Sunday, September 24, 2017

আঁধার

আমি সূর্যকে ভয় করি
আলোতে স্পষ্ট দেখা যায়
অদ্যবধি যা কিছু ঘটে গেছে
এই হাটে
ভাঙ্গা হাড়ি, চুরমার কাঁচ
হতাশা, ক্রোধ, অমীমাংসিত বোধ
উচ্ছিষ্টের মত ছুড়ে ফেলে দেওয়া মন
কালাবাজারে বিক্রি হয়
মান সন্মান আপনজন 

আমি সূর্যকে ভয় করি
আঁধারের অপেক্ষা করি
চাঁদের মিষ্টি আলোতে
গল্প বলতে পারি
যা কিছু জ্বলে গেছে
সূর্যের আগুনে

আঁধারের অপেক্ষা করি

আলোতে হারিয়ে যাবার বড্ড ভয়
আঁধারে নিজেকে খুঁজে পাই

বন্ধ খাম

আকাশ এমন
ছু'তে গেলেই পালিয়ে যায়
গুটি গুটি এগুলেই
ধরা দেবে দেবে এমন এক ভাব
মনের খাটালে লুকানো
আলসে কথার মত তবু
অধরা রয়ে যায় সব
আকাশের নীরবতা বুঝি
সব দেখে শুনে
বোবা হয়ে থাকে
তবু অকারণ নাবলা কথা খুঁজি
আমিও কি আজ আকাশ হবো?
মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দেখবো শুধু
পড়বো পাপড়িতে লেখা কথা
বুঝবো শুধু
বলবোনা কোনকিছু
মুখ বাধা বোবা পশুর মত
অগত্যা
এলোমেলো ভাবনার খামে মুড়ে
পার্সেল করে দেবো
মান অভিমান
আকাশের কাছে
ছু'তে এলেই পালিয়ে যাবো
আকাশের মত করে

থেতলানো হৃদয়


অবিনাশী বস্তু রুপ বদলায়
ঘষেমেজে সেজেগুজে
ঘুমড়ে মরে
চলে যেতে চায় ভেদ করে কাচ
ঠেকে যায় কপাল
থেতলানো হৃদপিন্ড হাতে
ফিরে আসে শূন্য হাতে
ফলাফল
নিত্য করি
যোগ বিয়োগ গুন ভাগ

অনিশ্চিত তানজেনারাং


যা মানোনা বা মানো
ভাবনার প্রতিবিম্ব ভাসে তা থৈ থৈ
সব কথা উজাড় হয়ে
হাতপা ছেড়ে শুয়ে থাকে
চোখের পাপড়িতে
হাতের তালুতে মৃত রেখা
ঘষে ঘষে ছাল উঠে
পৌষের রোদ্দুরে কপাল তেতিয়ে নেয়
গেড়ো খোলার আগে
কিছুই থাকে না লেখা
মরাপচা শুক্নো চামড়া
জাদুঘর বানিয়ে মাছি তাড়াই বসে শুয়ে

১৭ই জুলাই, ২০১৭



সেটা যেমন সত্য
তেমনি ওরা এখন ধূলোতে লুটোপুটি খায়
সেটাও সত্য
কিছুক্ষণ পরে হাওয়া এসে উড়িয়ে নিয়ে যাবে
সেটাও সত্য
মিথ্যা যা তা হলো
যা কিছু আমরা বলি লৌকিকতা করে
মিথ্যা যা তা হলো
যা কিছু আমরা বলি
অসত্য জেনেও
বলতে থাকি মন রাখার জন্য
সেই মন আয়নার মত
দেখে ফ্যালে সত্য, মিথ্যা, তখন
কাঠমল্লিকারা মরে পরে থাকে
মুখ থুবড়ে

বিস্মিত হয়েছি


এক বিন্দু জল নিমেষে শুষে নেয়
বহু যুগের ভালবাসাহীন বন্ধাত্বে
জন্মেছে নিস্টুর আর বিষাক্ত ক্যাক্টাস
আমি বিস্মিত হয়েছি
আমি ক্লান্ত হইনি
খোলসের নীচে হৃদয় নেই
খোলসের নীচে হাসি নেই
খোলসের নীচে কান্না নেই
যে কান্না বুকের ভেতর জমে
আবেগ আর ভালবাসা ঘনীভূত হলে
খোলসের নীচে ধুধু এক অসহায়
পোকালাগা অসুস্থ বৃক্ষ
তোমার ভেতর হাটতে হাটতে
ক্লান্ত হইনি আমি
ব্যাথা পেয়েছি শুধু

ভাইরাস

আমি আমার হৃদয় মেলে ধরে
বল্লাম, দেখো, এখানে
ফুলের পাশে কত বিষাক্ত ভাইরাস
ঝরণার পাশে কত আবর্জনা
আমি প্রানপণ শ্বাস নিতে চাই সুবাতাস
বল্লাম, শোনো, বহুযুগের কান্না, দু:খ, বিষন্নতা
পরিশোধিত করে নির্মল হাসি
তোমাকে দিলাম
আমি আমার হৃদয় মেলে ধরে
বল্লাম, অবিশ্বাসগুলো ফেলে দাও
এখনো পৃথিবী ঘুরছে সূর্যের চারিপাশে
অনাদিকাল ধরে এখনো মানুষ হাটে
অমানুষ আর বিবেকহীন অদ্ভুত প্রানীভরা সড়কে
তুমি ওদের সাথে দাঁড়িয়ে রইলে অনড়
যেমন ছিলে বহুযুগ ধরে

