Sunday, May 13, 2012

পাশবিক

খাবি খায় অন্ধকারে
সাঁতার না জানা মানুষ পানিতে যেমন খাবি খায়
ওরা মুচকি হাসে,
কৌতুক চোখে দ্যাখে অন্যমনস্ক
ষণ্ডযুদ্ধে রক্তাক্ত ষাঁড়কে দেখে মানুষ যেমন উল্লাস করে
রেসলারের রক্তাক্ত দাঁত শূন্যে
উড়ে যায় প্রতিদ্বন্দ্বীর ঘুষিতে
উল্লোসিতা ষোড়শীর হাটুতে এসে ঠক্কর খায়
তখন নিজের হাটুতে রক্ত
দেখে সে চিৎকার করে উঠে
 দূর থেকে অন্যকে রক্তাক্ত হতে দেখাতে
যেমন আনন্দ
এমনকি সেই রক্তের ছিটে কোনভাবে
শরীরে লেগে গেলে
অন্য এক অনুভূতি হয়
ঘৃনা আর বমি উথলে উঠে
বুক থেকে
বিভেদ ঘৃনা থেকেই জন্ম নেয়
পাশবিকতা সবার অন্তরে লুকিয়ে থাকে
সেটা ঢেকে রাখতে গোলাপের চাষ
মাঝরাতে পূর্নিমার আধা ভক্ষিত চাঁদ
বুকের অর্ধেকটা আড়াল করে রাখে
অন্যের দুঃখ অনুভব করার
ক্ষমতা অবশ হয়ে যায়
তাই রক্ত ভাল লাগে
অন্যের গর্দানে, শরীরে, সন্তানের মৃতদেহে।

Saturday, May 12, 2012

পরিপাটি সব পালক
অগোছালো হয়ে যায়
শব্দের মতো ছেড়া ছেড়া
এলোমেলো
জুড়ে বসে মনে
... প্রতিবেশীর হেঁসেল থেকে
সুখাদ্যের ঘ্রানের মত
জটলা করে
সুখ স্মৃতি
অগোছালো বৈঠকখানাতে
এক ফিরে আসা
দুপুরে
ফাটা ফাটা রোদ এসে উঠোনে
প্লাবন এনে
স্বপ্ন দেখায়
সুফলা মাঠের
সব অগোছালো থাকে
জীবনযাপন

আমার বন্ধু ভয়

কষ্ট হবে সেই ভয়
লেগে থাকে সব সময়
ফেউয়ের মত
পিছু ধাওয়া করে
ভয়
ভয় হয় সবসময়
হারাবার
এমন কি যা ছিলোনা কোনদিন
তা
হারিয়ে ফেলার ভয়
লেগে থাকে সারাক্ষন
তুমি নাই
তোমার চাইতেও বেশী
আপন এখন
তোমাকে হারাবার ভয়
আর তো কিছু নেই
কেউ থাকেনা সাথে
শুধু ভয় থাকে
চুন লাগাবার আগেই
খসে যাবে পান থেকে
সেই ভয় থেকে যায়
কেউ থাকেনা সাথে
শুধু ভয় থেকে যায়
 

Wednesday, May 9, 2012

সুন্দর

পোষাক বদল না করেই
বলে ফেললাম
সহজভাবে
ঘরে বাইরে
সেখানেই অমিল
ভুলের শুরু
সবাই ভুল করে
এইভাবে
সহজ হলে
সস্তা ভাবে
মেকী হলে
কিনে ফ্যালে দ্বিগুণ দামে
পচাতেই খুশী থাকে
সহজ সরল সোজা ভাষাতে
অপমান ভাবে
সত্য সুন্দর
হোক তা সে যতই কর্কশ
চোখ দিয়ে যা দেখি
মগজের ভেতরে যা বুঝি
তার সাথে কোন সংঘর্ষ নাই
তাই আমি সুখী
তুমিও সুখী হয়ে যাও
...তোমার পরিসর জেনে
নিজেকে জেনে
নিজের সম্ভাবনাগুলোকে জেনে
তুমি কি ?
তা শুধু তুমি জানো
নিজের জন্য যদি গর্বিত না হও
তাহলে বদলে ফ্যালো
ধোলায় করে ফ্যালো মগজ
তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে দ্যাখো
কি বিশাল আর কি সুন্দর
সুশীতল হাওয়াতে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে
চোখ খুলে দ্যাখো
জীবন সংক্ষিপ্ত
আর কি কি কাজ বাকী আছে
জীবনের ঋন পরিশোধের
সুদে আসলে
আর কি কি কাজ বাকী আছে ?
কেনো এসেছো এখানে?
মৃত্যু কি শুধু আজই এলো ?
লাশ কি শুধু আজই ভাসলো ?
কোথায় ছিলে এ্যাত কাল ?
আজ জেনেছো ভাই গেছে তাই
কাল শোনোনি
...সেই কান্নার শব্দ

বিশ্বাস না হয়
নদীগুলোকে শুধাও
লাশ ধুয়ে ধুয়ে
শুখিয়ে মরু হলো পদ্মাপাড়

এমন ছিলো সেই কান্না
ফিসফিসানো
শব্দ হলে যদি
লাশ হয়ে যায়
শকুনদের শুধাও
লাশে অরুচি ধরেছে

চারিধারে শুধু ভাগাড়
বসে ঝিমানো যো ছিলোনা

সেই বৃষ্টি আর হয়না

সেই বৃষ্টি আর হয়না
সেই কাদামাটি ধুয়ে ধুয়ে আর যায়না
আটকে থাকে আবর্জনা একখানে
সেই পূতিগন্ধময় পুরানা কাসুন্দিতে
পড়ে আছে মুখ থুবড়ে আকাশ
বিষাক্ত মেঘে মেঘে মনগুলো ছেয়ে গেছে
সেই ঝড় এখন আর হয়না
মিথ্যার দেওয়ালগুলো অকেজো কাগজের মত
উড়িয়ে নিয়ে যায়না
মিথ্যাগুলো এখন শক্ত দেওয়াল হয়ে
দাঁড়িয়ে আছে সত্যের পথ রোধ করে
সেই বৃষ্টি আর হয়না
গলে গলে আর যায়না
সেই কাদামাটি ধুয়ে ধুয়ে গেলে
ঝকে ঝকে হতো আকাশ
চোখ থেকে উড়ে যেতো ধুলোবালি
দেখা যেতো সত্যের উদ্ভাসিত হাসি
সারাদিন সামনে দাঁড়িয়ে
তবু খুজতেঁ থাকো আকাশে আকাশে
নক্ষত্র যদি ধরতে পেতে
তাহলে তাকেও রাখতে ফেলে
দ্যাখ না দ্যাখ
তোষকের নীচে
চোখ বন্ধ করে হাটছিলাম
তাই হোচট খেলাম
চোখ খুলে হেঁটে হোচট খেয়ে
কপালের দোষ দিয়েছি

... সহজ আর সাদামাটা
অপবাদ দেওয়া সহজ
সহজ মানুষগুলোকে
প্রতারনা করাও সহজ

জটিল লোকেরা তাই
সহজ সহজ
ধোঁকা দেয় সহজেই

চাঁদের গায়ে চাঁদ লেগেছে -- লালন কি বলে

চাঁদের গায়ে চাঁদ লেগেছে
আমরা ভেবে করবো কি
ওরে ঝিয়ের পেটে মায়ের জন্ম
তোমরা তাদের বলবে কি
ছয় মাসের এক কন্যা ছিল
নয় মাসে তার গর্ভ হলো

আবার এগারো মাসে তিনটি সন্তান
কোনটা করবে ফকিরী ফকিরী

ঘর আছে তার দুয়ার নাই
লোক আছে তার বাক্য নাই
কেবা তাহার আহার যোগায়
কে দেয় সন্ধা বাতি সন্ধ্যা বাতি


লালন ফকির ভেবে বলে
মায়ে ছুইলে পুত্র মরে
আরে এই কথার মান না জানিলে
হবে না তার ফকিরী ফকিরী।।

চাঁদের গায়ে চাঁদ লেগেছে
এখন দেখা যাক এই গানের মাধ্যমে লালন কোন তথ্য আমাদের কাছে পৌচ্ছে দিতে চেয়ে ছিলেনঃ
Uterus, a hollow organ inside a women’s body
where a baby grow up after fertile egg and sperm matches
চাঁদের মতো গোলাকার দেখতে মাতৃগর্ভ
আর শিশুকে চাঁদের সাথে তুলনা করা হয়
এক চাঁদকে তুলনা করা হয়েছে মাতৃগর্ভের সাথে
আরেক চাঁদ হলো ভ্রুন

ছয়মাসের ভেতর এই ভ্রুনে জীবনের সঞ্চার হয়
নয়মাসে এই ভ্রুন পরিপুর্ন শিশু হয়ে
পৃথিবীতে আসার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়
আর এগারো মাসে এই শিশু হাটতে শেখে
(আমার শিশুরা ৯ মাসেই হাটতে শুরু করে – স্টান্ডার্ড
সময় ১১ মাস)
হাটার আগে শিশু হামা দিয়ে চিনে নেয় তার পরিসর
কতদূরে সে যেতে পারে
ভ্রুনে শিশু থাকাকালিন এই মায়ের ভ্রুন এক মানবের জন্মের
প্রতিশ্রুতি দেয়
মানুষ আছে বাক্য নাই – শিশু মানব
কিন্তু কথা বলতে পারেনা মাতৃগর্ভে

ঘর আছে দুয়ার নাই – ভ্রুনে থাকতে পারে কিন্তু বেরুতে
পারেনা সময় না হলে। এক চক্রের ভেতর দিয়ে যায় নয় মাস। সেই চক্রের বিভিন্ন সময়ে
শিশুর বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ একটু একটু করে গড়ে উঠে। অন্ধকারে থাকে শিশু কিন্তু
মায়ের নাড়ির সংযোগ থাকে শিশুর নাড়ির সাথে। সেইভাবেই সে আহার করে।

কেবা তাহার আহার যোগায় কেবা দেয় সন্ধ্যাবাতি

৯ * ৩ = ২৭
৬ * ৩ = ১৮
২৭ – ১৮ = ৯
লালন ফকির ভেবে বলে
মায়ে ছুইলে পুত্র মরে
আরে এই কথার মান না জানিলে
হবে না তার ফকিরী
  • ‎[মানব সমাজে এক
    বহুল প্রচলিত প্রথা আছে। বিবাহ করে ঘরে
    স্ত্রী নিয়ে আসা ঘরের কাজের জন্য, ক্ষেতের কাছের
    জন্য, গরুর দেখাশোনার জন্য আর সন্তান উৎপাদন করার জন্য। স্ত্রী হলো অনেকটা হালের
    বলদের মত - উৎপাদনের একটি উপাদান।]

    এই উপাদান যখন
    গর্ভবতী হয় আ...র পুত্রসন্তান লাভ করে আর যদি এই পুত্র সন্তান
    ভূমিষ্ট হবার সাথে সাথে মারা যায়। তখন এই স্ত্রী বা ছেলের মা’কে সবাই দোষোরোপ
    করে “পুতখেকো” বলে।

    অথচ সেই চাঁদের
    গায়ে যে চাঁদ লেগেছিল সেই চাঁদ লাগাতে - না চাঁদের বাবার,
    না চাঁদের মায়ের,
    কারুর কোন অবদান
    বা করার কিছু ছিলনা। জৈবিক চাহিদা মেটানো আর বাচ্চা বানানো এই তো মোদ্দা কথা।

    তবু প্রাকৃতিক
    নিয়মে মা যখন গর্ভবতী হন তখন তার মধ্যে এক ধরনের ল্যাবন্য দেখা দেয় । মা হবার
    আনন্দে। পরিপূর্নতা আসে। আর সেই জন্যেই এই নয় মাসে মা
    হাজারও কষ্ট সহ্য
    করেন। আর জন্মের সাথে সাথে সেই সন্তানের মৃত্যুতে সেই চাঁদ বা গর্ভ খালি হয়ে যায়।
    চাঁদ বিদায় নিয়ে চলে যায় আরেক চাঁদের কাছ থেকে তারপর পৃথিবীর আলো দেখতে না দেখতেই
    সে চিরবিদায় নিলে দোষ হয় মায়ের – ছেলে খাবার
    অপরাধে।

    কেউ দেখেনা,জানেনা,
    বোঝেনা সেই নয়
    মাসের ব্যাথা, কথা, আশা, নাড়ীর যোগাযোগ। সন্তান হন্তার অপরাধবোধ আর সন্তানের জীবন যা বাঁচাবার
    ক্ষমতা না ছিল মায়ের না, ছিল বাবার। না
    ছিল প্রতিবেশীর, না ছিল সেইসব লোকের যারা একজন মা’কে–
    “ছেলেখেকো”
    বলে দোষারোপ করে –
    তবু যেন এটা একটা
    প্রথা – সন্তানের জন্ম যে দেয় – যদিও সন্তানের
    জীবন সে দেয়নি – তবু সেই মা'কেই দায়ী করা হয় ভূমিষ্ট শিশুর তৎক্ষানিক মৃত্যুতে।

    এই হলো ...।
    মায়ে ছুইলে পুত্র
    মরে
    আরে এই কথার মান
    না জানিলে
    হবে না তার ফকিরী
    .........শেষ কথা।।
এক রাস্তা ভর্তি গাড়ি
শবযাত্রা
মৃত্যুর পরেও উৎসব
জন্ম নিলেও উৎসব
চারিদিকে লেগে আছে উৎসব
এ্যাত উৎসবের মধ্যখানে
কেনো আমি এ্যাত ম্লান ?

