে মিথ্যা মেখে
সুখ নিদ্রাতে বিভোর হয়ে
বেশ কেটে যায়
রাতদিন আর সময় অসময়

যেখানে থমকে ছিল কারণ

স্যাঁতসেঁতে মেঝেতে তেলেপোকার স্বচ্ছন্দতা
দেওয়ালে পেটভরা ডিম নিয়ে টিকটিকি
আমি বল্লাম রাত ঢের হলো
এইবার চোখ বন্ধ করো
রাত ঘুমের
দিন কাজের
রাতে সূর্যি সময় দেয়
বিশ্রামের
দিনে সূর্যি শক্তি যোগায় কর্মে
আমি বল্লাম ভোর হলো
ফিরে চলো
সেখানে যেখানে থমকে ছিল
কারণ
ঘুম ভাংগার
রাত্রি জাগরণের
তুমি বল্লে অকারণ
আমি বল্লাম
সবকিছু কারণে ঘটে
আমার আসার কারণ
আমার যাবার কারণ
কারণ কারণ কারণ
অকারণ বলে কিছু নেই
ভোর হলে তুমি চলে গেলে
কারণ অন্য কোথাও ডাক দিয়েছে

বিদায় নিচ্ছি

ঘুম মৃত্যুর মত
কাল ভোরে
চোখ খুলতে পারে
না খুলতে পারে
তাই আমি বিদায় নিচ্ছি
নেক্সাসের কাছে
অসমাপ্ত ক্যানভাসের কাছে
আকাশের কাছে
অন্ধকারে পত্রহীন শাখার কাছে
আর কেউ নেই আমার
বিদায় নিচ্ছি
একাকীত্ব থেকে
বেদনা থেকে
ব্যাথা থেকে
দু:খ থেকে
আর কিছু ছিলনা আমার

ধোকা ছিল

সত্যের মত মিথ্যা ছিল
সুখের মত দু:খ ছিল
যোজন দূরে বসে বুকের মাঝে বসবাস ছিল 
বন্ধুর মলাটে আটা শত্রু ছিল
বিশ্বাসের বদলে নিখাদ ধোকা ছিল
এতকিছু থেকেও ছিলনা কিছুই

খুব ভোরে

কাল ভোরে
খুব ভোরে
সূর্য ওঠার আগে
খুব আগে
আমাকে জাগিয়ে দিও
হিমালয়ের চূড়াতে শিশির ছুব
মাঝখানে গৌতম নেই
গৌতমেরা এখন ডাকাতি করে ব্যাংকে
গৌতমেরা এখন ধর্ষন করে গলা কেটে ফ্যালে মেয়েদের
কাল ভোরে
খুঁজতে যাবো ঘর
গৌতম চেয়েছিল ছাই
সেই ঘর থেকে
যে ঘরে একজন দেশপ্রেমিক বাস করে

কথার ছাদে ব্যাথার রোদে

কোন দিন ভাংগবেনা 
এমন এক ঘুম
এসে কপোল চুমে
থমকে গেল
কুণ্ডলী পাকানো স্বপ্নের কথা শুনে
স্বপ্নগুলো এলোমেলো
বুকের ভেতর জমা কথার ছাদে
ব্যাথার রোদে
থেতলে যাওয়া আশার চাদরে
স্বপ্নগুলা মাখামাখি
ঘুমের সাথে দাপাদাপি
বল্লে "জানোতো সুখেরা ফেরারি
জানোতো বুকের ভেতর
ধুধু মাঠ
কোত্থাও নেই হাসিগান
জানোতো আদি থেকে অন্ত শুধু
একাকী পথ চলার
আরো কিছু বাকী আছে
স্বপ্নগুলো চূর্ণ হতে
কিছুদিন পর এসো
তখন অভিমানী ঘুম
ভেংগে গেল