আর আসিনি তারপর

তারপর আর আমি আসিনি
সেখানে
যেখানে একদিন অপেক্ষা
করেছি
সহজ সময়ের
মুঠিভরা অবকাশ খুলে দিয়েছি
ওরা আর কেউ নেই কোত্থাও
সহজ, সরল, নির্মল
আর কিছু নেই
যেখানে একদিন অপেক্ষা করেছি
এখন একাকী
আমি ফিরে যাচ্ছি
সেখানে
যেখানে অপেক্ষা বলে কিছু নেই

পুনশ্চ

তোমার সুখের জন্য 
আমি সব করতে পারি
চুপ হয়ে যেতে পারি
দূর হয়ে যেতে পারি
মূক হয়ে যেতে পারি
তোমার সুখের জন্য
আমি সারারাত জাগতে পারি
সারাদিন ভিজতে পারি
কান্নাভরা চোখে হাসতে পারি
সব অভিমান বুকে রেখে
রক্ত বমি করতে পারি
তোমার সুখের জন্য
আমি সব আঘাত সইতে পারি
নদীর মত
মাটির মত
নরম ঘাসের মত
নাম গোত্রহীন পাখীর মত
উড়ে যেতে পারি
উবে যেতে পারি
ভেংগে যেতে পারি
তোমার সুখের জন্য
তোমার উদাসীনতার জন্য
পরিকল্পিত ঝকে পা রেখে
ভাংগা কাচের মতো
টুকরো হয়ে যেতে পারি
তোমার জন্য হারিয়ে যেতে পারি
অনেক কিছুই পারি
যা তুমি পারোনা
যা আর কেউ পারেনা
আমি জানি এইসব কোন কিছুই
সুখী করবেনা তোমায়
তোমার প্রশ্নের উত্তর আমি নই
তাই

আর কোনদিন বিশ্বাস করবোনা আমাকে

জানো, একবার আমি
রাজহাসের মত শূন্যে উড়তে চেয়েছিলাম 
শুধু পালক দিয়ে 
তোমার ঘুম ভাংগাতে
জানো, একবার আমি
নদী হয়ে প্রবাহিত হতে চেয়েছিলাম
শুধু জলে তোমায়
ভাসিয়ে রাখতে
জানো, তখন আমার মনে হতো
ডিম থেকে বের হওয়া নরম চামড়াতে ঘেরা
একদলা নিষ্পাপ শিশু তুমি
জানো, আমার বুকের উষ্ণতা দিয়ে
তোমাকে সকল প্রতিবন্ধকতা থেকে
বাঁচাতে চেয়ে দেখলাম
আমার চারিপাশে উঁচু উঁচু দেওয়াল
হিংস্র, পাশবিক, নিস্টুর মুখে বিদ্রুপের হাসি
ওরা বলছে
আমাকে আটকেছে ফাদে
নির্মমতার
ওরা বলছে
এটাই আমার শাস্তি নির্বুদ্ধিতার
জানো, আমি প্রতিজ্ঞা করেছি
আর কোন দিন আমাকে বিশ্বাস করবোনা বলে

ঠিকানা ঠিক আছে

তোমার কাছে যেয়ে জানতে পারলাম
তোমার ঠিকানাতে তুমি বলে কেউ ছিলনা
তোমার ঠিকানাতে তুমি বলে কেউ না থাকাতে
আমার বলা কথারা কোনদিন পৌছেনি তোমার কানে
তোমার ঠিকানাতে তুমি বলে কেউ না থাকাতে
এতদিনে আমার বলা কথারা সব ফিরে এসেছে আমার কাছে
নিজেকে নিজে ছুঁয়ে দেখি
নিজেকে নিজে বিশ্বাস করতে পারিনা
এত ভুল আমি কিভাবে করতে পারি?
তোমার দেহে তুমি নেই
তোমার মনের ভেতর তুমি নেই
তোমার ঠিকানাতে তুমি বলে কেউ ছিলনা
তুমি বলে আসলে কেউ ছিলনা কোনকালে
সব কথা, সব ভাবনা, আমার কল্পনা ছিল
তোমার ঠিকানাতে তুমি বলে কেউ ছিলনা
এখন আমার বুকের ভেতর আছড়ে পড়ছে কথারা
সেই সাগরের ঢেউয়ে
ছুঁড়ে দেওয়া শখের কাঁকন
ধুয়ে মুছে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল কাল, আজ আর
আগামীকাল।
তোমার কাছে যেয়ে জানতে পারলাম
তোমার ঠিকানাতে তুমি বলে কেউ ছিলনা

তুমি কি সত্য বলেছিলে ?

দেখো তাকিয়ে ডানেবায়ে
নিয়ে এসো কাছে
সময়
মেলে ধরো
স্বপ্ন
তারপর প্রশ্ন করো নিজেকে
তুমি কি সত্য বলেছিলে?
বলোনি
সব চাইতে আপন তোমার অন্তর
তাকে প্রবঞ্চনা করে
কি পেলে?
স্বপ্নে স্বপ্নে লুকিয়ে থেকে
লুকাতে পারোনি কিছুই
দাঁড়াতে হয়েছে
মুখোমুখি নিজের
জবাবদিহি চেয়েছে
তুমি কি সত্য বলেছিলে?