ফাঁস

রুদ্ধ দরোজার
ভেতরে শ্বাসপ্রশ্বাসের শব্দ ছিলো
দরোজাতে একটি হাত ছিলো
শুধু দরোজা বন্ধ ছিলো
মনের
ভেতরে একেবারে হাটের মতো
মধ্যরাত্রিতে পাঁড় মাতালের গোঙানি
হেরে গেছে শেষ কড়ি
ফেরী করেছে ইচ্ছাশক্তি
নেশার বদলে
রাতারাতি বদলে যাবে কপাল
অস্মভব এক স্বপ্ন নিয়ে
ঘুমিয়েছিলো রাত্রি
শর্ত ছিলো
কড়া
সত্যকে দিতে হবে ফাঁসী
নয়তো দ্বীপান্তর বাকী জীবন
শর্ত মেনে
সত্যের ফাঁসী হলে
স্বপ্ন গেলো লুট হয়ে
বেঁচে রইলো গোঙানি

প্রতারনার বেড়াজালে বসে
পাঁড় মাতালের

খেলা

আমি যখন এলাম
তুমি তখন ছিলেনা
এমনই হয়
আমি যখন তোমাকে পেতে চাই
তুমি তখন আমাকে পেতে চাওনা
 আমি যখন তোমাকে ভালবাসি
তখন তুমি ভালবাসাকে ইতিহাস ভেবে
ফেলে দাও ধূলোর নীচে
আমি যখন অপেক্ষা করি
তুমি তখন শুরু করো ভ্রমন
অজানার দেশে
অনন্তকাল ধরে
আমার বুকের মাঝে অদৃশ্য কাঁটাতারের
দেয়াল রেখে

ফিরে আসা

তখন সময়ই ছিলো এমন। ইসলাম "শান্তি" র ধর্ম। এই প্রচলিত বিশ্বাসের ভীতে আঘাত করার জন্য সারা বিশ্বে আরও একবার সংঘবদ্ধ আয়োজন চলছিল। ৯/১১ এর পর পর । ইসলাম শান্তির ধর্ম হোক বা সন্ত্রাসের - নাম বদলের পালা চলছিলো অন্য কারনে। যারা এই নাম বদলের আয়োজনে বিশ্বের লক্ষ কোটি ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী মানুষকে হয়রানি, ল্যঞ্ছনা, হত্যা করছিলো তারা আরও একটি জিনিষের পরিবর্তন করছিলো তা হলো সাম্রাজ্যবাদীদের প্রতি সাধারন মানুষের দৃষ্টিভংগী।

দেশে দেশে শুধু এনজিও পাঠিয়ে কাজ হয়নি। ইসলামে বিস্বাসী মানুষের সংখ্যা অনেক বেশী। সারা বিশ্বে এদের ব্যাপক হয়রানীতে অতিষ্ট হয়ে একসময় ঘরে ঘরে মুক্তিযোদ্ধা তৈরি হবার উপক্রম হয়। ইসলাম জেহাদ ঘোষনা করে। সারা বিশ্বের মুসলমান সেদিন যা বুঝতে পেরেও অসহায় অবস্থায় দিন কাটিয়েছে তা হলো ঃ ইসলামকে ফাঁদে ফেলা হয়েছে। যারা ইসলামে বিশ্বাসী তাদেরকে এক ধরনের ঘৃন্য আর অমানবিক ফাঁদের আটকে ফেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে খাঁচার চার পাশে। যদি বাচতেঁ হয় তাহলে এই আগুন পেরুতে হবে । যারা লাফ দিতে না জানে তা এই আগুনে পুড়ে মরবে ।

পশ্চিমা দেশগুলোর সাধারন মানুষের ইসলাম সম্পর্কে তেমন ধারনা না থাকার ফলে মিডিয়াগুলোর ইসলাম বিরোধী কথাবার্তা সবাই এক বাক্যে গ্রহন করে। আর ৯/১১ এ আনুমানিক পাঁচ হাজার মানুষের মৃত্যুকে প্রচার মাধ্যমগুলো এমন ভাবসাব করে যেনো এই ৯/১১ এর কারনে যুক্তরাষ্টের সব নাগরিকের জীবন বিপন্ন হয়ে গ্যাছে । অথচ ৯/১১ ছিলো একটা সাজানো ঘটনা। এটা পেন্টাগনের দ্বারা ঘটানো সাজানো ধবংস।

[চলবে ]

তখন থেকে

আসলে আমি এখানে
শুধু দৌড়ায় সময়ের পিছু পিছু
এইসব জেনেও
যে সময় আমাকে সময় দেবেনা
একটুও
সময় করে কাছে বসবেনা
সময় করে চোখে চোখ রাখবেনা
সময় করে হাত ধরে বলবেনা
তুমি কেনো এ্যাত চিন্তা করো
সময় হলেই সব ঠিক হয়ে যাবে
কারন সময় নিজেই প্রতারক
নিজেই লাফায়
ঘেও কুকুরের মত
নিজেই থেমে থাকতে পারেনা একদন্ড
আমি শুধু ঝাঁপসা চোখে
দূর থেকে চেয়ে থাকি
সময়ের পানে
আসলে আমি বুঝিইনি
কতটুকু সময় ছিলো
সময়কে জানবার
দম বন্ধ করে ডুবে ছিলাম পানির নীচে
আমার মৃত্যু ঘটেছে সেখানেই
পানি তেমন গভীর ছিলোনা
তবে পানির ভেতরে ছায়া ছিলো
হায়েনার
ঘিরে দাড়িয়েছিলো পানির চারিপাশে
উপরে উঠলেই ছিড়ে খাবে
এক সময় আমার লাশ ভেসে উঠলে
শবদেহে জমা রক্ত
হীম শীতল
হায়েনারা হতাশ হয়ে গেলো চলে
অন্য শিকারের খোঁজে

Tuesday, May 8, 2012

এখন উৎসবে ব্যস্ত সবাই

নিখোঁজ মানুষের লাশ ভাসছে কাগজের মত
এ্যাত জনবহুল শহরে
কেউ শোনেনি কারুকে হত্যা করতে
কেউ দ্যাখেনি কারুকে লাশ ভাসাতে
সবাই ব্যস্ত যার যার উৎসবে
গলা পচা লাশে উৎসব করে
পচা পানিতে
সবাই মত্ত উৎসবে

১৯৭২-৭৪ সালে এইরকম লাশ ভাসতো
সেই সময়ও সবাই ব্যস্ত ছিলো উৎসবে
তাই কেউ লেখেনি সেই ইতিহাস
এখনও এইসব লাশেগুলো কাগজ শুধু
কেউ জানতে চায়না
এদের লাশ হয়ে যাবার কারন
যারা এদের হত্যা করেছে
তারা আল সামস ছিলো কিনা আল বদর
সবাই উৎসবে মত্ত

লাশগুলোকে পালটে দেখলে
হয়তো দেখা যাবে
এদের একজন ইলিয়াস আলী
বা শেখ মুজিব
বা শেখ হাসিনার ছেলে জয়

এক দিন প্রতি ঘর থেকে কেউ না কেউ
এইভাবে কাগজের মত
লাশ হয়ে ভাসবে
তখন ইতিহাস লেখা হবে

Sunday, May 6, 2012

জনম জনম ধরে

[প্রথম প্রকাশঃ দৈনিক ইত্তেফাক ঃ ঢাকা ঃ মঙ্গলবার, ৮ই শ্রাবন, ১৩৯৭]

গত পরশুদিন খুব বৃষ্টি হয়েছিলো। একেবারে রাস্তাঘাটে পানি আর পানি। হাঁটু পানি জমে ছিলো বাজারের ভেতর, বাইরে বেরুবার পথে রেললাইনের নীচে সবখানে । পিচ্চি কুলিগুলো লুঙ্গির কোন বগলে নিয়ে মাথায় ঝুরিভর্তি তরিতরকারি,  চাল, ডাল বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল পানি ভেঙ্গে।  আজ আর তেমন বৃষ্টি হয়নি । রেললাইনের নীচে ময়লাভরা ড্রেনগুলোতে লম্বা নখের মত কয়েকটা  পোকা একখানে জমে বজবজ করছে। যেখানে সেখানে অন্য দিনের চেয়ে বেশী পানি জমে আছে।  মাটিও ভিজে ভিজে। দেখলে মনে হয় গতকাল বৃষ্টি হয়েছিলো। তবে বৃষ্টি না হলেও মেঘলা ছিলো সারাটা দিন। গুমোট ভাব। রোদের মুখ দেখা যায়নি। আজ এখন এই বেলা দুইটা অবধি রোদের মুখ দেখা না গেলেও আকাশটা পরিচ্ছন্ন। গতকালের মতো মেঘলা নয়। মনে হচ্ছে আজ বিকেলে সেস রোদের ঝলক দেখা গেলেও যেতে পারে। নরম মাটিতে পিঁপড়েরা ঢিবি বানিয়েছে উঁচু উঁচু । কামরাঙ্গা গাছের ভেঙ্গে যাওয়া একটা ডাল গাছটার সাথে এখনও একটুখানি লেগে আছে । দোল খায় বাতাসে। মনে হয় এক্ষুনি নীচে পড়বে। অথচ পড়েনা। নিমগাছে ময়নারা এসে হুল্লোড় করে। নরম মাটি থেকে কেঁচো টেনে টেনে খেয়েছে তাই।  নিমগাছের নীচে বাধা ছাগল ভ্যা ভ্যা করে ডাকে। মাথায় নিমফল পড়ে টুপটাপ। চুপ করে কিছুক্ষন। কান ঝটপট করে। মুখ ঘুড়িয়ে ল্যাজের নীচেটা চুলকে নেয়, হাটুগুলো ভাল করে চেটে চেটে পরিস্কার করে নেয় তারপর আবার ভ্যা ভ্যা ডাক ছাড়ে। অপরিচিত জাগাতে এলে ছাগলরা স্বজন হারাবার ব্যাথা প্রকাশ করে এভাবেই ঘন ঘন ডাক ছেড়ে। যদি ডাকে সাড়া দেয় কেউ তাহলে বুঝবে যে পরিচিত ছাগলের বা পরিবেশের কাছাকাছি আছে।

আজ প্রায় দেড় বছর পরে শওকতের সাথে কথা হলো আলেয়ার । যোজন যোজন দূর থেকে কথা বলছিলো শওকত অথচ মনে হচ্ছিল পাশে বসে কথা বলছে। কিন্তু শওকতকে মনে হচ্ছিল যেন অন্য মানুষ। কঠিন কোন পাথরের মূর্তির মুখ থেকে শব্দ বেরুচ্ছে একটা একটা করে। আলেয়ার ভাল মন্দ কিছুই জানতে চায়নি শওকত । শধু বললো - আলেয়া, তোমার জন্য আমার আর কিছুই করার নেই। তুমি নিজের পথ বেছে নাও।