স্বচ্ছ ছিলনা দৃষ্টি

মেঘের মত না
কুয়াশাও না
তবে স্বচ্ছ ছিলনা দৃষ্টি
মাথার ভেতর এক অদ্ভুত বেদনা
পীড়া দিচ্ছিল
যখন মনে হলো
কি ভীষন একঘেয়ে সংসার
বারে বারে এক কথা এক কাজ ঘুরপাক
কি ভীষণ শূন্যতা
শুধু কাটালতা ভুল বুঝা
কেনো আমি এগুতে পারিনা
স্পর্শ করতে পারিনা
কেনো আমি হারিয়ে যেতে পারিনা
একাকীত্বে মিশে
না থাকার মত কোনকালে

হৃদয়হীন লাশের মত

আজকের বৃষ্টি অন্যরকম নয়
রোজকার মত
বাসের জানালায় কুয়াশা
গন্তব্য অনির্দিষ্ট
জীবনের মত
মৃত্যুর মত
রোজকার মত
আজকের প্রতীক্ষা কালকের মত
সুনসান কবরে কি হয় কেউ বলেনা
জীবনের মত
মনের ভেতর লুকিয়ে রাখা মিথ্যার মত
আজকের বৃষ্টি অন্যরকম নয়
রোজকার মত
পুরানা ক্ষত খুঁড়ে খুঁড়ে নি:শব্দে কান্নার মত
রোজকার মত
মৃত্যুর মত
হৃদয়হীন লাশের মত

মৃত্যুর সাথে আপোষ করি

বাচার জন্য বার বার
মৃত্যুর সাথে আপোষ করি
মিথ্যার সাথে আপোষ করি
সুধা ভেবে বিষ পান করি
মেকি শুভ কামনাই অবগাহন করি
মেকি হাসি
মেকি কথা
রং বেরঙ্গ এর মুখোশে সত্য ঢেকে
মিথ্যার সাথে আপোষ করি
বাচার জন্য বার বার
ঘৃনার সাথে আপোষ করি

জট পাকানো

ছিড়ে যেতে পারে গেড়ো
জট পাকানো 
কপালের
খেড়ো খাতাতে লিখে রেখো 
আপাতত 
রাত দুপুরে অনুসরণ করোনা
জানালার কাঁচে
গাড়ির হেডলাইটের আলোর নাচন
এ্যাত তীব্র আলো
তবু কি অন্ধের মত
মাড়িয়ে যায় জ্যান্ত র‍্যাকুন
ফেলে রেখে যায় তার
থেঁতলানো রক্তাক্ত মৃতদেহ
চাকায় চাকায় পিষ্ট হয়ে
সব রক্ত মাংস মুছে যায় রাস্তা থেকে
একসময় বিদীর্ণ চামড়া
শুয়ে থাকে বিবর্ণ

আজ আর আজ নেই

আজ আর আজ নেই
পাটাতনের উপরে
সটান শুয়ে আছে আগামিকাল
বিশাল এক ফর্দ নিয়ে
তাতে লেখা আছে
আগামি কাল সবাই আমন্ত্রিত
জীবন নাটকের দেহলিজে
আগে থেকে রিহার্সাল দিয়ে এসো
সময় কম
সংলাপ শুরু হবে
পর্দা উঠতেই
আগুন মেখে এনো চোখে
শুখাতে হবে সব অশ্রু