অবশ অবশ লাশ

আমার লাশের হাতটা ধরো
তারপর কনুই অবধি
চামড়া ছিলে ফ্যালো
খামচে বের করে ফেলো সময়
আমার আংগুলে ঝুলে আছে 
কবিতা, খুশী, আলুথালু ইচ্ছাগুলো
জানি আমাকে নয়
আমার অকৃত্রিম খুশীগুলো চাও তুমি
জানি আমার সাথে নয়
আমার সুখগুলো দুহাত ভরে নিয়ে
চলে যেতে চাও সেই খোলা মাঠে
যেখানে আকাশ ঝোলে বরফি কাটা মেঘে
স্বপ্ন থাকে মিথ্যায় মোড়া জল্পনাতে
জানি চাওনা তুমি আমাকে
আমার হাসিটুকু চাও
চোখে একে ধোকা দেবে তাকে
যার জন্ম হয়েছে গোলক ধাধাই
স্তুপিকৃত করে সব সাজিয়ে রেখেছি
এখানে
আমার লাশের হাতটা ধরো
সুখগুলো চিনতে পারবেনা জানি
ভুল করে ভুল আর দু:খ নিয়ে গেলে
শেষে আটকে যাবে আরো হাজার বছর
তেপান্তরের মাঠে
চামড়া ছিলে ফেলো
সেখানে থমকে আছে
থোকা থোকা আনন্দ, আশা, ভালবাসা
যা সম্পুর্ণ অপরিচিত তোমার কাছে
লাশের হাতটা ধরো

একদিন এক স্বপ্ন

আমার সাথে তোমার
দেখা হবে যখন
তখন সাগর থাকবে
জানালায়
আর 
চোখে সৈকত
মাঝে উষ্ণতা আর কেউ না
না ইন্টারনেট
না ওয়াইফাই
না মোবাইল
না ক্যামেরা
আমার সাথে তোমার
দেখা হবে যখন
না দেনাপাওনা
না স্বার্থের লেনদেন
না উপহার বিনিময়
না বাণিজ্যিক কাগজ
না প্লাস্টিক
কিছু থাকবেনা
আমার সাথে তোমার
দেখা হবে যখন
পেছনে ফেলে এসো
না পাওয়ার বেদনা
উপেক্ষা,ঘৃনা, অবহেলা, মিথ্যাচার, অভিনয়,
অব্যক্ত যাতনা, অপমান, আড়চোখে চেয়ে চেয়ে উপভোগ,
ক্ষোভ, চিৎকার, আক্রোশ, মুষ্টিবদ্ধ হাত,
 আঘাত করার বাসনা, প্রতিহিংসা, প্রতিশোধ,
উধোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে
চাপিয়ে দিয়ে পরিতৃপ্তি লাভের নির্মতা,
 অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ, প্রেম, বাণিজ্য,
দেহ আর টাকার মোহ
সব সব কিছু পেছনে ফেলে এসো
তখন
তোমার সাথে আমার
দেখা হবে যখন
ওসব পথ দিয়ে হেটেছি বেশ কতকাল
আক্রোশ, আস্ফালন, দেখেছি
দুর্বল মন
কাপুরুষতা, ফাকা পাতিলের আহাজারি
হাহাকার
চাইনা সেসব কিছু আর
যখন দেখা হবে
তোমার সাথে আমার
সব পথ সব গল্প সব ইতিহাস ভুলে
শুধু আমার সাথে থেকো
সহস্র বছর ধরে একবার
যখন দেখা হবে
আমার সাথে তোমার

অদৃশ্য দেওয়াল

এতদিন দেখিনি
আজ দেখতে পেলাম
তোমার আমার মাঝে একটা দেওয়াল
দেওয়ালটা আসলে ছিল অনাদিকাল
কেউ জানতাম না
দেওয়ালের কারুকাজ দেখ মনে হয়
বহু বছরের সকাল আর দুপুরে গড়ায়নি
তোমার আমার মাঝে
তাই তুমি আমাকে বুঝতে পারোনি
খুঁজতে যাওনি
তোমার সেই সত্য না বলার অভ্যাস
হারিয়ে ফেলার ভয়
সত্যগুলোকে তুমি রেখে দিয়েছিলে পাজড়ের খাঁজে
সুরকি দিয়ে গেঁথে
আর মিথ্যাগুলোকে বুকে নিয়ে হেটে এলে
আমি খোলা চোখে দেখলাম কুৎসিত মিথ্যাগুলো
তোমাকে জড়িয়ে ধরে
চুমা খাচ্ছে ঠোটে
এতদিন দেখিনি
তখন সত্যরা বন্দী বুকের পাজড়ের ঠিক নীচে
সুরকীতে গাঁথা
কস্টে নীল
কুৎসিত মিথ্যারা হাটে তোমার বুকের উপরে
তুমি মেকী সুখে বিভোর
সবাইকে ডেকে দেখাও তোমার ভেল্কিবাজি
ভেতর ফাঁকা চির দুখী
সুখেরা পালিয়েছে নগর ছেড়ে সেই কবে
তুমি শুধু খেলা করো মিথ্যা নিয়ে
পাজড়ের নীচে সত্য কে মেরে
এতদিন দেখিনি
সেই দেওয়াল তোমার আমার মাঝে

ধোঁকা

ডাহুক ডাকা সেই দুপুরে
মনে আছে তোমার?
আমি কেমন বেকে বসেছিলাম
সূর্য ধরবো বলে
আসলে আমি আশা করেছিলাম
তুমি বলবে
সূর্য তো তুচ্ছ আমি সাগর সেচে কাকন
খুঁজে এনে দেবো
হারিয়ে গেছিল এক প্রেমহীন সময়ে
জানো সুহৃদ!
আমি কত যুগ অপেক্ষা করেছি শোনার?
তুমি বলবে
আমি শুনবো আর মৃত্যু এসে হাত ধরবে আমার
তুমি বলবে
এই দ্যাখো খুঁজে এনেছি কৈশর
সাথে সেই কাকন - সাগর সেচা
জানো সুহৃদ!!
আমি শত যুগ অপেক্ষা করেছি
শোনার
পাবার
ফিরে আসার
জানো সুহৃদ
কারা যেন খেয়ে ফেলেছে কাকন
খেয়ে ফেলেছে হৃদপিন্ড
সমুদ্র সেচে
তারপর লাশ ভেসে ভেসে একদিন
গলে পচে মিশে গেছে নোনা জলে
ডাহুক ডাকা সেই দুপুরে
ফিরে আসেনি কৈশর
কাকন পড়ে