এ কথা উত্তরে কি বলবে আলেয়া ভেবে পায়না। গত দেড় বছর ধরে সে শওকতকে খুজেছে।  আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সবাই বলেছে তারা জানেনা শওকতের ঠিকানা। কেঁউ কিছু বলতে পারেনা।  তবু আলেয়া হার ছাড়েনি। শওকত তাঁকে একেবারেই ভুলে গেছে। অনেক দিন হয়ে গেছে কোন খোঁজ-খবর করেনি।  তবু আলেয়া খুজেছে শওকতকে। কোথাও না পেয়ে অকস্মাৎ একদিন ফিল্মী কায়দায় শওকতের খোঁজ পেয়ে গেলো সে । শহরে এসে আলেয়া যেখানে থাকে সেখানে তার আপন কেউ নেই। আছে এক পাতানো খালা। এই খালা তাঁদের গ্রামেরই মানুষ। খালু মারা গেছেন অনেকদিন হয়ে গেছে।  ছেলে-মেয়ে-বুউ-নাতি ভরা সংসারে অনেক মানুষের আসা যাওয়া। আলেয়া গ্রাম থেকে এসে এখানেই উঠে। থাকে-খায় কেউ কোন প্রশ্ন করেনা। এক গায়ের মেয়ে খালা আদোর করে আলো বলে ডাকেন। খালার ছেলে বউরা বাচ্চাদের আলেয়ার কাছে রেখে এখানে ওখানে বেড়াতে যায়। খালার অনেক বড় বাড়ী, অনেক মানুষ, অনেক ঘর। এখানে থাকতে থাকতে আলেয়া সংসারের একজন সদস্যের মত হয়ে গেছে।  খালার বাসার নীচের তলাটা অনেকদিন খালি ছিলো।  বন্যার সময় যখন পানি এসে নীচের তলাটা ভরে যায় তখন ভাড়াটেরা চলে যায়।  তারপর বেশ ক'দিন ঘরগুলো স্যাতস্যাতে ছিলো। প্রায় মাস ছ'য়েক খালি থাকার পর ভাড়াটে এলো। আলেয়া গেল তাদের সাথে আলাপ করতে। আলাপ করতে করতে এক সময় শওকতের প্রসঙ্গ এলো। বয়সী এক মহিলা তার দুই ছেলে নিয়ে থাকে । মহিলা আলেয়াকে দেখেই প্রথম প্রশ্ন করে - তোমার বিয়ে হয়নি? আলেয়া মিথ্যা বলতে পারেনা। বললো - হয়েছে।

- জামাই কি করে?
- কি করে তা তো ঠিক জানিনা।
- সেকি কথা! তোমার স্বামী কি করে তুমি জানোনা ?
- কেমন করে জানবো, কাছে যে থাকেনা ।
- তোমাকে ছেড়ে দিয়েছে ?
- না, তাও দেয়নি।
- ছেড়েও দেয়নি আবার খোঁজ-খবর নেয় না এ আবার কেমন কথা !

ভদ্রমহিলা চোখ বড় করে। আলেয়ার হাতের উপরে সান্তনার হাত রাখে। বলে - বাড়ী কোথায় তোমার ?
-নড়াইল।
- আর জামাইয়ের বাড়ী?
- ফরিদপুর
- ফরিদপুর কোথায় ?
- রাজবাড়ি।
- কোন বাড়ির ছেলে?
- চৌধুরীর বাড়ির সেজ ছেলে শওকত। আপনি চেনেন খালাম্মা ?

- চিনি বৈকি। সে তো আমার ছেলেদের বন্ধু। এদের দাদূর বাড়ী তো ওখানেই ।

আলেয়া উত্তেজিত হয়ে উঠে। চোখের নীচের গভীর কালো রেখা শির শির করে । চোখ জ্বলা করে। ঠোঁট কাঁপতে থাকে। ভদ্র মহিলা আলেয়ার পিঠে হাত রাখেন। তারপর কিছুটা সময় চুপচাপ তিনি আলেয়ার উত্তেজিত চোখ, ঠোট প্রত্যক্ষ করেন। তারপর ধীরে ধীরে তিনি যা বলেন তার সারমর্ম হলো - শওকত প্রায় বছর খানেক আগেই দেশ ছেড়ে চলে গেছে। বিদেশের কোন দেশে থাকে তা তার ছেলেরা বলতে পারবে। সেখানে সে স্থায়ীভাবে বসবাস করে। তার ঠিকানা টেলিফোন নম্বর সব কিছুই ছেলেদের কাছে আছে। ওরা ঘরে ফিরলে সে নিয়ে রাখবে আলেয়ার জন্য ।

নড়াইলের যে গ্রামে আলেয়া থাকতো সেখানে একটা নদী ছিলো । খুব শান্ত নদী। কোন স্রোত নেই। জোয়ার-ভাটা কিছু নেই। যেমন শৈশবে ছিলো তেমতি কৈশরে দেখেছে তাকে । যৌবনে এসে মনে হতো এটা নদী নয় নদীর ফসিল। ফসিল দেখলে যেমন বোঝা যায় এটা কার ফসিল, মানুষ না জানোয়ারের; আর যদি জানোয়ারের ফসিল হয় তাহলে বোঝে যায় কোন জানোয়ারের; বাঘ, ভাল্লুক, কুকুর নাকি প্রাগৈতিহাসিক কোন জীবের। তেমনি সেই নদীটা দেখলে বোঝা যায় বহুদিন আগে সে স্রোতস্বিনী ছিলো । এখন মৃত। ফসিল । সেই নদীর ফসিলের পাঁড় দিয়ে আলেয়া স্কুলে যেতো । নদীর পাড়, আখের ক্ষেত, সরষের ক্ষেত, ডাল নয়তো আলু বোনা মাঠের পাশে আলের ওপর দিয়ে স্কুলে যেতো তারা । তাঁদের স্কুলটা ছিলো বাঁশের তৈরি বেড়া দিয়ে ঘেরা আর চালটা ছিলো টিনের। সূর্য মাঝ আকাশে এসে বসলে স্কুলে টেকা যেতোনা গরমে। ঘামের সোঁদা গন্ধ শরীরে শুকিয়ে গেলে স্কুল ছুটি হতো । স্কুলে আলেয়ার একটা বন্ধু ছিলো সাকেরা।

সাকেরা খুব কালো ছিলো । সাদাটে ঠোঁট আর বড় বড় চোখ ছিলো সাকেরার। খুব ভাল মেয়ে ছিলো সে। মাঝে মাঝে নিজের রংরের জন্য দুঃখ করতো । আলেয়া সান্তনা দিয়ে বলতো - তোর বাপের অনেক টাকা আছে। দেখিস তোর বাপ তোর জন্য ঠিকই একটা ছেলে কিনে ফেলবে। কথাটা সাকেরাকে তেমন সান্তনা দেয়নি। শুনে সে গম্ভীর হয়ে ডাগর চোখে অন্যমনস্ক হয়েছিলো শুধু। ঘরে সৎ মা আছেন। তিনটা বোন আছে সেই মায়ের ঘরে। সৎ মা বাবাকে সাকেরার জন্য টাকা খরচ করতে দেবেননা। শওকত ছিলো সাকেরার লজিং মাস্টার।


[চলবে ]

Saturday, May 5, 2012

শবের ডায়েরী

গভীর ঘুমে মনে হলো
কতগুলো ইঁদুর অন্ধকারে
মিটিং করছে ফিসফিসিয়ে
টেবিলটার নীচে

- আজ এই ঘরে কোন রান্না হয়নি
- এমনকি কোটাবাছাও নয়
- কাল যেমন দেখেছিলাম আজও তেমনি
অনড় থালাবাসনগুলো

দরোজাতে শব্দ পেলাম
কারা যেনো খাটিয়া নিয়ে এলো
খুব পরিচিত স্বর
আমার নিজের
গভীর ঘুমে মনে হলো
কারা যেনো আমাকে নিয়ে যাচ্ছে কাঁধে করে
গভীর ঘুমে মনে হলো
পানির স্পর্শ
দাঁড়িয়ে আছি ঝর্নার নীচে
লোবানের সুগন্ধ
আমার সবচেয়ে প্রিয়
গভীর ঘুমে মনে হলো
সুন্দর ধুষোর সন্ধ্যাতে
এক নদীর কিনারে আমার শবদেহ
স্থাপিত করা হলো
সোঁদা মাটির ঘরে
গভীর ঘুমে মনে হলো
আমার যাত্রা হলো শুরু
সম্পুর্ন এক নতুন জগতে

       

      মাঝ পথে

      চোখে স্বপ্ন নাই
      শান্তিতে বিশ্বাস করি
      ভুয়া আশ্বাসে আস্থা নাই
      কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে
      অনায়াসে কেটে যায়
      কারু কারু জীবন
      কঠোর পরিশ্রম করেও
      সেই পথে আর হয়না
      হাটা পাহাড় কাটা শেষে

      চেষ্টা স্বপ্ন নয়
      অর্জিত অধিকার
      ইচ্ছা হলেও ছিলে ফেলিনা
      আবরন বুকের খাচা থেকে
      ভয়ে ভয়ে ঢেকে রাখি
      কেউ যদি দেখে ফ্যালে
      বুঝে যাবে
      বুকের ভেতরে কিছু নেই
      শূন্য গহ্বর

      কোনকিছু না জেনেই

      হাত ধরলে
      তুমি স্পর্শ পেলেনা
      তোমার হাত অবশ
      হৃদয় ছুলে
      তুমি স্পর্শ পেলেনা
      তোমার হৃদয় নিখোঁজ
      তুমি ভেসে ভেসে আছো
      কিছু খড়কুটোতে

      কেনো বেঁচে আছো
      সে কারন না জেনেই

      ধুলোকাঁদা

      তুমি তো এমনটিই চেয়েছিলে
      বাদশা আকবর হতে
      আমি তোমার বাঁদি
      দেখো কেউ যেন না জেনে ফ্যালে
      কথাটা রেখো নিজেদের ভেতর
      দেওয়ালেরও কান আছে
      তুমি তো এমনটিই চেয়েছিলে
      ফাঁকা পাতিলের আওয়াজ বেশী
      চুপি চুপি ঢেকে রেখে
       কঙ্কাল নীচে
      হাত ধরেছিলে শুধু শেকল পড়াবে
      লুকিয়ে সোনার কাঁকনে
      আমার কান্না উবে যাবে মাটি না ছুঁয়ে
      আমার গোঙ্গানী নিস্তব্ধ হয়ে যাবে
      দেওয়ালে না ধাক্কা লেগেই
      তুমি তো এমন চেয়েছিলে
      মেরুদ্বন্ডবিহীন স্পিরিং এর তোতাপাখি
      গলার ভেতরে গামছা গুজে দিতে
      গুম করে দেবে সব শব্দ
      কবিতা বা গান
      মান অভিমান
      তুমি তো শুধু পেটের ক্ষুধা মেটাতে চেয়েছিলে
      তুমি তো শুধু দেহের ক্ষুধা মেটাতে ছোট ছোট
      পথ হেটেছিলে উদোম গায়ে
      তুমি তো এমনটিই চেয়েছিলে
      বাদশা আকবর হতে

      সন্ধিক্ষন

      এইতো স্বপ্ন পূরণ হলো
      চামড়া জড়ো জড়ো
      এখন সেই কাঁচা মরিচের মত
      মসৃনতা গত
      ইতিহাসের পাতাতে মরিচিকা
      ধুলো ধুসোরিত বেদনা জমা
      মগজের ভেতরে
      স্পৃহা ঝিমিয়ে যায়
      এইতো স্বপ্ন ছিলো
      পূরণ হলো
      হাতে হাত রাখলাম অবশ
      শান্ত ছিলো
      নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের উঠানামা
      অবয়ব
      এখানেই সব পথ শেষ হয়ে যায়
      প্রত্যাশার যবনিকা টানি
      চামরা জড়ো জড়ো
      ধনেখালি শাড়ীর পাড়ে
      মরে আছে তেলেপোকা
      স্যাতস্যাতে মেঝেতে পানের বাঁটা
      শুখিয়ে গেছে খয়েরের দাগ
      কালো কালো দাঁতের কোনে
      এইতো স্বপ্ন পূরণ হলো
      চামরা জড়ো জড়ো

      মরিচিকা

      বললাম এই হাতে হাত রাখো
      তুমি সিলিকন তুলে নিলে
      চকচকে জিনিষে মরচে ধরে তারাতারি
      বললাম সোনা পাওয়া গেছে কাদামাটিতে
      তবু সেই রাতভর জীবন ঘষে তুমি
      দেহ মাটি করলে
      না সোনা পেলে না মাটি
      ঝুলে রইলে অনন্তকাল শূন্যে
      কে জানে কোন আশা করে

      কৌশল



      মগজের ঘিলু ভর্তা
      মেশিনের কারসাজি যত
      চারিপাশে দেখি
      পিছলে থাকা কঙ্কাল
      মেশিনে তেল ঢালো যত
      পিছলে যাবে মগজের ছিটা তত
      উঠিয়ে নিও সময় পেলে
      অমৃত সুধা
      আইনের ধুলো ঝেড়ে মুছে দিলে
      সব কিছু দেখা যাবে সাফ সাফ
      ভুল করোনা এইভাবে
      শুধু মুখোশ বদলে দাও
      চটচটে কালো টিনের নীচে
      রোদ ঠিকরে দেখো
      পিছলে যাবে চন্দ্র সূর্য সব কিছু

      কাকে ভালোবাসো ?