অভ্যাসবশে

অভ্যাসবশে তোমাকে খুঁজি
কাটাতারে লেগে থাকা সূতোর মত
দুলে দুলে বাতাসে উড়ে যাই
মনের চারিপাশে এখন মরক লেগেছে
অব্যক্ত শব্দেরা এখন মৃত
লাশের মিছিল বুকের ভেতর
সেখানে সেদিনের সেই অপেক্ষা আর
ঘুরপাক খায়না
মরেছে ওরাও
সেই হাসি
সহজ সরল
সেই বিশ্বাস সব্বাই মৃত
লাশের মিছিল বুকের ভেতর
তবু অভ্যাসবশে তোমাকে খুঁজি
আড়াল করে লাশের মিছিল
বিশ্বাস মরে গেলে
আহত হয়েছিল
সহজ সরল
লেগে ছিল সেই দৃষ্টি
সেই গর্বিত ঘৃনা, অবহেলা, অযাচিত ভালবাসা
লাশের মিছিলে মুখ থুবড়ে
থাকে সব ভাল কথা, শুভ শুভ শুভেচ্ছা
মেকি হাসি, স্তুতি, কাঠের মনের উপর
পাখীর পালকের মন
তার নীচে ভয় ওত পেতে থাকে
প্লাস্টিকের হৃদপিন্ডে ক্ষত ভরে
মোম দিয়ে
তবু আমি তোমারে খুঁজি
ঘুমের ঘোরে
অভ্যাসবশে

বৈশাখী ঝড়ে

পাখী 
আমার পাখী
বুকের ভাঁজের 
বেদনাগুলো
সাজিয়ে নিও
পাখার নীচে
উড়িয়ে দিও
বৈশাখী ঝড়ে
ছড়িয়ে দিও
হাটু জলে
আটকে থাকা
জলজ কালো
আলোর নোলক
ভাসিয়ে দিও
উজানে
স্রোতের মুখে
দোলায় দোলায়
বুনো হাঁসের
উদাস চোখে
শেষ বিকেলের
রোদ্দুরে
দেখে নিও
কালো তিলে
প্রজাপতি
তুলে নিও
উঁচু উঁচু পাহাড়
থেকে উড়ে
আসা বুনো ফুল

হারিয়ে যাবো স্বজ্ঞানে

শোনো
বার বার এক কথা বলতে ভাল লাগেনা
কাল মহুয়া নিয়ে নয়
আমি জ্ঞান হারিয়েছিলাম স্বজ্ঞানে
তখন সড়কে গাড়ী ছিল
গাড়ীতে যাত্রী ছিল
সাদা এম্বুলেন্স নীল এপ্রোনে ওরা এসেছিল
ওদের চোখে কৌতুক ছিল
তোমার চোখ দুটো চোখে লাগিয়ে
ওরা হেসেছিল
আমি শুধু জেনেবুঝে
দেখেশুনে
ভেবেভেবে
পথে বেড়ুলাম
জ্ঞান হারালাম স্বজ্ঞানে
তোমাকে সাথে নিয়ে বসলাম
চোখে চোখ রাখলাম
তুমি মুখ ফিরিয়ে নিলে
আধোমুখে ঠোটে ঘাস নিয়ে
অন্যমনস্ক হলে
আমি জ্ঞান হারালাম স্বজ্ঞানে
শোনো
মৃত্যু এসে হাত ধরলে তখন
নাহয় ছেড়ে দিও হাত
কুয়াশা মেখে তখন আমিও
হারিয়ে যাবো স্বজ্ঞানে

বদলে গেছে

সেসব কিছু
এখন আর তেমন নেই
বদলে গেছে
রং, রুপ, সখ, দৃষ্টি
বদলেছে ছিলনা বলে
যা ছিল তা অজানা ছিল
যা আছে তা অজানা থেকে যাবে
হু হু করা আগল খোলা ঝরকা
জানে
কার অপেক্ষা ছিল
কার সিথানে আলো এনে ভোর হয়েছিল
কার ঠোটে রোদ্দুর খেলা করে
ডেউ হয়ে এলোমেলো উবে গিয়েছিল
কার ঘরে এসে এসে চুপিসারে ভালবেসে
জুই ফুটেছিল
সেসব কোন কিছু
এখন আর তেমন নেই
কারা যেন এসে তছনছ করে
নিয়ে গেছে স্বপ্নগুলো না বুঝে
নিয়ে গেছে রোদ্দুর আঁচলে ভরে, না বুঝে
ঝরে গেছে মাঝপথে
সরে গেছে রোদ্দুর
আটকে গেছে জোছনা বাধার আড়ালে
সেসব কোন কিছুই
এখন আর তেমন নেই