লুকানো

চোখের জল গড়িয়ে
নেমে যায়
সাগরের জল কমে যায়
শুধু কি সাগর তোমায় টানে? 
আরো অনেক কিছু টানে
শুধু বাধ সাধে কোলাহল
সমাজ সংস্কার
তবু কি তুমি পারতে আসতে
দীর্ঘ সময়ের দাবানল মাড়িয়ে
যেতোনা জ্বলে পুড়ে ছাড়খাড় হয়ে?
কার কাছে গেলে পেতে সেই বিসুদ্ধ ছাই?
যা করবে তোমায় প্রেমময়
স্বাভাবিক
আটপৌরে মানুষ
মিথ্যাকে ঝেড়েঝুড়ে ফিরে পাবে
শেষ ট্রেন
স্বাভাবিক স্বচ্ছ সুন্দর সকালে
পৌছুবে গন্তব্যে
সেখানে যেখানে অপেক্ষা করে
সীমাহীন সাগর, প্রেম, আনন্দ
স্বপ্নহীন স্বাভাবিক জীবন!!
শুধু কি সাগর তোমারে টানে?

পাথর সরিয়ে দেখলাম

পাথর সরিয়ে দেখলাম
মস্ত বড় ক্ষত নীল লাল আভা
শ্বাস নিতে চেষ্টা করলাম
তখন রক্তাক্ত হলো
পাজড়
পাথর সরিয়ে দেখলাম
দু:খগুলো সবাই সমবেত ও অপেক্ষারত
জিজ্ঞেস করলো - কেনো এত দেরী হলো ফিরতে
কৈফিয়ত দেই সর্বদা
আচল থেকে উজার করে
ঢেলে দিলাম হাজার বছরের
অভিমান
পাথর সরিয়ে দেখলাম
কান্নারা উন্মুখ হয়ে নামতে চাইছে
কপোল বেয়ে
অঝোর ধারে
ওরা আটকে ছিল
প্রাণবন্ত সেই হাসির নীচে
পাথর সরিয়ে দেখলাম
সবাই তৈরি ফিরে যাবার

উধাও হয়েছে সময়

এরপর সেখানে
রোদ এসে অপেক্ষা করেছে
পাটাতনে
শালিখের ঠোটে
অস্পষ্ট আওয়াজ
এরপর সেখানে
বৃষ্টি নেমেছে ধুয়ে গেছে শব্দ
এরপর সেখানে
সন্ধ্যা নেমেছে গাঢ় ঘুম চোখে
সে খুঁজেছে অহর্নিশি
সুখের নীড়
এরপর সেখানে
আধার ডুবেছে কালো মেঘে
উধাও হয়েছে সময়
অসম্পূর্ণ

রেশ

তুমি জানতে নিশ্চয়
প্রজাপতিরা প্রথম জীবনে
কুতসিত থাকে
গোলাকার মথ
আটকে রাখে লালা দিয়ে
সংক্ষিপ্ত জীবন নিয়ে দুরু দুরু উড়ে
ফুঁ দিলে ডানা ভেংগে যায়
তুমি জানতে
আঘাত করতে
সুবিধা এমন একটি
প্রজাপতি খুঁজো তুমি
ভাংগা ডানা, মৃত প্রজাপতি
তৃপ্ত করে চোখ
শান্ত করে দাবানল জ্বলে অহরহ
বুকের ভেতর
এক মুঠো মিথ্যা
এক সাগর অশ্রু
এক যুগ দু:খ টেনে নেয়
চোরাবালু
তুমি জানতে সেই ফাদে পা রেখে
কারা মরেছে
সেইসব মুখ চেনা জানা
প্রজাপতি র ভাংগা ডানা
দিয়ে ঢাকা

হতে পারে

হতে পারে খুব প্রখর হবে রোদ্দুর
আগামীকাল
ঝলসে দেবে চোখের পাতা
হতে পারে তুষাতপাত হবে ঘাম মুছে দেবে
আগামীকাল
এত অনিশ্চিত যখন যময়
এত অজানা যখন আগামীকাল
তখন কেনো এত দর কষাকষি করো?
তুমি তুমি তুমি তুমি ছাড়া
অনেকেই আছে,বাচে, মরে, হারে, জিতে
জীবন ঘষে ছাল তুলে ফ্যালে
কপালের
হতে পারে তুমি আর তুই বিচ্ছেদের গান গাইবে
আগামীকাল
এক নতুন ভোরে নতুন বাজারে
নিরীহ কারু বুকে পা রেখে
জবাই করবে নির্দ্বিধায়
দর কষাকষি করে চুষে নেবে রক্ত
আগামীকাল
তারপর পাচ দশ মিথ্যা দিয়ে লাশ
ঢেকে রেখে হেটে চলে যাবে
আগামীকাল
হতে পারে প্রখর রোদ্দুরে জ্বলে যাবে
চোখের পাতা
জলপাই রংগের কপোলে
হেটে যাবে সারিবদ্ধ পোকারা
আগামীকাল
হতে পারে একদল কসাই
ধারালো চাকুর মুখে রক্ত দিয়ে
লিখে ফেলবে প্রেমের কবিতা
আগামীকাল

Saturday, May 6, 2017

কবিতা লেখা হয়না কোনদিন

সাদা সাদা কাগজে কালির আঁচর নেই
কুয়াশা কুয়াশা 
অস্পষ্ট অবয়ব 
মেঘে মেঘে জমে থাকে অভিমান
ভেবে ভেবে 
রাত ভোর হয়
কালো আর কমলা রেখার নীচে সূর্য হাসে
আলোতে সে অন্য রকম
গাড়, রক্তিম, সুদীপ্ত
তারপর ক্লান্তি
বিষাদে ছেয়ে যায় সমস্ত বিকেল
মুছে যায় সব কাহিনী
সাদা সাদা কাগজে কালির আঁচর নেই
কবিতা লেখা হয়না কোনদিন

বাদুরের মত ঝুলে থাকা

সেটা এমন দিন
না বৃষ্টি না রোদ্দুর
মাঝখানে থেমে যাওয়া কথা
বুকের ভেতর ঝিমুনো ব্যাথা
সেটা এমন মুহূর্ত 
না শনি না বৃহস্পতি
উথলে উঠে অপূর্ণতা
অচল, আড়ষ্ট, আকাঙ্ক্ষা
সেটা এমন এক আসা
যাওয়া আর না যাওয়ার মাঝে
বাদুরের মত ঝুলে থাকা

বন্ধ কপাট

এই মুহূর্তে তুমি কি আমায় শুনছো?
আগে কখনো শুনতে পাওনি
আর আশা করিনা তুমি আমায় শুনতে পাবে
শব্দ, দুরত্ব, এসব কিছুনা
তুমি আমায় শুনতে চাওনি
তুমি সেজন্য আমায় শোনোনি
অথচ আমি কত কিছু বলেছি তোমাকে অবিরত
বলার কারণ ছিল
তুমি যদি শুনতে
তাহলে কারণগুলো বুঝতে
আকাশ শুনেছে সেসব কথা
মেঘেরা টুপটাপ নেমেছে বর্ষা হয়ে
ভিজেছে একাকী দুপুর
আমার চোখে জল নেমেছে
আমার বুক ভেংগেছে
আমার কথাগুলো সব ফিরে এসেছে
তোমার বন্ধ কপাটে ধাক্কা খেয়ে
ফিরে এসেছে আহত, ব্যাথিত, অবনত
শব্দ, দুরত্ব, এসব কিছুনা
তুমি শুনতে চাওনি
তুমি বন্ধ কপাট
নিজেকে ছাড়া আর কারুকে তুমি শুনতে পাওনা
তুমি বুঝতে পারোনি
আমার কথারা সব তোমার জন্য ছিল
আমার জন্য নয়
এই মুহূর্তে তুমি আমাকে শুনছোনা
বন্ধ কপাট

বুক আর কন্ঠার মাঝখানে

এমন অনেক কথাই আটকে থাকে
বুক আর কন্ঠার মাঝখানে
সূর্য তেতে উঠে বলা হয়না
এমন অনেক কথাই আটকে থাকে
দ্বিধাদ্বন্দ্বে 
আর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে
চাঁদ ডুবে যায় বলা হয়না
কথা বলা হয়না
কথা আর কথা থাকেনা
কথা শত্রু হয়ে যায়
এমন অনেক কথা বলা হয়না
থেকে যায়
আটকে
শ্বাসরোধ করে রাখে
বুক আর কন্ঠার মাঝখানে

একটি শুন্যস্থান

ছিল তো সে সামনেই সর্বক্ষণ
তবু কেউ দ্যাখেনি তাঁকে
কেন যেনো মিশে গেছিল
অচেনার দলে
মরচে ধরা হৃদয় নিয়ে
আকাশ ভরা আলোর নিচে
বিদ্যুতের ঝকমকে আলোর অন্ধকারে
ছিল সে দাঁড়িয়ে সবার সামনে
সর্বক্ষণ
কেউ দ্যাখেনি তাঁকে
সে চলে গেলে সবাই দেখেছে
একটি শুন্যস্থান

ইউটোপিয়া


একদিন
আমিও যাবো ভেসে
জ্যোৎস্নার প্লাবনে 
স্বপ্নের ভেলাতে চড়ে
দক্ষিনা বাতাসে
শ্বাস নেবো বুকভরে
সবগুলো
মনের জানালা খুলে দিয়ে
দেখে নিও
একদিন আমিও অনুভব করবো
ভালবাসা
বন্ধ্যা হৃদয়ে
একদিন আমিও সিক্ত হবো
স্নেহের বরসনে
বলে দিও সবাইকে
সেদিন
যুদ্ধক্ষেত্রগুলোতে
গোলাপের ফুল ফোটাবো
একদিন
আমিও হাসবো
শিশুর মত
পবিত্র হাসি

কাফন

দেখো এই দেখো
সাদা কাপড়
আমার কাফন
এটা দিয়ে দেহ ঢাকবো আমি
শেষবারের মত
এই দেখো
আজ, কাল, আর গত পরশু
আমার জীবন
কেমন কেটে গেছে কেউ
রাখেনি খবর
ঠিক যেমন রাখবেনা খবর
আগামীকাল
আমার ইহলোক থেকে প্রস্থানে
অনেকেই স্মিত হাসবে
সুখের হাসি
দেখো এই দেখো
কিছুই সাথে নেবোনা আমি
এই দেখো সাদা কাপড়টা
একেবারে আনকোরা
লেগে নেই কোন দাগ
দেনাপাওনা, ঋন, ক্লেশ
অবহেলা, অপমান
আমার কাফন
আমার উপার্জন
এ কাফনে কারু দাবী নেই
না ভালবাসার
না ঘৃনার
না অবহেলার
না অভিনয়ের
দেখো এই দেখো
এই দেহ মাটিতে মিশে গেলে
জেনো ফুরাবেনা মেলা
শুধু শুরু হবে
নতুন এক জীবনযাত্রা
সব জীবন ফিরে আসে
নতুন এক রুপ নিয়ে
দেখো এই দেখো
আমার অফুরন্ত জীবন
সাদা কাফন