      আর কাকে কাকে ভালবাসো তুমি?
      গোয়ালের সামনে বাধা দুধেল গাভী
      হৃষ্টপুষ্ট বাছুর
      তোমার পেট আর
      পেটের নীচের ক্ষুধা ??
      এছাড়া আর কাকে কাকে ভালবাসো তুমি?
      এক গরু জন্ম নিতে লাগে
      উনিশ উনিশ বছর
      জবাই করে ফেলো
      সওয়াব হবে
      দুধ দেওয়া বন্ধ হলে
      আর কাকে কাকে ভালবাসো তুমি?
      এক খাদক থেকে জন্ম নিলো
      অনেক খাদকের
      ছিটকে সরে গেলো
      আদলে মিশাল দেখে
      কালোবাজারে ভালো ব্যবসা জমেছে আবেগের
      লাইনে দাঁড়িয়ে আছে সব
      রেশনে কিনবে ভালবাসা
      কি এক ফ্যাসাদ
      রাতদিন অনটন লেগেছে ভালবাসার
      পেট আর পেটের নীচ থেকে অবসর নেই তার

      অস্তিত্ব

      হেটেছি অনেক দিন
      এই পথে
      তুমি বলো অন্ধকার
      সেই পথে
      ভাল করে দ্যাখো
      কালশিটে
      হাটুতে হেটেছি
      সেই পথে
      আজ যেখানে তুমি
      আছো মুখ থুবড়ে
      ভাল করে দ্যাখো
      আমিও আছি
      ছিলাম
      থাকবো চিরদিন
      ভুলে
      ফেলে এসেছি প্রান
      শুধু শরীর এনেছি
      সাথে করে

      মুঠিতে সূর্য

      তুমি চাইলেই পারবে
      সব অপরাধ লুকিয়ে রাখতে
      তুমি চাইলেই পারবে
      রক্তে সাঁতার কাটতে
      তুমি চাইলেই পারবে
      ধুলো দিতে সবার চোখে
      চাইলেই পারবে
      সবার ধর থেকে মাথা আলাদা করতে
      শুধু চেয়ে দ্যাখো
      ইশ্বর এসে যাবে
      তোমার মুঠিতে  


      চোখ বন্ধ করে হাটছিলাম
      তাই হোচট খেলাম
      চোখ খুলে হেঁটে হোচট খেয়ে
      কপালের দোষ দিয়েছি

      সহজ আর সাদামাটা
      অপবাদ দেওয়া সহজ
      সহজ মানুষগুলোকে
      প্রতারনা করাও সহজ

      জটিল লোকেরা তাই
      সহজ সহজ
      ধোঁকা দেয় সহজেই

      স্পর্ধা



      মাঝে মাঝে এমন হয়
      মনে হয় পায়ের নীচে মাটি নেই
      অথচ মাটির উপরে দাঁড়িয়ে আছি
      মাঝে মাঝে শুন্যে ভাসি
      মাঝে মাঝে বুকের ভেতরে
      মনে হয় ইস্কুলের ছুটির ঘন্টা বাজে
      মৃত্যুর অনেক কাছাকাছি এসে
      ছুটে যায় ট্রেন
      চেয়ে দেখি সন্তানের লাশ
      হাতের উপরে ফেলে রেখে
      চলে গেছে কারা যেনো
      যাকে জন্ম দিয়েছিলাম
      তাকে হত্যা করার অধিকার একজন মায়ের নেই
      তবে সেই অধিকার ওরা কোথা থেকে পেলো ?

      নারী নির্যাতন - শুরু করিলাম সৃষ্টিকর্তার নামে

      নির্যাতন অনেক প্রকারের হতে পারে। আর নারী ও পূরুষ দুই লিঙ্গের উপরই নির্যাতন হতে পারে। এখানে মূল চাবিকাঠী হলো ক্ষমতায়ন। নারী হোক আর পুরুষ কোন কারনে কেউ যদি কারু উপর ক্ষমতায়ন করতে পারে তাহলে সে তাকে নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করবে আর না করতে পারলেই নির্যাতন করবে। এই নির্যাতনচক্রের প্রথম ধাপ হলো দুর্বলতা খুজে বের করা, দ্বিতীয় ধাপ হলো স্বার্থ আদায় (বর্তমানের জন্য বা ভবিষ্যতে জন্য), তৃতীয় ধাপ হলো ক্ষমতায়ন, চতুর্থ ধাপ হলো নির্যাতন আর পঞ্চম ধাপ হলো মেরুদ্বন্ডে ভাঙ্গন সৃষ্টি করা যাতে এই মানুষ আর কোনদিন সোজা হয়ে দাঁড়াতে না পারে, মানসিকভাবে নির্যাতনকারীর উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে আর চক্রের শেষ ধাপ হলো মানসিক মৃত্যু।


      সমাজে পুরুষকে সচারচর নারীর উপর নির্যাতন করতে দেখা যায় । এর অনেক কারন আছে। অন্যতম হলো পুরূষের মানসিক শক্তি নারীর চেয়ে দুর্বল - সেটা টের পেলে পুরুষ নিজের অজান্তে ভয় পায় এই ভেবে যে এই নারীর মানসিক শক্তি বা বল এই পুরুষকে ভবিষ্যতে নিয়ন্ত্রন করতে উদোগী হতে পারে। পুরুষ এই নারীকে হারাবার ভয় পায়। কারন পুরুষ এই নারীকে কোন এক কারনে নিজের সম্পত্তি হিসাবে গ্রহন, ব্যবহার, আর মনের ভেতর প্রতিষ্ঠা করেছে - এইসব কিছু হারিয়ে যাবে যদি নারী তার ভেতরে সুপ্ত মানসিক বল বা ক্ষমতার ঠিক ঠিক প্রয়োগ করে। সেই কারনে পুরুষকে দেখা যায় নারীর উপর অত্যাচার করতে।

      নির্যাতন দুই ধরনের হতে পারে ঃ শারিরীক আর মানসিক।

      প্রেমের ক্ষেত্রে এটা বেশী দেখা যায়। পুরুষ ঘোষনা দেয় – “আমি তোমাকে ভালবাসি”। তোমার সবকিছুই সুন্দর কিন্তু কিছু কিছু জিনিষ আমি পছন্দ করিনা। “আমি তোমাকে ভালবাসি” বলে পুরুষ নারীকে বায়না করে বা এডভান্স বুকিং দেয়। আটক করে জালে।
      আর তারপর এই "ভালবাসা" কে পুরাপুরিভাবে নিয়ন্ত্রনে আনার জন্য বা নারীকে দূর্বল করার পূর্বশর্ত হিসাবে পুরুষ তার মন গড়া এক ফর্দ প্রস্তুত করে । সেই ফর্দের সর্বাগ্রে থাকে -- পুরষকে পুরুষ হবার কারনে খুলে রাখতে হবে - বাঁধা যাবেনা । পুরুষ
      অনেক নারীকে সম্ভোগ করতে পারে, যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে, পুরুষের নিজের শারীরিক আর মানষিক পরিতৃপ্তির জন্য সে যাই করুক না কেন - এই ভালাবাসার নারীটি তাতে কোন বাধ সাধতে পারবে না --- এই হলো ভালবাসার পূর্ব শর্তের ফর্দের হেড লাইন।


      আর বিয়ে করলে তো পুরা অধিকার – যখন যেভাবে খুশী নিয়ন্ত্রন করতে পারবে আর না করতে পারলেই নির্যাতন। শারিরীক বা মানসিক যখন যেটা সম্ভব। আর সন্তানের মা হয়ে গেলে তো অনেক দুর্বল হয়ে যায় নারী – সন্তানের প্রতি ভালবাসা আর স্বামী
      সন্তানকে যাতে না হারাতে হয় সেই জন্য মুখ বুজে সব সহ্য করা।


      আরও আছে অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ব্যাপার। অনেক ছেলেরাই বেকার। আজ ঘর ছাড়লে কোথায় যাবো, কোথায় থাকবো, কি করবো। যদি মাবাবা না থাকে তাহলে তো ফাঁদ আরো শক্ত হয়ে যায় । পালাবার পথ নেই।


      আরও আছে মনের দুর্বলতা। ভালবাসি স্বামীকে। এত ভালবাসি তবু মন পায়না। এত ভালবাসি তবু খারাপ ব্যবহার করে। দেখো একই মানুষ ঘরে খারাপ ব্যবহার করে আর বাইরে অন্য মেয়েদের সাথে কত সুন্দর ব্যবহার করে। যদি এইসব মেয়েদের কাছে যেয়ে আমি আমার পিঠের শুকিয়ে যাওয়া নির্যাতনের দাগগুলো দেখায় যদি আমার মনের দগদগে ঘাগুলো যা কোনদিন শুখাবে না তা খুলে ধরি তাহলে এইসব মেয়েরা যারা আমার স্বামীকে একজন সাধু আর প্রেমময় পুরুষ হিসাবে জানে তারা আমাকে বিশ্বাস করবেনা। আমার স্বামী সব মেয়েদের সাথে মিথ্যা বলে না সবার সাথে প্রতারনা করেনা। অনেক মেয়েরাই তাকে একজন ভালবাসার দেবতা হিসাবে জানে। আসলে কি তা সত্য?


      সারা বিশ্বেই নারীরা নানাভাবে পুরুষ দ্বারা নির্যাতিতা হয়। তবে বিশ্বের অনেক দেশে আইনের দ্বারা এই নির্যাতন বন্ধ করার প্রচেস্টা আর প্রয়োগ আছে। নারীকে শারিরীকভাবে নির্যাতনের কারনে পুরুষের জেল হতে পারে । অনেক পুরুষ তাতে আরো
      হিংস্র হয়ে প্রতিশোধ নিয়েছে - এমন ঘটনাও আছে। বিশ্বের যেসব দেশে আইন আছে আর কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা আছে সেসব দেশে নারী নির্যাতনের হার যে কমেছে তা নয় কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে তালাক, নিরাপদে সরে যাওয়া, এড়িয়ে যাওয়া, গৃহ বদল, ঠীকানা
      না দেওয়া, দেশ ত্যাগ অনেকভাবে এই নির্যাতন এড়ানো যায়। এতে সমাজে অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে যেমন সন্তানদের বাবা সম্পর্কে ভাল ধারনা মানসিক বিকাশে কিছু দ্বন্দ্বের সৃষ্টি, একাকিত্ব, বিশ্বাসের মৃত্যু ইত্যাদি।

      নারী বা পুরুষ - বেঁচে থাকার জন্য মনোবলের প্রয়োজন সব দেশে সব খানে সব সময়। মনোবল বা মানসিক শক্তির উপর শারীরিক সুস্থ্যতা আর সুন্দর দীর্ঘ জীবন নির্ভ্রর করে। সব পুরুষ যে খারাপ বা সব নাড়ি যে নির্যাতিতা ঢালাওভাবে এটা ভাবার
      কোন কারন নেই। তবে নির্যাতনের উপস্থিতি আছে ঘরে, সংসারে, সমাজে, দেশে - এই সব নির্যাতনের ধারা, রুপ, রং, বর্ন, আকার, আয়তন, গন্ধ, ইশারা, কারনগুলোকে জানতে হবে। পরিহার করতে হবে। আর নিজের মনোবলকে সুদৃঢ, সুস্থ, সুন্দর আর সাবলীল রাখতে হবে জীবনে ভাল সিদ্ধান্ত নেবার জন্য। ভাল্ভাবে বাচার জন্য। জীবন খুব ছোট। যত দিন বাঁচি - শান্তিতে বাঁচবো - সুখে থাকবো।

      অন্যের কথা বলার আগে প্রথমে নিজের কথা বলা ভাল। আমি একজন নির্যাতিতা নারী। কথাট শুনে অনেক হাসি পাবে সবার । আপনি এত কথা বলেন আপনাকে কে নির্যাতন করবে? প্রশ্নটা তারা করবে যারা কোন কিছুকেই গভীরভাবে ভাবেনা কারন ভেবে তাদের কোন লাভ নেই তাই। আমি যদি নির্যাতিতা না হতাম তাহলে নির্যাতিতা হবার কারন জানতাম না। পুরুষের হীনমত্যতা জানতাম না। পুরুষ কখন প্রতারনা করে বা মিথ্যা বলে বুঝতাম না। পুরুষ কখন সাহায্যের হাত বাড়ায় জানতাম না। পুরুষ শুধু মাত্র নিজের প্রয়োজনেই নারীকে উদ্ধার করার জন্য হাত বাড়ায়। নারী পুরুষের সম্পর্ক ভালবাসার চাইতে একটি পার্টনারসীপ ব্যবসা হিসাবে দেখলে ভাল হবে। একটা লেনদেনের সম্পর্ক। পুরুষ সবার কাছ থেকে সব কিছু যখন পেতে চায় পার্টনারসীপে ফাটল ধরে। তখন এটা একটা কর্পোরেশন হয়ে যায়।