আমি নেতিয়ে রবো বেতসলতার মতো

তারপর রাত হলে
আমি নেতিয়ে গেলাম বেতসলতার মত
কোত্থাও কেউ নেই কোনকালে
তবু কোথা থেকে এসে গেল
ঝাক ঝাক শব্দ
ঠাস ঠাস আওয়াজে খুলে ফেল্লো
বুকের পাজড়
আড়াল থেকে চাঁদ এসে
আসর জমিয়ে দিলো
আমি জাগিনি তবুও
সব শব্দ এখন
বন্দী আমার পাজড়ে
চাঁদ ডুবে গেলে
মুক্ত করে দেবো
শব্দেরা জোনাকির মত আধারে
আলো দেবে ঝাকেঝাকে
আমি নেতিয়ে রবো বেতসলতার মতো

কোথাও নেই তুমি

মাঝে মাঝে তোমাকে খুজি
কবিতা
আকাশ, মেঘ, রোদ, বৃষ্টি, চাঁদ
কোথাও নেই তুমি
কবিতা
বুকে টোকা দিয়ে
কান পাতি
হৃদয়ে লুকিয়ে আছো কিনা
কবিতা
ঝরা পাতারা ফেরেনা ডালে
উড়ে গেছে কোন কালে
মিশে গেছে দূমড়ে মুচড়ে
ধুলোমাটি ঘাসে
প্রেরণা যুগিয়েছে মাটিতে
ফিরে পেতে নতুন পাতা ডালে
শুধু তোমাকে ফিরে পেতে
হাসিমুখ দেখিনি কোথাও
কবিতা
সব মুখ বিষন্ন বিরক্ত হতাশ দুখী
খুজে পাইনি কোথাও
কবিতা

ভিজেছে দড়ি

বাইরে বৃষ্টিতে ভিজেছে
দড়ি
তারপর পচে গেছে
সেই দড়ি
যে খুটিতে সেই দড়ি বাধা
সেই খুটিও নড়বড়ে ছিল
উপরে গেছে
এলোমেলো বাতাসে
আমার গলাতে ঝুলছে দড়ি
কিন্তু আমি মুক্ত হতে পারিনি
অভ্যাস এমন এক কদাকার জিনিষ
গলায় ছেড়াপচা দড়ি নিয়ে
উপড়ে যাওয়া নড়বড়ে খুঁটির কাছে
বসে আছি
সেই পুরাতন অপেক্ষায়
ভুল করে সে যদি ফিরে আসে
অন্য কোন খুঁটিতে দড়ি বাধে
অপেক্ষার রাতদিন আর দুই বছর
গলার চারিপাশে কালশিটা
ছোপ ছোপ বেগুনী দাগ
তাদের বয়স দুইবছর
বাইরে বৃষ্টি
ভেতরে শ্বাস রোগ

যেতেই থাকলে

তুমি হেটে যেতেই থাকলে সেই সুরঙ্গ বেয়ে
চোরেরা এসেছিল সিঁদ কেটে একদিন 
তখন যে সুরঙ্গ সৃষ্টি হয়েছিল
তুমি তাদের পদচিহ্ন দেখে অবাক হলে
চোখে মেখে নিলে
তুমি তাদের মত হাসলে
তুমি তাদের মত চুষলে রক্ত
চুইয়ে নামে দুগাল বেয়ে
তুমি হেটে যেতেই থাকলে সেই সুরঙ্গ বেয়ে
তুমি আর ফিরে এলেনা
তুমি হারিয়ে গেলে চোরেদের মগজে
তুমি এক মস্ত চোর হলে
তোমার ছেলেমেয়েনাতিপুতি সবাই চোর হয়েই বেড়িয়ে এলো
সেই সুরঙ্গ বেয়ে
এভাবেই এঁকে অন্যের ঘরে সিঁদ দিয়ে
কেটে গেলো শত বছর
এখন চারিদিকে চোর আর চোর
চুরি না জানলে সমাজচ্যুত, সুরঙ্গে জাগা নেই বেড়ুবার
শুধু চোরেরা হেটে যেতে পারে সুরঙ্গ বেয়ে