অর্ধেক চাঁদ

ফেলে রেখে গেলে
অর্ধেক চাঁদ 
এলোমেলো চুলের একপাশে
কোথায় যেন এক শিশু কেঁদে উঠলো
এক নিমেষে ভেঙ্গে গেল নিস্তব্ধতা
বদ্ধ ঘরে
আর কেউ নেই শুধু অন্ধকার
আর কেউ নেই শুধু অপেক্ষার সকাল
ব্যস্ত দুপুর
কাদামাটি ভেজা সড়ক
আর কিছু নেই শুধু অগোছালো জীবন
আর কিছু নেই শুধু
অনিশ্চিত আগামীকালের
পিছু পিছু ছুটে চলা
ব্যর্থ আর বিষাদের গান গেয়ে
আর কিছু নেই শুধু
অর্ধেক জোছনাতে স্নান করা

দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে আসে

কটু চিড় খেয়ে গেলে
এইতো শুরু হয় চিনচিনে ব্যাথা
একটু পরেই সব স্তব্ধ 
ফের সেই 
খুটখাট শব্দের রেশ
এইতো ক্ষীন আলো
এইতো থাকা না থাকার মাঝে
দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে আসে

তোমার শব্দে শব্দে চারিদিক নিঃশব্দ

তোমার শব্দে শব্দে চারিদিক নিঃশব্দ
আমার শব্দগুলো হারিয়ে গেছে বোবাতে
উথাল পাথাল
লিলুয়া বাতাসে উড়ে গেছে অপেক্ষা
সুন্দর সময়ের
সুনীল সাগরের
শুভ্র কপোতের
সেখানে জগাখিচুড়ি
কর্দমাক্ত সড়কে মলীন মুখে
তবু লেগে আছে স্নিগ্ধ হাসি অমলীন
কাগজেরা সব কিনতে গেছে সুখ
আর সুখেরা সব লেপ্টে আছে
আলোছায়া
শুখিয়ে যাওয়া অশ্রুতে
তোমার শব্দে শব্দে আটকে গেছে সব কথা
আমার শব্দগুলো আলো ভেবে
থেতলে গেছে
ধাক্কা খেয়ে কাঁচে
সারি সারি কাফনে ঢাকা অপেক্ষারা
হাসিকান্না সুখদুঃখ ব্যাথাবেদনা
সবাই হারিয়েছে স্বকীয়তা

ওরা যেন ছিলনা এখানে কোনকালে

তারপর সূর্য ঢলে গেলে 
শীতল হলো নদী পাড়
সারিবদ্ধ পিপীলিকারা
ঢিবির নীচে ফিরে আসতে হলো সন্ধ্যা
অন্ধকার গাঢ় হলে 
ঝোপের ভেতর থেকে বেড়িয়ে এলো হলুদ শেয়াল
ল্যাজ নিচু করে ধেই ধেই করে চলে গেল
গর্ত খুড়ে বের করে নিয়ে লুকানো খাবার
ক্লান্ত কাঠঠোকরা ঘুমানোর আয়োজন করে
মধ্যরাতে জেলে নৌকার মাঝি খুক খুক কাশে
এইখানে অনেক প্রান নিয়মিত ধুক ধুক করে
অনেক প্রান নিস্তব্ধ হয়ে যায়
মিশে যায় সহজেই এইভাবে
ওরা যেন ছিলনা এখানে কোনকালে

এখন আমি এক বাক্সের ভেতর বসবাস করি

এখন আমি এক বাক্সের ভেতর বসবাস করি
বাক্সের চারিপাশে যা কিছু আছে এর বাইরে
আর কিছু জানিনা
আর কিছু বুঝিনা
আর কিছু শুনিনা
এখন আমি এক কবরের ভেতর বসবাস করি
কবরের চারিপাশে পোকামাকড় ছাড়া
আর কারুকে চিনিনা
আর কারুকে খুঁজিনা
এখন আমার দেহের ভেতরে কোন মন নেই
এখন আমি লাশের মতন
সামুকের মত ধীর আর
কচ্ছপের মত স্থির
লাশেরা হাসেনা,
লাশেরা কাদেনা,
লাশেরা অপেক্ষা করেনা
কোন কবিতা বা গানের জন্য
লাশেরা মিশে যায় মাটিতে তারপর একদিন ফসিল হয়।

বুকের মাঝে

দূরত্ব? 
সাত সমুদ্র তেরো নদীর পাড়!
পৌছুতে লাগে
এক নি:শ্বাস
ফিরে যেতে লেগে যায় 
পুরো জীবনের অর্ধেক মাস
বুকের খোঁদলে লুকিয়ে রাখি
না বলা না কওয়া
বেড়িয়ে যায় সে
খুঁজি খুঁজি খুঁজি তারে
পত্রহীন শাঁখে ঝুলে থাকা রোদে
ব্যস্ত শহরে
ক্লান্ত কাকের চকিত চোখে
নেই নেই নেই
কোত্থাও নেই
ফিরে এসে দেখি সেখানেই আছে
অভিমানে মুড়ে
বুকের মাঝে

ওরা কেউ জানেনা

সেদিনের মত আজো
আকাশ চুপচাপ
অপেক্ষা করে গুমসুম
বৃষ্টি হবে কি হবেনা
মেঘেরা কেউ জানেনা
সেদিনের মত আজো
আকাশ নীল নীল
হরেক নীলে নিলাভ
কার যেন মুখ দ্যাখে অনিমেষ
সেকি সাগর নাকি সূর্যের রশ্মি
পাখীরা কেউ জানেনা
সেদিনের মত আজো তুমি নেই
কোনদিন ছিলেনা
কোনদিন আসবে কি আসবেনা
ওরা কেউ জানেনা

এসো দু:খ দু:খ খেলি

এসো দু:খ দু:খ খেলি
দু:খের আদি থেকে অন্ত 
কার কার কাছে
কত শত দু:খ আছে
সব ঢিবি করে রাখো
দু:খের পাহাড়ে চড়ে
নদী দেখবো
পৃথক করবো
পানি
পাতালের
বৃষ্টির
অশ্রুর
মিশতে দেবোনা
এক দু:খের সাথে অন্য দু:খ
সবার সব দু:খ
আলাদা আলাদা
শত শত ভাগে বিভাজিত
সেখানেই খেলার মজা
সবাই মিলিয়ে গুলিয়ে খিচুড়ি পাকাতে চায়
অথচ সব আলাদা আলাদা
দু:খেরা অকৃত্রিম

খেলা চলে নিরন্তর

খেলা চলে নিরন্তর
দীর্ঘ আর ক্লান্ত পথে
বিস্তীর্ণ চরাচরে
হাজার ভাবনাতে আচ্ছন্ন মনে
খেলা চলে নিরন্তর
বার বার ফিরে যায় সেখানে
যেখানে দু:খ ছিল, বঞ্চনা ছিল, স্বপ্নগুলো
দুমড়ে মুচড়ে ছিল
আয়নাতে কি দেখলে?
দ্যাখোনি তোমার মুখ?
নিজেই কেনো চিনতে পারোনা নিজেকে
না পাওয়ার বেদনা কি অন্য বুকে
অন্য ভাবে অনুভূত হয়?
সবার রক্ত লাল
বেদনার রং নীল
ক্ষুধায় কামড়ে ধরে জঠর
ওদের সবার মুখ মিলেমিশে এক হয়ে যায়
তবু খেলা চলে নিরন্তর
বঞ্চিত বঞ্চনা করে বঞ্চিতরে
খেলা চলে নিরন্তর

দুমড়েমুচড়ে

বাইরেটাতে কি ঝলমল রোদ্দুর
অথচ কনকনে শীত
প্রকৃতি আজকাল মানুষের মত কপোট আর মুখোশধারী 
শিশুর মত অনুকরণ করে
দেখলাম পানির মত
নিমেষে বিষাক্ত হয়ে যায়
বুঝলাম ঝড়ের মত
উড়িয়ে নিয়ে যায় দুমড়েমুচড়ে
ভাবলাম আমি এমন কেনো?
সাথে থেকে থেকে
হাওয়া লেগে লেগে
আমিও উবে যাবো - স্পর্শ করতেই ধুলোর মত

পুনঃজন্ম ঘৃনা করি

সেই ফাসির আসামী যাকে তার শেষ ইচ্ছা জানতে চাওয়া হলে সে বলেছিল
"যদি হাজার হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের চূড়ার এক চিলতে কোন আঁকড়ে ঝুলে থেকেও সে বাচতে পারে, তবু সে বাচতে চায়"
জীবন কখনো এভাবে প্রলোভন দেখাতে পারেনি
আমি পুনঃজন্ম চাইনা
আষ্টেপৃষ্ঠে বাধা দু:খ, ব্যাথা, বেদনা, মিথ্যা
আর প্রতারণা এইসব ঠাসা জীবন নিয়ে
ঢের হলো এক জীবনে বেচে থাকা
একবার গেলে আর ফিরতে চাইনা
দেখো চারিদিকে কত লাশ
কারু চোখহাত বাধা পচাগলা
কারু যোনিপথ দিয়ে খাদ্য খেয়েছে পোকামাকড়
কারু গলা কাটা
কারু চোখ উপড়ানো
কারু ছিন্নবিচ্ছিন্ন
বিলিয়ন ডলার কর্পোরেশনের তৈরি বোমাতে উড়ে গেছে সভ্যতা, সমাজ,
কত যুগের প্রজন্ম
আমি পুনঃজন্ম ঘৃনা করি
একটুকরো কাগজ দিয়ে
এক পশলা সুখ কিনবে বলে
সুইসাইড বোমার মত
ওরা ব্যাথা ভরে দেয় বুকে
ঢের হলো জোড়াতালি টানাহেঁচড়া
ঢের হয়েছে অভিনয় আর মিথ্যা
ঢের হলো মুখোশ বদল
ভালবাসা আর সত্যের মৃত্যু দেখে
চোখভরা ক্লান্তি এখন
আমি পুনঃজন্ম ঘৃনা করি
ঢের হয়ে এ জন্ম!!
উদগ্রীব হয়ে আছি
ছুটির ঘন্টা বাজার শব্দ শোনার

মাথার উপরে

মাথার উপরে
আকাশটা খুব কাছে এসে গেছে
চাপ দিচ্ছে
পিষে ফেলছে মগজ
বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে যোগাযোগ
তারপর এক সময় আর কিছু নেই
সব ফাঁকা
অবশ আর অন্ধকার

হাতের মুঠোতে আকাশ ধরার স্বপ্ন

তোমার চোখে
তোমার কন্ঠস্বরে
তোমার লেখাতে
ঝুলে থাকে সেই পুরোনো ক্ষোভ
সেই অমীমাংসিত জেদ
আঁচড় কাটে মাঠেঘাটে
আকুলিবিকুলি বুকের মাঝে
তোমার অপূর্ণ আহ্লাদ
মণিমুক্তো
হাতের মুঠোতে আকাশ ধরার স্বপ্ন
মাকালফলের দিকে
তাকিয়ে কেটে যাওয়া অমূল্য সময়
তোমার চোখে
লেগে থাকে সেই পুরোনো হিংসা
যার উপরে মলাটে লেখা আছে
“আমি অহিংস”
তোমার কন্ঠস্বরে
মিশে আছে সেই উষ্মা
মাথা খুঁটে মরে চার দেওয়ালের মাঝখানে
তোমার লেখাতে
পষ্ট হয়ে ফুটে উঠে
হৃদয়ের প্রতিচ্ছবি
যার উপরে মলাট আর মলাটে লেখা আছে
এখানে ছবি আঁকা নিষেধ !!!
তোমাকে আমি এক অসীম আকাশ দিলাম
বাঁধাহীন অদম্য প্রান দিলাম
সব দুমড়ে মুচড়ে তুমি ফেলে দিলে
তোমার কন্ঠে রাগ ভৈরবী
অথচ এখন মধ্যরাত!

বুধোর ঘাড়ে

উধোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে
বেশ কেটে যায় 
রাতদিন আর সময় অসময় 
মিথ্যাগুলো মিথ্যা হয়েই
চোখের ভাঁজে ঘুমিয়ে থাকে
চোখ খুললেই মিথ্যা হাসে
স্বপ্নগুলো উবে যায়
রোদ উঠলেই স্পষ্ট হয়
অভিনেতার ময়দা মাখা মুখ
কুন্ডুলি পাকানো
ইতস্তত বিক্ষিপ্ত
চিন্তা, মিথ্যা, কৃত্রিম শুভ কামনা
ভালমানুষের বিজ্ঞাপণ এটে কপালে
উধোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চেপে
ভাবনাতে মিথ্যা মেখে
সুখ নিদ্রাতে বিভোর হয়ে
বেশ কেটে যায়
রাতদিন আর সময় অসময়

যেখানে থমকে ছিল কারণ

স্যাঁতসেঁতে মেঝেতে তেলেপোকার স্বচ্ছন্দতা
দেওয়ালে পেটভরা ডিম নিয়ে টিকটিকি
আমি বল্লাম রাত ঢের হলো
এইবার চোখ বন্ধ করো
রাত ঘুমের
দিন কাজের
রাতে সূর্যি সময় দেয়
বিশ্রামের
দিনে সূর্যি শক্তি যোগায় কর্মে
আমি বল্লাম ভোর হলো
ফিরে চলো
সেখানে যেখানে থমকে ছিল
কারণ
ঘুম ভাংগার
রাত্রি জাগরণের
তুমি বল্লে অকারণ
আমি বল্লাম
সবকিছু কারণে ঘটে
আমার আসার কারণ
আমার যাবার কারণ
কারণ কারণ কারণ
অকারণ বলে কিছু নেই
ভোর হলে তুমি চলে গেলে
কারণ অন্য কোথাও ডাক দিয়েছে

বিদায় নিচ্ছি

ঘুম মৃত্যুর মত
কাল ভোরে
চোখ খুলতে পারে
না খুলতে পারে
তাই আমি বিদায় নিচ্ছি
নেক্সাসের কাছে
অসমাপ্ত ক্যানভাসের কাছে
আকাশের কাছে
অন্ধকারে পত্রহীন শাখার কাছে
আর কেউ নেই আমার
বিদায় নিচ্ছি
একাকীত্ব থেকে
বেদনা থেকে
ব্যাথা থেকে
দু:খ থেকে
আর কিছু ছিলনা আমার

ধোকা ছিল

সত্যের মত মিথ্যা ছিল
সুখের মত দু:খ ছিল
যোজন দূরে বসে বুকের মাঝে বসবাস ছিল 
বন্ধুর মলাটে আটা শত্রু ছিল
বিশ্বাসের বদলে নিখাদ ধোকা ছিল
এতকিছু থেকেও ছিলনা কিছুই

খুব ভোরে

কাল ভোরে
খুব ভোরে
সূর্য ওঠার আগে
খুব আগে
আমাকে জাগিয়ে দিও
হিমালয়ের চূড়াতে শিশির ছুব
মাঝখানে গৌতম নেই
গৌতমেরা এখন ডাকাতি করে ব্যাংকে
গৌতমেরা এখন ধর্ষন করে গলা কেটে ফ্যালে মেয়েদের
কাল ভোরে
খুঁজতে যাবো ঘর
গৌতম চেয়েছিল ছাই
সেই ঘর থেকে
যে ঘরে একজন দেশপ্রেমিক বাস করে

কথার ছাদে ব্যাথার রোদে

কোন দিন ভাংগবেনা 
এমন এক ঘুম
এসে কপোল চুমে
থমকে গেল
কুণ্ডলী পাকানো স্বপ্নের কথা শুনে
স্বপ্নগুলো এলোমেলো
বুকের ভেতর জমা কথার ছাদে
ব্যাথার রোদে
থেতলে যাওয়া আশার চাদরে
স্বপ্নগুলা মাখামাখি
ঘুমের সাথে দাপাদাপি
বল্লে "জানোতো সুখেরা ফেরারি
জানোতো বুকের ভেতর
ধুধু মাঠ
কোত্থাও নেই হাসিগান
জানোতো আদি থেকে অন্ত শুধু
একাকী পথ চলার
আরো কিছু বাকী আছে
স্বপ্নগুলো চূর্ণ হতে
কিছুদিন পর এসো
তখন অভিমানী ঘুম
ভেংগে গেল