      পরকীয়া - প্রেম, প্রয়োজন নাকি স্বেচ্ছাচারিতা


      কোথাও কিছু নাই বিনা মেঘে বজ্রপাত হলো। একদিন বিবাহিত নারীপূরুষের একজন বা দুইজনই সিদ্ধান্ত নিলেন যে তারা বিবাহের বাইরে কারু সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলবেন। পরিকীয়া কি আসলে তাই? তাতো না।কোন কারনে যখন বিবাহিত নারীপুরুষ তাদের সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতি দৈহিক আকর্ষন বোধ করেনা তখন তারা বিবাহের বাইরে অন্য কারু সাথে দৈহিক সম্পর্ক করে। পরকীয়ার কারন গুলো নিম্নরুপঃ

      খাইজলত - খাইজলত বা বেহায়াপনা বা অবস্থার সুযোগ নেওয়া --পরকীয়ার একটি অন্যতম কারন। সুযোগ পেলেই লুঙ্গী উঠায় ফ্যালে। কাজের বেটি হোক আর অফিসের কর্মচারী হোক বা ছাত্রী হোক। কেউ এগিয়ে এলে "না" করিনা। কেউ এগিয়ে না এলেও মাঝে মাঝে টোকা দিয়ে দেখি যদি রাজী হয়ে যায় তাহলে তো করা যাবে। বোনাসে খাইলাম এই তো। আর না হলেও ক্ষতি নেই ঘরে তো বউ আছেই। এই খাইজলত মাঝে মাঝে জেদ হয়ে যায় মাঝে মাঝে অভ্যাস হয়ে যায়। চাকুরী হারাবার ভয়, প্রোমোশন পাবার লোভ, ভাল মার্কস পাবার ইচ্ছা, অথবা মানসিক দুর্বলতার কারনে এই পরকীয়া অনেক দিন পর্যন্ত চলতে পারে। মেয়ে যদি কোন কারনে বিবাহিত পুরুষের চেয়ে মানসিকভাবে দুর্বল হয় তাহলে সে এই পরকীয়ার কারনে পুরুষের স্ত্রীর প্রতি হিংসা বা এই পুরুষকে আপন করে পাবে না ভেবে মানসিক কস্টে ভুগতে পারে। মন ভেংগে যেতে পারে। আত্মহত্যা করতে পারে। যদি আত্মহত্যা না করে তবুও এই পুরুষ তার দেহ ভোগ করে হাসতে হাসতে ভালবাসার গল্প বলতে বলতে এক সময় ঠিকই বউয়ের কাছে চলে যাচ্ছে। পুরুষের আর তার বউয়ের জগতে সে একজন তৃতীয় ব্যক্তি। শরীর ছাড়া এই মেয়েকে এই পুরুষের আর কোন প্রয়োজন নেই। এই বোধ এক সময় এই মেয়েকে ধ্বংস করতে পারে। একইভাবে এই অনুভূতি ছেলেদেরও হতে পারে। যদি মেয়ে বিবাহিতা হয় আর পুরুষ কি অবিবাহিত।বিবাহ এখানে অমূলক বা গুরুত্বপূর্ন না। শরীর ভোগ করে স্বামী বা স্ত্রী কাছে চলে যাওয়া -- শূন্যতার সৃষ্টি করে। প্রতিযোগীতা, হিংসা ইত্যাদি সৃষ্টি করে ।

      প্রয়োজন - স্ত্রী বা স্বামীর অসুস্থতার কারনে দৈহিক চাহিদা মেটানোর কারনে পরকীয়া -- অনেকের স্ত্রীর নানা রকম রোগ ব্যধী বা সেক্স করতে আগ্রহী নন অগত্য মধুসূদন স্বামী বা স্ত্রী অন্য নারী বা পুরুষের সাথে গোপনে সম্পর্ক গড়ে তোলে। বিবাহিত জীবনে বাচ্চা কাচ্চা হবার পর স্বামী স্ত্রী মধ্যে এক ধরনের সাথে থাকার অভ্যাস গড়ে উঠে । তাই সুধুমাত্র দৈহিক চাহিদার কারনে সেই সম্পর্ককে নারী বা পুরুষ ছিন্ন করতে চাই না। এখানেই তারা স্পেয়ার কারুকে খুঁজে। অপেক্ষাকৃত দুর্বল কেউ। যাকে মানসিকভাবে ব্ল্যাকমেইল করা যাবে সহজেই যাতে সে তার পরিবারকে এই সম্পর্কে অবহিত না করতে পারে। এই ক্ষেত্রেও অপর পক্ষের মন ভেঙ্গে যেতে পারে একই ভাবে। তোমার বউ বা স্বামী অসুস্থ তো তুমি আমাকে বিয়ে কেন করোনা? তখন অপর পক্ষে বাচ্চাদের বা বয়সের বা সমাজের দোহায় দেয়। কাজ হলেই হলো। সামান্য সেক্স এর জন্য সাজানো সংসার ভাঙ্গা নিরর্থক। পরকীয়া চলতে থাকে। যে পার্টি সুধু ভোগের সামগ্রী হিসাবে আছে বিনিময়ে তেমন কিছু প্রাপ্তি ঘটছে না সেই পক্ষে ভেঙ্গে পরতে পারে।


      জরুরী অবস্থা  - অস্থায়ি ব্যবস্থা, সেক্স কেনার খরচ কমানোর জন্যেও অনেকে বিবাহিত নারী পুরুষের সাথে সম্পর্ক করে। দূরো আমার এখনো বিয়া করতে দেরী আছে। লেখাপড়া শেষ করে জজ বারিস্টার হলে তারপর দেখা যাবে। অথবা এই মহিলা বা পুরুষকে মাগনা ট্রাই করা যেতে পারে। যতদিন চলে চলুক মন্দ কি! বেশ্যা খরচ কমলো। বিয়ে করলে এখন অনেক ঝামেলা। সংগীনিকে বলে আমার মাবাবা আমার বিয়ে ঠিক করছেন। তারপর বিয়ে করবো। এখন আমরা একটু প্রেম করি। আমার বিয়ে হয়ে গেলে তুমি অন্য কারু সাথে পরকীয়া করো। আমার বিয়েতে তুমি অবশ্যেই আসবে, ইত্যাদি।

      পরকীয়া আর যাই হোক -- হঠাৎ হাওয়ায় ভেসে আসা সুর না। ।পরকীয়া হলো "আরে! আমি তো এমনই একটা সুযোগ খুজছিলাম। তোমার মত একজন যে বেকার দেহ নিয়ে বসে আছে তেমন একজনকে খুঁজছিলাম! তুমি তো বিয়ে করবে না! তাই না? আমি তো বিয়ে করতে পারবোনা । আমার বাচ্চা কাচ্চা আছে। আর আমি আমার বউকে অনেক ভালবাসি। আমার বউ সেক্স করতে তেমন পছন্দ করেনা। আর সেক্স তো কিনতেও পাওয়া যায়। সেক্স করার জন্য বউকে বা স্বামীকে তালাক দেওয়ার কোন মানে হয়না। তাহলে পরিকীয়া কি প্রেম?হতে পারে! ভালবাসাবিহীন প্রেম। এক অস্থায়ী সম্পর্ক। গন্তব্যহীন। কোথাও যাবার সময় বাসের জন্য বাস স্টপে বসে অপেক্ষা করার সময় পাশে বসা আরেক অপেক্ষারত যাত্রির সাথে আলাপ চারিতার মত। এরা কেউ কারু বাড়িতে যাবেনা। যার যার নিজের বাড়ীতে যাবে। কিন্তু একই বাসে চড়ে যাবে।পরকীয়ার সবচেয়ে খারাপ দিক হলো এই অস্থায়ী ভোগকারী বা ভোগকারীনিকে ভালবেসে ফেলা। আর এটা সম্ভব। হলে সেই মানুষ ইর্ষান্বিত হবে আর নিজের ক্ষতি নিজে করবে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন। বিবাহিত নারীপুরুষের সাথে অবিবাহিত নারীপুরষের পরকীয়া করা উচিৎ না। দুই দল যদি বিবাহিত বা বিবাহিতা হয় তাহলে এই মন ভেঙ্গে যাবা বা ইর্ষন্বিত হবার বা আত্মহত্যা করার ঝুকি কম থাকে।

      কারন যাই হোক। হৃদয় আর যোনাঙ্গ এক শরীরের দুই অঙ্গ । তাই যৌন চাহিদার সাথে মনের সম্পর্ক আছে। কারুকে যদি ভাল লাগে তাকে পেতে চাওয়া অপরাধ না। তবে সেই মানুষ যদি আইনত আরেকজনের সাথে বৈবাহিকসূত্রে আবদ্ধ থাকে তাহলে এই সম্পর্ক আত্মপ্রতারনা হয়ে যায়। কারন এই মানুষকে পেতে চাইলেও পাওয়া যায়না। সেখানেই সব সমস্যা শুরু হয়। তাই যৌন চাহিদা পুরনের জন্য পরকীয়া হলো নিছক প্রয়োজন -- প্রেম না। বিয়েই কি সব কিছু? না এবং হ্যাঁ । বিয়ে যদি এ্যতই ফ্যালনা হতো তাহলে তুমি এখনও বিবাহিত কেন? বউ বা স্বামীকে তালাক কেন দিচ্ছোনা? বিয়ে অবশ্যি ফ্যালনা না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন হলো বিয়ে। টাকা, বাড়ী, গাড়ি, ইত্যাদি তারপর অনেকে সন্তানের দোহায় দেয় সেটাও আরেক প্রতারনে। পরকীয়া করলে সন্তানের কোন ক্ষতি নাই বউরে বা স্বামীরে তালাক দিলেই যত ক্ষতি হবে!!

      পরকীয়া হলো দায়িত্বজ্ঞানহীনতা। দুই পক্ষই দায়িত্বজ্ঞানহীন। যে ভোগ করছে আর যে ভোগের সামগ্রি হিসাবে নিজেকে বিলাচ্ছে বিনিময়ে নেই মামার চেয়ে কানা মামা পাচ্ছে -- দোষ উভয়েরই। কারন পরকীয়া কেউ মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে করেনা। মানসিক ব্ল্যাকমেইল করে পরকীয়া করে। দুর্বলতার সুযোগে করে। সেই জন্য পরোকীয়ার জন্য কোন বহুজাতিক কোম্পানী নাই। কোন অফিস নাই। "এখানে পরকীয়া পাওয়া যায়" নামক কোন সাইনবোর্ড কোন দরজাতে লাগানো নাই। অথচ এই কর্মটি বিশ্বের সব জাগাতেই অহরহ হচ্ছে। সুবিধাবাধী লোকজনের গোপন অভিসার হলো পরকীয়া। পরকীয়া নোংরা। কোন গর্ব নাই। তাই লোকে লুকিয়ে করে যাতে বউ বা স্বামী না টের পায়। লুকিয়ে করে যাতে সমাজ টের না পায়। লুকিয়ে করে যাতে সন্তানরা টের না পাই। যদি গর্বে কিছু হলো তাহলে তো বিজ্ঞাপন আর ঘোষনা দিয়ে লোকে পরকীয়া করতো।

      পরকীয়া সহজেই যৌন রোগ ছড়াতে পারে । এইসব রোগের মধ্যে আছে সিফিলিস, গনোরিয়া, যৌনাঙ্গএ ক্যান্সার, HIV/AIDS । আমার এই নোট পড়ে যদি কারু কোন অমত থাকে এই ব্যাপারে তাহলে ধরে নিতে হবে সে পরকীয়াতে লিপ্ত। রোগ ছড়ায় এইজন্য যে কেউ জানেনা এক জন বহুচারী বা বহুচারীনির কতজন সঙ্গী বা সঃঙ্গীনি আছে আর তাদের কতজন আছে -- পুরা নেটঅয়ার্কে কাহারা কাহারা বাজার থেকেও ক্রয় করেন এই ভাবে জাল বিছানো আছে রোগের ।
      ১।  মনের ক্ষতি
      ২। শরীরের ক্ষতি
      ৩। বিবেকের কাছে অপরাধী হয়ে থাকা
      ৪। স্বামী বা স্ত্রী যদি জানতে পারে তাদের মন ভেঙ্গে যেতে পারে, বিশ্বাস হারাতে পারে, জীবন নস্ট হতে পারে।
      এক ঝামেলা মিটিয়ে আরেক ঝামেলা শুরু করাই শ্রেয়। [বানান ভুল হলে সারিয়া পড়িও। এডিট করার ধর্য্য নাই ]

      কর্মসূচী


      আফসোস কেন করিনা
      সেটায় সব থেকে বড় আফসোস
      করতাম যদি আফসোস
      এসে আমার দুঃখগুলো কাঁধে বয়ে নিতো
      দুঃখ করিনা
      সেটাই এক দুঃখের কারন
      করতাম যদি দুঃখরা
      এসে জলে ভরে দিতো শুকনো নদীগুলো
      ভালবাসিনা
      বার বার এসে গর্ত করে বুকের ভেতরে
      ঘর করে দুঃখ আর হাহুতাশ
      পঙ্গু করে ইচ্ছাগুলো
      অবশ করে শক্তিগুলো
      শূন্য করে সুন্দর চিত্রগুলো
      এইসব শব্দগুলোর অন্য অর্থ খুঁজি
      পাটাতনে শক্তি...

      ভুমি হরফে ধর্মের ভূমিকা

      নদীর পাড়ের এই দুইশত একর ভূমি দরকার
      আবাদ, কল কারখানা, ইস্কুল, কলেজ, সিনেগোগ
      পরবর্তী পুরুষদের নিশ্চিন্ত জীবনযাপন এর জন্য।

      ইশ্বর আমাকে স্বপ্নে দেখায়
      এই দুইশত একর ভূমি আমার।

      এই দুইশত একর ভূমিতে
      এখন সুখে দুখে দিন কেটে যায়
      মাঝে মাঝে ভেদ করা দায়
      কে হিঁদু কে ম্লেচ্ছ

      ধরতে হবে এক গরীবকে
      স্থাপনের কাজে
      গরুর মাথা মন্দিরে আর
      শুয়োরের মাথা মসজিদে

      জানোয়ারের মস্তক স্থাপন শেষে
      শুরু হলো লঙ্কাকান্ড
      কেউ মারা পড়লো
      কেউ এলাকা ছেড়ে চলে গেল
      কিছু ঘর কিছু হিঁদু কিছু ম্লেচ্ছো

      আগুনে ছায় হলো
      গরুর মাথা আর শুয়োরের মাথা
      আর কিছু বিদেশীকে এনে
      গড়ে উঠেছে আমার আবাস

      ইশ্বরের স্বপ্নভূমি
      ধর্মান্ধতা মানুষকে করে গৃহহারা
      স্বজনহারা – এক শহীদ মিনার গড়বো মোরা

      এই ভূমি হরফে খরচাপাতি নিম্নরুপঃ

      লেখক, কবি, সাহিত্যিকদের
      ধর্মের বিরুদ্ধে লেখার জন্য পদকে সোনার পানিতে যা কিছু খরচ গেছে
      পুরোহিত, মাওলানাদের কিছু হাত খরচ
      ফটোগ্রাফার আর সাংবাদিকদের কিছু পদোন্নতি

      রাজনীতিবিদদের জনপ্রিয় হবার জন্য কিছু আগুনের ফুলঝুরি

      ধর্মই দায়ী
      এই নির্মম হত্যাকান্ডের জন্য

      হিঁদু আর ম্লেচ্ছো এক হতে পারেনা কোনদিন
      ধর্মে লেখা আছে কাফিরকে হত্যা করো
      করেছে যারা তাঁরা যাবে যথাক্রমে
      স্বরগে আর বেহেস্তে

      এই ধর্মই সকল দোষের দোষী
      সিনেগোগ স্থাপনের মাধ্যমে
      আজ
      দুইশত একরে শান্তি প্রতিষ্টা করলাম

      ইশ্বরের স্বপ্নভূমিতে
      দুইশত একরের আদি মালিক
      আমার পূর্বপুরুষেরা স্বপ্নে ছিল
      এখানে তাদের বসবাস
      এখন উত্তর পুরুষে লিখবে ইতিহাস
      শান্তি প্রতিষ্টার জন্য
      আমাদের ত্যাগ, তিতিক্ষার পরিহাস



      রক্তচোষার বিবিধ কায়দা

      শব্দ নিয়ে কাঁদা ছোড়াছুড়ি
      যত আয়ূ কম হয়
      মূল্য তত বৃদ্ধি পায়
      যোগান কমে যাবে
      নামের পেছনে বাঁদর নাচ
      লাগ ভেল্কী লাগ
      কাদামাটি ছেনে
      দিগম্বর
      বীর পুরুষ আসেন উঠে
      পাছার দুর্গন্ধ মুছে
      আলসে হাই তুলে
      হাতে তুলে দেন
      বস্তাপচা কাব্যমালা
      নতুন খামে ভরে
      কি এক চুপচাপ
      নির্জীব জীবন সব
      মরা লাশের উপরে জমে
      থাকা রক্তে মশামাছির
      খেলাধুলা জমে শুধু
      রাতবিরেতে শেয়াল এলে
      মশারা শেয়ালের পিঠে
      জমে রক্ত চোষে

      গুম

      একেবারে শূন্য থেকে
      শুরু হয় সকাল সকাল
      মোড়কে ভরে ফেলি
      তাড়াহুড়া করে
      যা কিছু অসুন্দর
      কেউ যাতে না দ্যাখে
      লুকিয়ে রাখি যা কিছু
      অসম্ভব
      চিন্তা ভাবনা হাসি
      ভালবাসা
      স্মৃতি
      সামলে ফেলি
      দুঃখগুলো
      বেড়ুতে দিলেই করে ফ্যালে হট্টোগোল
      চোখে চোখে ঝুলে পড়ে
      আপেক্ষিক বিতর্ক
      স্ববিরোধী শব্দ
      সুটকেসে ভরে লুকিয়ে ফেলি
      গুম হয়ে যাওয়া লাশ
      খেলনার মতো
      উপুর করে রাখি
      ছিপি থেকে ছলকে মেছেতে পড়লে
      কৈ মাছের মত
      চলে যাবে তেরছা করে
      জলের নীচে
      চুপচাপ ফুলে থাকা শবদেহ
      ভেসে উঠে মাছের পিঠে

      বাংলাদেশে অপরাধের উৎসব

      অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার লোক কম তাই অন্যায় হতে থাকে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা না বলে অন্যায় করার নানা রকমের ফন্দিফিকির বের করলেই বোধহয় অনেক লাভ, ব্যক্তিগতভাবে। আমরা সবাই অস্তিত্বরক্ষার জন্যেই করি সব কিছু, যা কিছু করি। আমিও তাই করি। ভাবি - নিজেকে বাঁচিয়ে, নিরাপদে রাখলাম বহুকাল। অনেকেই নিরাপদে আছে মহা বিপদের মাঝেখানে। ভাবছি, কিভাবে এটা সম্ভব ? মহা বিপদের মাঝে মানুষ কিভাবে মহা নিরাপদ থাকে? টাকা মুখ বন্ধ করে রাখতে পারে।"সম্পদের শক্তি" হলো সকল "অন্যায়ে"র চালিকা শক্তি। 
      জনগনের কোন শক্তি নাই।

      ২০১২ সালে বাংলাদেশের গনতন্ত্রকে গুলি করা হয়েছে, উলংগ করে টেনে হেচড়ে ট্রাকে তোলা হচ্ছে

      এটা আমার ধারনা। আমার ধারনা ঠিক বা ভুল সে বিতর্কে যাবার দরকার নেই। দরকার নেই এই কারনে যে সবাই সেটাই করে, বা যা  করবে, বা যা করে, তা করে তাঁদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে সাহায্য করবে বলেই করে।

      স্বাধিনতা যুদ্ধ সম্পর্কে অনেক মানুষের অনেক ধারনা। গৎবাধা যে ইতিহাস আছে তা সত্য নহে। কারা এই যুদ্ধ করেছে ? আমি খুব মনোযোগ দিয়ে অধ্যাপক আনু মোহাম্মদের একটি বই পড়লাম । বইটির নাম "কোথায় যাচ্ছে বাংলাদেশ "কোথায় যাচ্ছে বাংলাদেশ ? বাংলাদেশ সেখানেই যাচ্ছে যেখানে বাংলাদেশের কতিপয় জনগন দ্বারা সংঘটিত অন্যায়গুলো বাংলাদেশকে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সাথে যাচ্ছে। আর এই অন্যায়গুলো কিভাবে রোধ হবে? কিভাবে রোধ হবে এই বিষয়ে চিন্তা করার কোন প্রশ্নই উঠেনা। রোধ না করে কি কি লাভ হচ্ছে। কার কার লাভ হচ্ছে এইটা যদি জানা যায় তাহলে এই নিয়ে চিন্তা করে কেনো কোন লাভ নেই বা কোন অন্যায়ের সুরাহা করার কথা কেউ কেনো ভাবেনা তা জানা যাবে। কোথায় যাচ্ছে বাংলাদেশ - এই বইটিতে অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ সুন্দর করে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের অনিশিচত যাত্রা বা ভ্রমন কাহিনী।

        বইটি পড়ার জন্য আমি সবাইকে অনুরোধ করবো । বইয়ে কি লেখা আছে তা নিয়ে আমি আলোচনা করবোনা বা এই বইয়ের কোন  কিছুই তুলে ধরবোনা। তাহলে পাঠকের আগ্রহ নস্ট হয়ে যাবে। আমার এই সাদামাটা নোটের উদ্দেশ্য ভিন্ন। তবে বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে সেই প্রসংগে মনে পড়লো - বাংলাদেশের এই অনিশ্চিত ভ্রমনের একটি খুব গুরুত্বপূর্ন সঙ্গি হলো "অন্যায় "।

      মানুষ অন্যায় কেনো করে ? মানুষের অন্যায় করার কারন অনেক জটিল - একটি রকেট সায়েন্স! প্রশ্ন করি নিজেকে - আমি মিথ্যা কেনো বলি ? সত্য জানালে আমার উদেশ্য ব্যহত হতে পারে। তাই একজন প্রতারককে যদি ঠিকভাবে জানা যায় তাহলে সারা বাংলাদেশের ঘরে ঘরে প্রতারকের কাছে যেয়ে তাদের কেমন চেহারা তা দেখা লাগেনা।   আজকে বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক চেহারা দেখলেই আন্দাজ করা যায় - কোথায় যাত্রা করেছে বাংলাদেশ । বাংলাদেশ আদৌ কোথাও যাচ্ছে কিনা। একবার এক ব্রিজের উপরে এক ট্রেন থেমে ছিলো বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারনে। নীচে, অনেক নীচে বনভূমি আর একটি খালের মতো স্রোতহীন নদী। ভাবছিলাম এই ট্রেন আর কোনদিন যদি না চলে। আমরা সবাই যুগ যুগ ধরে এখানে আটকে থাকবো ব্রীজের উপরে। বাংলাদেশ আটকে আছে । ঠিক সেইভাবে যেভাবে একটি পিন দিয়ে কাগজ আটকে রাখা হয় নোটিশবোর্ডে। ...। কালো শ্রমিক কৃতদাসেরা বিদ্রোহ করলে যেমন গলায় রশি বেঁধে শহর বা গ্রামের বা গঞ্জের মাঝখানে বা বাজারে বা জনবহুল এলাকাতে ঝুলিয়ে দেওয়া হতো সতর্ক করার জন্য - "বিদ্রোহ করার ফল কি হতে পারে " ... ভয় ধরিয়ে দেওয়া হতো মানুষের মনে।

      এই ভয় ধরিয়ে দেবার রীতিনীতি বদল হতে থাকলো যুগে যুগে।
      সেই একই কারনে । যে কারনে বাংলাদেশ চলেছে এক অনিশিচত গন্তব্যে । "অন্যায় " করতে পারার জন্য " ভয় ধরিয়ে দেওয়া" বা "ভীতি প্রদর্শন" করে মানুষের আবেগের মধ্যে এক চিরস্থায়ী বসত করা অতি আবশ্যক। ধর্ম । ধর্ম মানুষের মনে ভীতির এক ঘর করে দেয়। সেই ঘরে নানাভাবে নানাজনে নানা রকমের ভীতিকে সাজিয়ে রাখে দুর্লভ পাথরের মতো । মানুষের আবেগ নিয়ন্ত্রন করার জন্য "অন্যায় " এসে দেখে যায় কার মনের ঘরগুলো কি কি উপাদান দিয়ে তৈরি । অন্যায়ের জানার খুব দরকার এইসব ঘরে ভিতীকে যতদিন টিকিয়ে রাখা যাবে জুতসই করে অন্যায় তত দিন অবাধে অন্যায় করবে । সেই ঘরে চুপচাপ ভয়রা বসত করে । অদেখা শাস্তির ভয় আর অজানা পুরস্কারের লোভ।

       ধর্ম প্রসঙ্গ এলেই মানুষ খুব আবেগপ্রবন হয়ে যায়। এটা অন্যায়কারীদের ভিতী প্রদর্শনের সাফল্য। ধর্মকে আঘাত করিনা মনের ভেতরে সেই ভীতির মজবুত ঘরকে আঘাত করি। যা মানুষকে টেনে রাখে পেছনের দিকে। কথা বলতে দেয়না অন্যায়ের বিরুদ্ধে। সেই ভীতি। বিদ্রোহ করলে গঞ্জের মধ্যে গাছে ঝুলে থাকতে হবে। অথবা ঘর থেকে টেনে হেচড়ে টেনে নিয়ে যাবে স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, মাবাবার সামনে দিয়ে, প্রতিবেশীদের সামনে দিয়ে , কেউ কিছু বলবেনা, জবাই করা হবে অথবা হত্যা করা হবে পিটিয়ে অথবা কপালে গুলি করে লাশ বানিয়ে ফেলে রেখে চলে যাবে। আর প্রতিবেশীরা পালিয়ে যাবে ভয়ে। খুনিদের স্বদর্পে বুক ফুলিয়ে চলে যাবার জন্য খালি করে দেবে পথ। লুকিয়ে যাবে যার যার ঘরে যেয়ে। এটে দেবে দরোজা জানালা। তবু কেউ অন্যায়ের প্রতিবাদ করবেনা।

      এমনই এক অন্যায় হয়েছিলো ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ থেকে বাংলাদেশে আনুষ্টানিকভাবে স্বাধিতা ঘোষনা করার পর থেকেই এই অন্যায় শুরু হয়েছিলো যা এখনও চলছে । গনহত্যা। এই গনহত্যা বাংলাদেশেই হয়। এই গনহত্যা সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষের মতামত নানাভাবে বিভক্ত। কারনটা কি ? ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের গনহত্যা - কেউ কি অস্বিকার করতে পারে ?? পারেনা। তবে অনেকেই নানা রকমের যুক্তি দিয়ে এই গনহত্যার পক্ষে ও বিপক্ষে অনেক ধরনের বিভ্রান্তমূলক কথা বলে যার যার অবস্থানকে বা এই সময়ে যার যার ভুমিকাকে যুক্তিযুক্ত করার চেস্টা করে। গনহত্যার সময় বাংলাদেশে যারা বসবাস করছিলেন তারা ছাড়া আর কারু জানার কথা নয় সেই সময় দেশের কি রকম অবস্থা ছিলো। কোন আজগুবী লিঙ্ক, কোন আজগুবি ইতিহাসের ব্লগ, কোন লীগ বা দল বা নেতা বা নেত্রীর কোন কথা বা বক্তব্য কোন ভাবেই সেই নয় মাসের প্রতিদিনের ভয়াবহ চিত্র মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারবেনা । যারা দেশে থেকে পালিয়ে ভারতে যেয়ে আশ্রয় নিয়েছিলো তারাও অন্য এক ভয়াবহ রুপ দ্যাখে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের। তবে যারা দেশের ভেতরে ছিলোনা তারা দেশের ভেতরে ছিলোনা। যারা ছিলো তাঁদের মধ্যে তিনটি বিশেষ দল ছিলো ---- বাঁচার তাগিদে যুদ্ধ করা --- নিজেকে, নিজের পরিবারকে, নিজের আত্মীয়স্বজন প্রতিবেশী, তারপর দেশকে রক্ষা করার জন্য যারা শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন তারা ছিলেন এক দল।  অনেকে সরাসরি যুদ্ধ করেননি তবে মুক্তিযুদ্ধকে নানাভাবে সাহায্য করেছেন - খাবার দিয়ে, টাকা দিয়ে, আশ্রয় দিয়ে, নিরাপত্তা দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে, অনুপ্রেরনা দিয়ে, এরা সবাই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এরা সাধারন মানুষ ছিলেন, রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী ছিলেন, তারা শ্রমিক ছিলেন, কৃষক ছিলেন, মজুর ছিলেন, কিশোর ছিলেন, মহিলা ছিলেন, বৃদ্ধা মা ছিলেন, তারা সবাই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। সেই সময় শত্রু ছিলো পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী আর মুক্তিযোদ্ধা ছিলো সেইসব মানুষ যারা আত্মরক্ষার তাগিদে যুদ্ধ করছিলেন। সেখানে চীন পন্থি মাও বাদী ছিলেন, মসজিদের ইমাম ছিলেন, কমিউনিস্ট বিরোধী সাধারন মানুষ ছিলেন, সেখানে মার্কসবাদী কবি ছিলেন, লেনিনবাদী সাহিত্যিক ছিলেন, সেখানে মার্কস- মাও - লেনিনের নাম জীবনে কোন দিন শুনেননি এমন মানুষ ছিলেন, অনেক মসজিদে অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছিলো, অনেকে রাতে মসজিদে ঘুমাতেন, ভারত থেকে এসে কতজন মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন ? কিসে করে আসতেন ? এক্সপ্রেস ট্রেনে করে এসে মুক্তিযুদ্ধ করে আবার ভারতে নিরাপদে ফিরে যেতেন সুন্দর ফাইভ স্টার হোটেলে ? তেমন সৌভাগ্য আর কতজনের হয়েছিলো ? যদি হতো তাহলে সেইসব মানুষের লাশ পরবর্তীকালে বধ্যভুমি থেকে কি উদ্ধার হতো?

       তখন কোথায় ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান? ১৯৭১ সালের ৯ মাস মুজিব যেখানে ছিলেন সেখানে তিনি  কেনো ছিলেন ? সেদিন কোথায় ছিলেন অধ্যাপক গোলাম আজম ? সেদিন কোথায় ছিলেন নিজামী , সাজেদা, হাসিনা ? শেখ কামাল ? শেখের দুঃস্থ পরিবারের লোকজন ? তারা সবাই নিরাপদে ছিলেন বলেই  তাদের দেহ বধ্যভুমিগুলো থেকে কুকুর শেয়ালে টেনে টেনে বের করেনি।  কোন পূন্য করার ফলে ? তারা কেউ মুক্তিযুদ্ধ না করেই কিভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান হয়  ? শেখ মুজিব নিজে পাকিস্তানের সমর্থক ছিলো যা আরও ভালভাবে পস্ট হয় ১৯৭৩ সালে যখন সাধারন ক্ষমা ঘোষনা করা হয় আর ১৯৭৪ সালে যখন মুজিব ইসলামাবাদে যায় যেয়ে সেই একই পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর গার্ড অফ অনার নেন। ভুট্টো ক্ষমতায় আসাতে কি পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বদল হয়ে গেছিলো ??? হয়নি। সেই একই আর্মী মুজিবকে গার্ড অফ অনার দেয় । মুজিব দাঁড়িয়ে ছিলো ভুট্টোর পাশে ১৯৭৪ সালে। আর এই দৃশ্য কিভাবে বাংলাদেশের মানুষেরা সহ্য করলো ? বাংলাদেশের এখান ওখান থেকে ১৯৭৪ সালে তখনো লাশগুলোকে শেয়ালেরা টেনে টেনে বের করতো । এ্যাত দ্রুত মুজিব আর ভুট্টোর বন্ধুত্ব কিভাবে জোড় লেগে গেলো? নাকি বন্ধন সবসময়ই অটুট ছিলো ? নীজামী আর গোলাম আজম আর মুজিবুর রহমনার পার্থক্য কি ছিলো ? কে যুদ্ধাপরাধী আর কে যুদ্ধাপরাধি নয় ?? কে কে মুক্তিযোদ্ধা ছিলো ??? শেখ মুজিব তো নিজেই মুক্তিযোদ্ধা ছিলোনা

      অনেক অনেক অনেক মানুষ যুক্তি দেখিয়েছে যে বাংলাদেশের স্বাধিনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। স্বপ্ন তো স্বপ্নই। স্বপ্ন যে দেখেছিলেন সেইটা কে কে দেখেছিলো আর কিভাবে দেখেছিলো ? পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্ব শাসনের স্বপ্ন গোলাম আজম বা নিজামী দ্যাখে নাই। তার কারন নিজাবী বা গোলাম আজম তখন মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের তৈরী ও সমর্থিত পাকিস্তানের সমর্থক ছিলো। মুজিব কাকে সমর্থন করছিলো সেদিন ?? সেই নয় মাসে মুজিবকে কে বাঁচিয়ে রেখেছিলো পাকিস্তানে ? কারা ? সেই স্বাধিনতার স্বপ্ন যদি বাঁচিয়ে না রাখতো , যদি মুজিবকে হত্যা করা হতো,  স্বাধীনতার স্বপ্নও তাহলে সেই সাথেই পটল তুলতো । যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে মুজিবকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিলো বিনিময়ে  ১৯৭৩ সালে স্বাধিনতা বিরোধীদের মুজিব ক্ষমা করে  দেয়।  ১৯৭৪ সালে হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে গার্ড অফ অনার নিতে ইসলামাবাদ ও লাহোরে যায়। "যুদ্ধাপরাধী" এই শব্দটি ১৯৭২-৭৫ সালে আমরা কেনো শুনিনি ?

      আমি তো এখন কালা। কালা হলেও অন্ধ তো ছিলাম না। পত্রিকা পড়তাম নিয়মিত। বকৃতা শুনতাম নিয়মিত। রাজনীতি করতাম নিয়মিত। কেনো শুনলামনা এই "যুদ্ধাপরাধী" শব্দটি ? কেনো দেখলাম না বিচার ? কেনো দেখলাম শত্রুরা বাংলাদেশের মাঠে আসছে ক্রিকেট খেলছে। শত্রুর পাকিস্তান এয়ারলাইন্সের প্লেন বাংলাদেশের আকাশে উড়ছে। বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানীরা বানিজ্য করছে। বাংলাদেশে অবস্থিত বিহারী যারা ১৯৭১ সালের নয় মাস হানাদার বাহিনীকে সাহায্য করেছিলো তাদেরকে পাকিস্তান নিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা কিভাবে কাফিরদের দেশে বেঁচে থাকতে পারলো কাফিরদের জন্য আসা বিদেশী সাহায্য খেয়ে ?

       আর কাফিররা স্বাধিন বাংলাদেশে না খেয়ে মরতে শুরু করলো ? সেটা সম্ভব হয়েছে অন্যায়ের ভীতে জীবনকে সমর্পন করে।  কার জন্য এই অসম্ভব সম্ভব হলো ? ... নিজামী, গোলাম আজম আর মুজিব ------এদের মধ্যে কোথায় কিভাবে আমি পার্থক্য টানবো ? যারা জামাত করেন তারা শুনলে ক্ষুব্ধ হবেন এই ভেবে যে এ্যাত বড় সাহস মুজিবের সাথে আমাদের প্রিয় আমীরের তুলনা ? যারা আওয়ামীলীগ করেন তারা ক্ষুব্ধ হবেন -- এ্যাত বড় সাহস ...জাতীর পিতার সাথে গোলাম আজমের তুলনা...।।সেই তুলনা তো করা যাচ্ছেনা। সমস্যা সেখানেই । .........।।কোন উপায় নেই। মাঝে মাঝে মনে হয় ওরা একই বৃন্তের তিনটি ফুল ।-----------সাধারন ক্ষমা ঘোষনা ----- ছিলো শেখ মুজিবের " অন্যায় " -------- বাংলাদেশের কোন মানুষ টু শব্দ করেনি এর বিরুদ্ধেএটা ছিলো অন্যায় । কার বিরুদ্ধে ? অন্যায় করা হয়েছে সেই সব মানুষের উপরে যারা প্রিয়জন হারিয়েছে। অন্যায় করা হয়েছে সেই সব লাশের  বিরুদ্ধে যেইসব লাশগুলো জীবিত হয়ে উঠে এসে প্রতিবাদ করতে পারেনি। শেখ মুজিবের কি অধিকার ছিলো "সাধারন ক্ষমা" করার ? কোন অধিকার ছিলোনা। ...৩০ শে নভেম্বর, ১৯৭৩ সালে মুজিবের সাধারন ক্ষমা ঘোষনা এইভাবে "অন্যায়" এর হাতে হাত রেখে বাংলাদেশে তার যাত্রা শুরু করে । কেনো যেনো আমার মনে হতো সবাই শেখ মুজিবের প্রেমে আপ্লুত আর এই প্রেমের কারন ছিলো "অপরাধ" করতে পারার ব্ল্যাঙ্ক চেকে শেখ মুজিবের স্বাক্ষর । তাই তার সব "অন্যায়" কে ক্ষমা সুন্দর চোখে দেখা হয়েছে যেহেতু যারা অন্যায় এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হবেনা তারাও অন্যায় করার লাইসেন্স পেয়েছেন নিজেদের আখের গুছিয়েছেন। যে স্বাধিন দেশের জন্মই হয়নি সেই অজন্মা জাতীর পিতা হলে তো এমন হতেই পারে। এইভাবে শেখ মুজিবের অন্যায়ের হাত ধরে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছে। এইভাবেই চলেছে বাংলাদেশ --- সেই যেখানে  চলেছে বাংলাদেশ     ১৬ই জুন, ১৯৭৫ সালে মুজিব সংবাদপত্রের ডিক্লারেশন বাতিল করে দেয় । বাংলাদেশে মোট চারটি পত্রিকার ডিক্লারেশন বহাল রাখা হয়। ছবিতে দেখা যাচ্ছে সেই চারটি পত্রিকার নাম। আর সব মানুষের কথা না হয় বাদ দিলাম। মুজিবের সুনাম সাংবাদিকদের মুখে শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা। তার কারনটা কি ? ১৬ই জুন, ১৯৭৫ সালে মুজিব সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়। এই ছবিতে তা দেখা যাচ্ছে। এই দিনে, শুধু মাত্র চারটি পত্রিকার ডিক্লারেশন বহাল থাকে। আর এই চারটি পত্রিকা হলো ঃ দৈনিক ইত্তেফাক, বাংলাদেশ অবজারভার, দৈনিক বাংলা ও বাংলাদেশ টাইমস। আর এইসব পত্রিকার সাংবাদিকরা তো মুজিবের এই বদান্যতার কারনে আর টাকা পাবার কারনে ল্যাজ নাড়তে নাড়তে মুজিবের গুনগান গাইবেই। তখন গনকন্ঠ অফিসে যেভাবে তছনছ করে কবি আল মাহমুদ আর অন্যান্য বামপন্থি কবি, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদদের ধর, পাকড়, নির্যাতন, হত্যা ইত্যাদি করা হচ্ছিলো তাতে স্বাভাবিকভাবেই এই চারটি পত্রিকাকে মুজিবের আইনের শেকল নাকে বেঁধে প্রকাশ করতে দেবার অনুমতি ছিলো এইসব পত্রিকার সাংবাদিকদের জন্য একটি দাঁত বেড় করে চিত হয়ে শুয়ে আকাশের দিকে দুই হাত জোড় করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মতো অবস্থা ।
      এই লাশ ১৯৭৪ সালের এক ক্ষুধার্ত মানুষের লাশ এই লাশ দাফন করার জন্য আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম পথ থেকে ট্রাকে তুলেছে। এই ছবি তোলেন জন পিলজার। এই লাশ মুজিবের বাংলার ক্ষুধার্ত মানুষের লাশ। এই বাংলার মানুষ সেই বাংলার মানুষ যাদের ভাত, কাপড়, বাসস্থান ও স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক অধিকার দিতে মুজিব ব্যর্থ হয়। সেই সময় মুজিব নিজের আর ভারতের পুঁজিবাদের ভাত, কাপড়, বাসস্থান ও স্বাস্থ্যের বাজার প্রতিষ্টাতে ব্যস্ত থাকার ফলে মুজিবের বাংলার মানুষের দিকে তাকাবার সময় ছিলোনা। তবে কোটি কোটি ডলারের বিদেশ সাহায্য যা এইসব বাংলার মানুষের নামে বাংলাদেশে প্রবেশ করে তা ছালার বস্তা করে মুজিবের লোক জনে যার যার ঘরে নিয়ে যায়। ফলে বাংলার মানুষ না খেয়ে পথে পথে মরে পড়ে থাকে। এখন আসি অন্যায় প্রসংগে। এইখানে "অন্যায়" কিভাবে হলো?"অন্যায়" এইভাবে হলো যেহেতু সাংবাদিকদের কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিলো ভীতি প্রদর্শন করে । যেহেতু কিছু সাংবাদিকদের মোসাহেবী করার জন্য নাকে টাকা বেঁধে দেওয়া হয়েছিলো যেহেতু কিছু লেখক, চিত্রকার, গায়কদের হাতে টাকা গুজে দেওয়া হয়েছিলো তাই তারা মুজিবের গুনগান করতো পথে পড়ে থাকা লাশগুলোকে উপেক্ষা করে। আর এইভাবে "অন্যায়" যে শুধু মুজিব করেছিলো তা নয়। অন্যায় করেছিলো সেইদিন সেইসব বুদ্ধিজীবি, ইতিহাসবিদ যারা এইসব "অন্যায়" কে ধামা চাঁপা দিয়ে রেখেছিলো নিজেদের বিবেককে হত্যা করে। এইভাবে "অন্যায়ের" হাত ধরে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিলো। তাই কোথায় চলেছে বাংলাদেশ - এই প্রশ্নের উত্তর আছে সেই সব অন্যায়ের মধ্যে যেইসব অন্যায়ের হাত ধরে আজ বাংলাদেশের বয়স হয়েছে ৪১ বছর।

      প্রভু-ভৃত্যের কথা


      প্রভুদের কিছু ভৃত্য থাকবে
      দালালদের কিছু পদলেহনকারী থাকবে
      তাদেরও কিছু পৃষ্টপোষক থাকবে
      এই থাকাথাকি নিয়ে
      কিছু মানুষের থাকাথাকিতে বিরম্বনার সৃষ্টি করবে
      এইভাবে গড্ডলিকা প্রবাহে
      কেটে যাবে
      নেয়েখেয়ে বাসন মেজে ঘষে খসে দিন
      ১৭০০ সালের সাথে ২০১২ সালের পার্থক্য
      খুঁজে হয়রান
      শোষক আর শোষনের কোন পার্থক্য নাই
      তবে এইসব করার মাধ্যমগুলোতে কিঞ্জিত পার্থক্য দেখা দিয়েছে
      রিমোট কন্ট্রোল্ড অপারেটেড প্লেন এখন বোমা ফ্যালে দেশে দেশে
      হাইস্কুল ড্রপআউটরা এখন দেশপ্রেমিক সৈন্য হয়ে
      দেশে দেশে ধর্ষন করে জাতীয় খেতাব পায়
      খুনাখুনি যত বেশী নোবেল শান্তি পদক প্রাপ্তির সুযোগ তত বেশী
      বদলে যেতে আর বদলে দিতে
      খুনাখুনি আর খুনিদের পদলেহন
      মার্কস এর রচনা অনুবাদ করে কি দেশপ্রেমিক হওয়া যায় ?
      মার্কস তো বিশ্বের মজদুরের কথা লিখেছে
      তুমি কার কথা লেখো ?
      মাও চীনের ভবিষতের কথা ভেবে গেরিলা যুদ্ধ করেছিলো
      তুমি কার কথা ভাবো ?

      মিছিলে পুলিশের গুলি – মানুষ হত্যা। খুনিরা কিভাবে দেশ শাসন করতে পারে ?



      মানুষ গুম হচ্ছে, খুন হচ্ছে, পচা গলা লাশ নদী নালাতে ভেসে উঠছে। এর প্রতিবাদে যদি আওয়ামীলীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো হরতাল ডাকে, প্রতিবাদ মিছিল করে, তাহলে কি পুলিশ সেই মিছিলে বা হরতালের সমর্থকদের গুলি করে হত্যা করার অধিকার রাখে? “দেখামাত্র গুলি” করার নির্দেশ দিয়েছিলো আওয়ামীলীগের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান – দেখামাত্র নক্সালদের গুলি করো । এখন কি শেখ মুজিবের কন্যা - যে বা যাহারা আওয়ামীলীগের বিরোধিতা করবে “দেখামাত্র তাঁদের গুলি” করার হুকুম দিয়েছে ?

      প্রবাসে বসে আমরা জানি যে, বাংলাদেশ একটি স্বাধিন, গনতান্ত্রিক ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। স্বাধিন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র অর্থাৎ বাংলাদেশে আর আগের মত আরবের, বৃটিশ বা পাকিস্তানের উপনিবেশ নাই। বাংলাদেশের মানুষ তাদের গনতান্ত্রিক অধিকারকে ব্যবহার করে তাঁদের নিজেদের পছন্দমত সরকার গঠন করেছে। যদি তাই হয় তাহলে মিছিলে গুলি চলে কেনো ? জনগন আওয়ামীলীগকে নির্বাচিত করার সময় কি জনগনকে দেখামাত্র গুলি করার ব্লাঙ্ক চেকে দস্তখত করে দিয়েছে।

      সরকার নির্বাচিত করা মানে আমরা বুঝি তারা জনগনের প্রতিনিধি আর জনগনের জন্য দেশ শাসন করবে, আর যদি কোন কারনে জনগন এই শাসকদের পছন্দ না করে বা সরকার যদি দেশ চালাতে অক্ষম বা ব্যর্থ হয় তাহলে জনগন অধিকার রাখে সরকাররের উপরে অনাস্থা জ্ঞাপন করে নতুন নির্বাচন করার। এখন বিএনপী বা জামাতে লোককে যদি আওয়ামীলীগ সরকার হত্যা করে তাহলে কি সেই হত্যা জনগনকে হত্যা বলে পরিগনিত হয় ? যেহেতু জামাতের সবাই যুদ্ধাপরাধি আর বিএনপীর সবাই পাকিস্তানের দালাল তাই তাদেরকে “দেখামাত্র গুলি “ করা যাবে? এটা কি বৈধ ।?

      যদি বৈধ হয়ে থাকে তাহলে এই বৈধতা সরকারকে কে দিয়েছে ? প্রবাসে বসে আমরা জানি যে মিছিলে গুলি চলেছে। বাংলাদেশের পুলিশ বাংলাদেশ সরকারে নির্দেশে মিছিলে বা হরতালের সমর্থকদের গুলি করে হত্যা করেছে। বাংলাদেশ সরকার যেকোন সাধারন খুনীর মতই খুনি। বাংলাদেশ সরকার ক্রিমিনাল। সরকারের তো দেশ শাসন তো দূর – সবাইকে খুনের অপরাধে জেলে থাকা উচিৎ। অথচ তা হচ্ছেনা। তার কারন কি? তার কারন হলো বাংলাদেশ বা পূর্ব বাংলা কোনদিন স্বাধিন হয়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের শরীর রক্তাক্ত করে স্বাধীনতার সূর্যকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। পূর্ব বাংলাকে পাকিস্তানের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ভারতের হাতে অর্পন করা হয়েছে। সেই কারনেই ভারতের প্রিয় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে আওয়ামীলীগকে মুজিবের নেতৃত্রে সরকার হিসাবে গদিতে আসীন করা হয়েছিলো। এখনও সেই একই ভারতের প্রিয় রাজনৈতিক দল আওয়মালীগ গদিতে আসীন। আর সেজন্যেই জনগনের রক্তে রক্তাক্ত তথাকথিত স্বাধীন বাংলাদেশ।

      যে রাজনৈতিক দলই ভারত/যুক্তরাষ্ট্রের দালালী করবে সেই রাজনৈতিক দলই তাঁদের স্বার্থে বাংলাদেশকে বাংলাদেশীদের রক্তে রক্তাক্ত করবে। মুজিব থেকে হাসিনা – বার বার এরা ক্ষমতায় এসে বার বার প্রমানিত করেছে বাংলাদেশ স্বাধিন নয়। বাংলাদেশের জনগনের মত প্রকাশের কোন অধিকার নাই। বিরোধীদলের রাজনীতি করার কোন অধিকার নাই। হরতাল, মিছিল, প্রতিবাদ করলে সবাইকে গুলি করে হত্যা করা হবে। বাংলাদেশে বাক স্বাধীনতা নাই। প্রতারনা দিয়েই শেখ মুজিবের রাজনীতি শুরু হয়। ধোকাবাজ, চাপাবাজ, জালিয়াত, বিশেষ অভিনেতা, শেখ মুজিব তার আবেগ আপ্লুত কন্ঠে হুঙ্কার দিয়েই জনগনের হৃদয় জয় করে নিয়েছিলো। শোনা মাত্রই সবাই প্রেমে পড়ে গেলো ফটাফট। জনগনকে প্রথমে হতবাক পরে বাকহারা করে শেখ মুজিবের খুনাখুনি শুরু হয়েছিলো এখন হাসিনার খুনাখুনী চলছে। আর এইসময় খুব অবাক হতে হয় এই ভেবে যে রাজপথে যখন গুলি চলে, মানুষ হত্যা করা হয় তখন সবাই অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে যায়। কারন এই মৃত জামাতে ইসলামিয়া বা বিএনপীর সমর্থক ছিলো। মানুষ হত্যা অপরাধ নয় – জামাত বা বিএনপী করা অপরাধ ।

      " বাংলার মানুষ মুক্তি চায়" - বলে হুঙ্কার দিয়েছিলো আওয়ামীলীগের মুজিব । বাংলাদেশের পুলিশ বাংলার মানুষের মুখে লাথি মেরে  বা গুলি চালিয়ে মানুষকে জীবন থেকে মুক্ত করে দিচ্ছে -  শেখদের শাসনামলে ।