ক্ষতগুলো চুপচাপ ঘুমায়

ক্ষুব্ধ হতে হতে
ক্লান্ত হই
শ্রান্ত হই
ক্ষতগুলো চুপচাপ
ঘুমায়
মনের অতলে
ক্ষুব্ধ হতে হতে
পেড়িয়ে গেলে সময়
শান্ত চোখে সকাল দেখি
প্রথমবারের মত
ইর্ষার অলিগলিতে
অপেক্ষা করে ওরা
ভুল পথে বাক নিলে
আঘাত করে
তখন ক্ষতগুলো জ্বলে
প্রথমবারের মত
ক্ষুব্ধ হতে হতে
হেলে যায় সুর্য আকাশের
মাঝখানে
ঘৃনা করি মেঘ
ঘৃনা করি বৃষ্টি
ঘৃনা করি যা কিছু
ক্ষুব্ধ করে আমাকে
ক্ষুব্ধ হতে হতে
হারিয়ে ফেলি আমি
আমাকে

ঘুম আর জাগরণের মাঝখানে

সে থেকে গেল
ঘুম আর জাগরণের মাঝখানে
পথ আর ফুরালোনা
রাত আর দিনের মাঝখানে
তেরো ঘন্টার ব্যবধানে
মিথ্যা আর সত্যের কানামাছি খেলা
সে থেকে গেল
এক বাক থেকে অন্য বাকে
চার দেওয়ালের মাঝখানে
কার্ণিশে অস্থির কাক
তোতার মত সে অনবরত
করে গেল অনুকরণ
অন্ধের মত অনুসরণ
সে থেকে গেল
আলো আধারের মাঝখানে

মেঘ ধোকা ছিল

ভাবছি কেমন কবিতা লেখা যায়?
এখন রাত সাড়ে ন'টা। আমি বাসে। অপেক্ষা করছি। আজ টানা দশ ঘন্টা কাজ করলাম। ভাবছি কবিতা লিখি। কি লিখি? বাসে তেমন কেউ নেই। সেটা লিখবো? বাইরে ভিজে রাত্রী। সারাদিন টিপটিপ বৃষ্টি হয়েছে। সেটা লিখব? আমার মন খারাপ, সেটা লিখবো? আমার মনে অনেক সুখ, সেটা লিখবো? তাহলে মিথ্যা হবে। সত্য লিখে কি লাভ? আমি কেনো সবার মত মিথ্যা মিথ্যা ভুয়া প্রেমের কবিতা লিখতে পারিনা? খুব চেষ্টা করছি ব্যাথা ঢাকবো দুনিয়ার আস্তাকুড় মিথ্যা দিয়ে। ভাবছি। অথচ হচ্ছেনা কিছুতেই। বাস চলছে। রাস্তা ফাকা। খুব কম গাড়ী এদিকটাতে
আমার মনের ভেতর
বৃষ্টির প্রবেশ নিষেধ
মেঘ ঘৃনা করি তাই
মেঘে এসিড মিশ্রিত ছিল
সেদিন বুক জ্বলে গেছে
চোখ দিয়ে নেমে
বিন্দু বিন্দু জল
আমি আকাশ ঘৃনা করি
সাগর ঘৃনা করি
ঘৃনা করি নৌকা, নদী, স্বপ্ন
প্রচুর ঘৃনা জমে আছে বুকের ভেতর
একটা শহর উড়িয়ে দেবার মত
বিস্ফোরক
আমি ঘৃনা করি সেই ঠোট
যেখানে হাসি মিথ্যা ছিল
শুভেচ্ছা ভুয়া ছিল
মেঘ ধোকা ছিল
বৃষ্টিতে এসিড ছিল

আমার সব পছন্দ এখন ঘৃণা হয়ে গেছে বিষের মত

আগে আমি নদী পছন্দ করতাম
এখন ঘৃণা করি
আগে আমি মেঘ, বৃষ্টি, আকাশ পছন্দ করতাম
এখন ঘৃণা করি
আমার মনে হয় ওরা মুখোশধারী
আমার মনে হয় ওরা মিথ্যুক
আমার মনে হয় ওরা খুব সহজেই
হত্যা করতে পারে আমার সব হাসি
নিমেষে আমাকে মূক,বধীর, অন্ধ করে দিতে পারে
কেড়ে নিতে পারে বোধ, বিবেক, সকল জীবন
যা কিছু সুন্দর
যা কিছু আমার
ওরা সব কিছুকে নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নির্মম খেলা করতে পারে
আগে আমি আকাশ পছন্দ করতাম
এখন ঘৃণা করি
কারণ মেঘগুলোকে বুকে ঠায় দেয় আকাশ
আগে আমি নৌকা পছন্দ করতাম
এখন ঘৃণা করি
মনে হয় পাটাতনে এক ফাঁদ পাতা আছে
নির্মমভাবে আটকে দেবে আমার পা
তারপর আমাকে পংগু করে দিয়ে
হাসবে বিদ্রুপের হাসি
আমার সব পছন্দ এখন ঘৃণা হয়ে গেছে
বিষের মত

আমি ছিলাম না কোথাও

আমি নেই সেখানে
আমি ছিলাম না যেখানে
নিজেকে নিয়ে কত বিব্রত ছিলাম 
লজ্বিত ছিলাম
অপ্রত্যাশিত ছিলাম
অনাহুত ছিলাম
বেমানান ছিলাম
সেজন্য আমি ছিলাম না কোথাও কোনকালে
গ্রহণযোগ্য ছিলাম না
ঠাই ছিলনা কোথাও
কি বিশ্রী ছিলাম
কুৎসিত কদাকার
ঢেকে রাখতে হতো আসবাবের নীচে
অপাংতেও ছিলাম
আমি নেই সেখানে
যেখানে ছিলাম না কোনকালে
ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে পথে এলাম
পথে হেটে হেটে ক্ষয়ে গেলাম
শহর ছেড়ে দিলাম তারপর দেশ
তারপর একদিন ফিরে দেখি
আমি ছিলাম না কোথাও
সেখানে
আমি নেই যেখানে

আমার নাম

তোমাকে বলবো
রাত পোহালে
সূর্য উঠার আগে
পূবের লাল রেখা উজ্জ্বল হলে
চোখের তারায় ঘন মেঘ নিয়ে
তোমাকে বলবো
ঝটপট বুঝে নিও
ঢেকে রেখো শূন্য হৃদয়
নিরুত্তর পলকের নীচে
সূর্য শুষে নেবে
আলো দিয়ে ধাধিয়ে দেবে
মগজ থেকে বুকের ভেতরে
গুম হয়ে যাবে
আমার নাম
তোমার হৃদয়ে

গল্প হয়ে যায়

কিছু শব্দ শুনতে শুনতে
মনে গেঁথে গল্প হয়ে যায়
কিছু কথা নাবলা থেকে থেকে
বলা হয়ে যায়
কিছু কথা বলে বলেও
শোনা হয়না আর
শুধু বুকে বাজে
থেমে থাকে
কোথায় যেন বাধা পায়
কার সাথে
ফিরে যায় সেখানে
আটকে থাকে বুকের মাঝে
চার দেওয়ালে ধাক্কা লেগে
শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে