Saturday, June 6, 2015

খাবলে খায় দ্বিপদ জানোয়ার

পোকামাকড়েরা সব অবাক অবাক
শুকনো ঘাসে কত রক্ত কত খাবার
তালগাছের গোড়া থেকে নদীর কিনার
পোকাদের বিশাল লাইন
সাপ পরিবার এই এলাকাতে অনেকদিন
এত বড় পোকার লাইন দ্যাখেনি কোনকালে
আজকাল পোকাদের খুব উতসব লেগে থাকে
কেঁচো উঠে আসে মাটির নীচে থেকে
শালিকেরাও ব্যস্ত খুব
মাছেরা এদিকওদিক
উকি দিয়ে সরে গেছে দূরে
সেসব কিছু দ্যাখে
বরফ জমা দেহ
বিস্ফোরিত চোখ
তার ঠোটের চারিপাশে বিজবিজে পোকা
ঠোটের রঙ বোঝা যায়না
চোখভরা বিস্ময়
ব্যাথাভরা
কারা যেন খেয়ে গেছে দেহ
পোকাদেরও আগে
পাখীরা বিস্মিত
গাছপালা, জন্তু, পাখী
কেউ দ্যাখেনি কখনও
এমন খাদক
খাবলে খেয়েছে দেহ
তারপর চলে গেছে দুপায় হেটে

স্থবির

রেখে দিও যত্ন করে
সময় হলে খুলে দেখো
ভাজে ভাজে সাজানো 
অপেক্ষা 
আকাঙ্ক্ষা 
মৃত মথ
কুৎসিত কদাকার
প্রজাপতি হতে না পেরে
বন্দি হয়ে ছিল
ভাজে ভাজে সাজানো
অপেক্ষা
উড়ে যাবার
আলো দেখার
ফুলের সুগন্ধি মেখে
উৎসবে যোগ দেবার
অপেক্ষা
ম্লান আর বিবর্ণ এখন
ভাজে ভাজে
খেরোখাতা
ছেড়া পাতা
তবু রেখে দিও যত্ন করে
এছাড়া কিছু নেই
ভাজে ভাজে সাজানো
অপেক্ষা
আকাঙ্ক্ষা
সব কিছু মৃত
স্থবির

বাক্সের মাঝখানে

মগজের চারিপাশে এক বাক্স
বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে
নীল আর খোলা আকাশ থেকে
আদিযুগের গল্পে 
ঝুলে আছে ফাংগাস
মৃত-তালা পাঠশালা
দ্যাখেনা সূর্য
হলুদ আলো
রংকানা আটকে আছে
বাক্সের মাঝখানে

স্মৃতিবিস্মৃতি

ধীরে ধীরে আমি ডুবে যাচ্ছি
চোরাবালি স্মৃতিবিস্মৃতি 
এক সময় ভাবি
কোথাও আমার কিছু নেই
তবু কেনো পিছুটান এত?
ছেড়ে দিচ্ছি
ধীরে ধীরে লাগাম
মন থেকে
দেহ ফেলে এসেছে সেই কবে
যোজন যোজন দূরে
তবু কেনো পিছুটান এত?
কেন ভাবি কত কাজ
অগোছালো রয়ে গেল
কত কথা না বলা
রয়ে গেল
কত ছবি আকিনি আমি
কতভা্বে কতকিছু দেখি
কারুকে বলিনি কেনো
দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছি আমি
মোমের মত
গলে যাচ্ছি ধুম্রজালে
ভেসে ভেসে উবে যাচ্ছি
থেতলানো মন
নিয়ে

অপেক্ষা ছিল

অপেক্ষা করি
কোথাও কোন আওয়াজ নেই
শুধু আনচান করে মন অযথা 
ফিরে দেখি
এক বিশাল পথ পেড়িয়ে
এসেছি সম্পুর্ন একা
কেউ অপেক্ষা করেনি
কোথাও কখনও
কারু কোন পদচিহ্ন নেই
ফিরে দেখি সেই নিঃসঙ্গ পথে
কারু কোন হৃদস্পন্দন নেই
এমনকি কোন দীর্ঘশ্বাস
তবু অপেক্ষা ছিল
বাদুরের মত ঝুলে
ঘুমিয়ে ছিল স্বপ্ন নিয়ে
চোখ খুললেই উজ্বল হবে
আলো
হাতের মূঠোয় সূর্য নিয়ে
ঘুম ভাংবে
অপেক্ষা ছিল

মেঘ

পেজা তুলোর মত মেঘ 
উড়ে এলো 
ভাবলাম 
ভাজে ভাজে ধরে রাখবে আমায়
দুলিয়ে দোলনায়
গলে গেল
বৃষ্টি হয়ে
ভাসিয়ে নিলো
উঁচু উঁচু স্রোতে
ছুঁড়ে দিলো
হাজার ফুট নীচে
অন্য এক গ্রহে

সময় ফেরারী

আকাশের নীচে থাকি
আকাশ দেখার সময় হয়না
বৃস্টিতে ভিজি
সেই শিহরণ পাইনা
ভয় হয়
বুঝি শ্বাস রোধ হবে
মাঝপথে
আকাশ দেখার সময় হবে

মৃত্যু

কার যেন ভিজে আচলের অপেক্ষায়
শুখিয়ে গেছে
রক্ত
শার্ট এফোঁড়ওফোঁড়
বুলেটে ঝাঝড়া
কার যেন ডাক শোনার অপেক্ষাতে
চোখ আধবোজা
কালশিটা
নীচে
চোখের চারিপাশে
কার যেন দিন কাটে অপেক্ষায়
ছেলে ফিরে আসার

যুদ্ধ যুদ্ধ অন্যরকম

মেয়েরা যুদ্ধ করে প্রতিদিন
জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত
মেয়েরা ধোকা খায় প্রতিদিন
বাবার কাছে, ভাইয়ের কাছে, স্বামীর কাছে, ছেলের কাছে
মেয়েরা কস্ট পায় প্রতিদিন
মেয়েদের বঞ্চনা করা হয় প্রতিদিন
প্রতিদিন বাবারা মেয়েদের বিক্রি করে দেয়
তথাকথিত "ভাল পাত্রের" কাছে
সেই "ভাল পাত্র" প্রতিদিন সেই মেয়েকে ব্যবহার করে
মেশিনের মত, রান্না, ধোয়া, বাচ্চা উতপাদনে
সেই উতপাদন থেকে কুলাংগারের জন্ম হলে
সেও মেয়েদের ব্যবহার করে প্রতিদিন
মেয়েরা ব্যবহৃত হয় প্রতিদিন
মেয়েদের উতপাদনের নস্ট অংশের কাছে
মেয়েরা নস্ট হয়ে যায় প্রতিদিন
নস্ট করে স্নেহ
নস্ট করে ভালবাসা
সব হারিয়ে ফেলে প্রতিদিন
মেয়েরা হারিয়ে ফেলে প্রতিদিন
নস্ট শহরে নস্ট অংশ নস্ট করে ফ্যালে যা কিছু সুন্দর সৃষ্টি ছিল
মেয়েরা সৃষ্টি করে প্রতিদিন
মেয়েদের নস্ট অংশ তা ধবংস করে প্রতিদিন
ছেলে সন্তান জন্ম নিলে গলা টিপে মেরে ফেলো তারে
এইবার মা মরিয়ম জন্ম দিবে শুধু মেয়ে সন্তানের

অন্য মন

আজ ভিজে আকাশ
ভিজে ঘাস
ভিজে গেছে পথঘাট 
শুধু লেগেছে খড়া
আমার চোখে
চিন চিন করে
ব্যাথা বুকে
এ এক অন্য হৃদপিন্ড
ধুষোর আর বিষন্ন

উধাও

রোদ্দুর দেখিনি কতকাল
দেখিনি সারল্য শিশুর
এখন ওরা জন্ম নেয় বৃদ্ধের মত
গম্ভীর, নিয়ন্ত্রিত মগজ
প্রযুক্তি বাক্সের দ্বারা
প্রকৃতিকে শুধু বিক্ষুব্ধ করে
সুন্দর যা কিছু
ধ্বংস করে
নিয়ন্ত্রিত মগজ
ভাবনাহীন ভাবলেশহীন ভালবাসাহীন

নিখোঁজ কবিতা

মাঝে মাঝে তোমাকে খুজি
কবিতা
আকাশ, মেঘ, রোদ, বৃষ্টি, চাঁদ
কোথাও নেই তুমি
কবিতা
বুকে টোকা দিয়ে
কান পাতি
হৃদয়ে লুকিয়ে আছো কিনা
কবিতা
ঝরা পাতারা ফেরেনা ডালে
উড়ে গেছে কোন কালে
মিশে গেছে দূমড়ে মুচড়ে
ধুলোমাটি ঘাসে
প্রেরণা যুগিয়েছে মাটিতে
ফিরে পেতে নতুন পাতা ডালে
শুধু তোমাকে ফিরে পেতে
হাসিমুখ দেখিনি কোথাও
কবিতা
সব মুখ বিষন্ন বিরক্ত হতাশ দুখী
খুজে পাইনি কোথাও
কবিতা

আলোছায়া

আধো আলো আধো ছায়া
আলো আলো সব কথা
সূর্য আর আমার মন
বার বার ফিরে আসে
আমি ফুরিয়ে যাই
দৌড়ে দৌড়ে
মরিচিকার পিছে
সূর্য তেমন থাকে
অনাদি কাল ধরে
যদি ফিরে আসি মেঘ হয়ে
প্রখর আলোকে ঢেকে দেবো তবে
জানি সে গলিয়ে দেবে মন
বৃষ্টি হয়ে ঝরবো তখন
অঝোর ধারে

খুজে নিও

অতীত থেকে
মেখে নিও ধুলো
ঠোটে
ভালবাসা 
রেখেছি ভরে খামে
বিলি হয়ে গেছে
ভুল ঠিকানায়
ভুল করে

পিশাচ

সরে আসতে পারিনি
দুর্দশা থেকে
জেনেও
অজানা ভেবে 
কন্ঠাতে বিষাক্ত দাত
রক্তচোষা পিশাচ
নীল কালশিটা হৃদয়
মৃত বিশ্বাস
ফেলে এসেছি
অনেক অনেক পথ
ধুয়ে গেছে স্মৃতি
উবে গেছে স্বপ্ন
যা কিছু সুন্দর
সব বিবর্ণ আজ
বিশ্বাসের ফসিল
ঝুলে থাকে
রক্তচোষা পিশাচের দাতে

কোথায় ছিলে কাল ?

কাল কোথায় ছিলে?
বৈশাখী ঝরে
কাল কোথায় ছিলে?
উত্তাল প্লাবনে
কাল কোথায় ছিলে?
ক্ষুধা, খড়া, উত্তাপে
কাল কোথায় ছিলে?

গোপন

শব্দগুলো লুকিয়ে রেখেছি
অদৃশ্য বাক্সে
কেউ যেন শুনে না ফ্যালে
কেউ যেন দেখে না ফ্যালে
আমার মনের
দেওয়ালে আকা সিঁড়ি
কেউ যেন পৌছুতে না পারে
সেই চিলেকোঠাতে
সেখানে চড়ুইপাখি
তা দেয় ডিমে

পান্ডুলিপি

আপাদমস্তক চোখ বুলিয়ে
দেখি কি যেন নেই
কোন এক খানে
এক টুকরো
জীবন
খেয়ে গেছে উইপোকা
কি এক অপূরণীয় ক্ষতি
ক্ষতের মত
চোখ মেলে অভিযোগ করে
ঠোটে সাড়া না দিয়ে
শুধু মেলে ধরে
অসম্পুর্ন পাণ্ডুলিপি

বিলুপ্ত

অব্যক্ত বেদনা
ছিল
ওদের সবার চোখে
একটি
হৃদপিন্ড থেকে
ভাগ করে নেওয়া
ব্যাথা
সাজিয়েছে
অনেকগুলো চোখে
ব্যাথারা এখন
একাকি চোখে
বিচ্ছিন্ন, বিলুপ্ত প্রায়

আসে যায়

প্রতিদিন সে আসে
প্রতিদিন সে অপেক্ষা করে
প্রতিদিন চোখ মেললে
উবে যায় নিমেষে
এমনি লুকোচুরি খেলা
খেলে সে প্রতিদিন
নিয়তির মত
সময়ের মত
টেনে হেচড়ে নিয়ে চলে
বেচে থাকার কারণ হয়ে
ক্লান্ত হয় মন
বুকে হাটি সরীসৃপের মতো
থেঁতলে যায় হৃদপিন্ড
সেই কারণ এসে বসে
আমার শবের একপাশে

বাদুর

ভাবনাগুলো বাদুরের মত
মাথা ঝুলিয়ে দোল খায়
সে শুধু নিজেকে দ্যাখে
রোদ লাগা ঝকমকে কাচে
বিপরীত মেরুতে বসে
গোগ্রাসে গিলে
উদোরে জমা রাখে
উদ্বৃত্ত
সে সব কিছু চায়
দু:খ ছাড়া
খাদ্য চায়
খেলনা চায়
হজমে অপারগ হলে
উচ্ছিষ্ট করে
ছুড়ে ফেলে দিতে চায়
মিশিয়ে দিতে চায় ধুলোতে
অস্বীকার করতে চায়
সকল পাওয়াতে
সকলের অস্তিত্ব

লেনদেন

ক্রেতা খুজছি 
এতদিনের জমানো 
দু:খগুলো বেচে দেবো সের দরে
একেবারে চকচকে
আনকোরা 
দু:খ আছে
এক ফোটা অশ্রু স্পর্শ করেনি
পলিথিনে সীল্ড প্যাকেজ
দু:খ আছে
ফ্রেস উতপাদন
হৃদয়ের মাঝখান থেকে
আধখানা টুকরো
উত্তপ্ত
দু:খ আছে
সব নিলামে দেবো
আমাকে ছেড়ে যেতে
দু:খরা দু:খ পাবে
আমার নাড়ি ছেড়া দু:খরা
দু:খ পাবে
আমাকে ছেড়ে যেতে

প্রতিদিন

ডানা ঝাপটে উড়ে গেল বিষন্ন কাক
সন্ধ্যার মত উদাস হলো সবুজ ঘাস
সকালের অপেক্ষাতে কেটে গেল রাত
সূর্যের আলোতে ম্লান হলো চাঁদ
ব্যস্ত শহরে শুরু হলো ছকে বাধা কাজ
দুপুর গড়িয়ে গেলে ভেসে এলো শ্লোগান
গলি থেকে চৌরাস্তায়
মুদী দোকানের পাশ কাটিয়ে যেতে যেতে
চললো গুলি মিছিলে
দাড়িপাল্লা ধরে দোকানের চৌকাঠে
লেগে থেমে গেল
মুদী দোকানীর রক্তাক্ত লাশ

চক্র

অসাধ্য কিছুই নয়
শুধু সাহস নেই
রুখে দাড়াবার
ইচ্ছাও থাকে না
স্বার্থ না থাকলে
কূল ভেংগে গেলে
নদী থামেনা
এগিয়ে যায়
কূল খুঁজে নেয়
নদী মরে গেলে
কৃষকেরা হাল ছেড়ে দেয়
নিরুপায় হয়ে
জীবন থামেনা
শ্বাস নেয় পলিথিনের ছাদের নীচে
রেল লাইনের দুই পাশে
যেখানে
বহুতল ভবন উঠতে পারেনা
উচ্ছেদ করার দরকার হয়না
সেখানে
অকালে শিশুরা বৃদ্ধ হয়
সেখানে
ইয়াবার চালান
হাল তুলে নেয় কাঁধে

সেই মেয়ে

তাহলে চলো ঘুরে আসি
তপ্ত রোদ মেখে নির্জন দুপুরে
এক গাদা ডাহুক খেলা করে
ছাতিম গাছের শাখায়
শ্যাওলা ভরা পুকুরে নাক ডুবিয়ে
শামুক তোলে পানকৌড়ি
ব্যংগাচী ছায়া খুজে শাপলা পাতার নীচে
ধূলোধুষোরিত পথে কার ভাংগা চুড়ি
টেনে নিয়ে যায় আলের ভেতর
সেখানে ঘুমায় রক্ত কাদা মাখা
ধর্ষিতা মেয়ে

সম্ভাবনা

দুপুর গড়াতেই ভয়
এই বুঝি বিকেল পেড়িয়ে
সন্ধ্যা লেগে যাবে
হারিয়ে যাবে আর একদিন
ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর
হবে সময়
এই বুঝি বাকী রয়ে যাবে
বলা
সেইসব না বলা
কবিতা গল্প গান
মান অভিমান
বিকেল পেড়ুতে লেগে যায় সন্ধ্যা
আকাশ সাজে হরেক রংগের প্রলেপ দিয়ে
মেঘেরা সব ঘুমিয়ে যায়
আগামীর বাদল হয়ে
ফুরিয়ে যায়
বাকী থেকে যায়
কাজ আর সাজ
সন্ধ্যা নামতেই বিষণ্ণতা আনে
যদি
সূর্যি আর
ফিরে না আসে!!

বৃষ্টি ঝরে

এখনও বৃষ্টি ঝরে
টিপ টিপ
চুপিসারে ফিসফিস
কিশোরীর সিল্ক ফিতে
ভিজে আছে
পথে জমে থাকা এক চিলতে জলে
পাতারা থিরথির
ভিজে শালিক দ্যাখে এদিক ওদিক
কোত্থাও কেউ নেই
জমে আছে জল
জলের নীচে কাদা
তার নীচ থেকে কেঁচো খুঁড়ে খাবে

Monday, January 19, 2015

রক্তচোষা

আজ তুমি আমার হাতের রেখা পড়ো
পয়ত্রিশ বছর আগে যেমন পড়েছিলে
সব রেখা তেমনি আছে
আঁকা বাকা ছোট খাটো
তেরচা মেরুন সরু সরু
দুর্বোধ্য প্যারিসের সাবওয়ে স্টেশনের মত
ছড়ানো ছিটানো জড়ানো বাঁকানো মোড়ানো
জটিল জীবনের মত
আজ বলো হাতের রেখা পড়ে কেউ কিছু বলতে পারেনা
চোখ দেখে বলে
ঠোট দেখে বলে
মুখ দেখে বলে
সূর্য দেখে বলে
মেঘ দেখে বলে
অশ্রু দেখে বলে
বাজারের জনপ্রিয় এন্টিবায়োটিকস এর মত
নিরুপায় দেহে প্রবেশ করে
তারপর মগজে খবর পাঠায়
তারপর কাজ শুরু হয়
তারপর ব্যর্থতা এসে ভেঙ্গে দিতে চায়
ততক্ষনে মুনাফা উঠে গেছে ঘরে ঘরে
ততক্ষনে রক্ত চোষা শেষ
ছোবড়া করে ফেলে দিয়েছে দেহ
ততক্ষনে রক্তরা সব অন্য দেহে নাচে
আমার দেহ থেকে অন্য দেহে
রক্তরা উল্লাস করে
আমার মত হাসে

Sunday, January 18, 2015

সহজ অংক

না রাখার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ প্রতিশ্রুতি
বুঝতে পারোনি আমি কি বলেছি
আমি তো এটা বলিনি
আমি তো সেটা বলিনি
আমি কি বলেছি তুমি বোঝোনি
আমার প্রতিশ্রুতি ছিল
আর আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম
সেই প্রতিশ্রুতি না রাখার জন্য

সত্যের দুর্দশা

সবাই জানে
কেউ বলে না
সত্য এক লজ্বার মত 
অপ্রকাশিত থাকে 
সত্য এক অপরাধির মত
পালিয়ে বেড়ায়
কেউ বলে না
সত্য অবাঞ্ছিত
অনাহূতের মত
দূরে থাকে
কেউ কাছে ডাকে না
সবাই জানে
সত্য আছে ছায়ার মত
মিথ্যার ঠিক পেছনে
অপ্রত্যাশিত

সান্তনা

নিরুপায়, অসহায় আর দুর্বলেরা ধর্মরে গালি দেয়
কর্তৃপক্ষের কিছু ছিড়তে পারেনা
ভারতের বানানো গাড়িতে চড়ে
কার্বন এমিশনে ভাইয়ের শ্বাসরোধ করে
নিজ দেশে ভারতীয় হুজুরের অধীনে চাকুরী করে
বেতনের পুরাটাই ভারতীয় পন্য ক্রয়ে শেষ
ঋনের জন্যেও ভারতের কাছে হাত পাতে
দুই পুরুষ ভারতের কাছে বন্ধক
ভারতের কিছু ছিড়তে পারেনা
হাজার বছর আগের কিসসা ও কাহিনীরে ছেড়ে
দুর্বল, ভিরু, কাপুরুষেরা
নিজের ভাইয়ের গলাতে পা দিয়ে দাঁড়ায়ে
ভারতের আপদমস্কক চাটাচাটি করে
মিরজাফরের বাচ্চারা এখন জেগেছে
পুজাপাঠে মেতেছে
দালালীর কমিশনে যদি আরও এক পুরুষেরে
রাখা যায় বন্ধক
আশায় বুক বেঁধে মেরুদ্বন্ডহীন স্থবির
পশুরা বুকে হাটে
লালা ফ্যালে - বিদেশী প্রভু খোঁজে
হাত ধরে উঠে দাঁড়াতে
হাজার বছরে পুরানা রুপকথা ছেড়ে
ভাঙা মেরুদ্বন্ডে গোঁজে

চক্র

অপরিচিত সব পথঘাট
অপরিচিত সব মানুষজন
শুধু আকাশ ছিল পরিচিত
সেই একই মেঘ 
অনুসরণ করছে অদ্যবধি
শুধু রঙ বদল হয়
আকাশ আর মেঘের
শুধু পরিচিত ছিল প্রতিবিম্ব
সেই একজোড়া চোখ
অনুসরণ করেছে পদচিহ্ন
সাজিয়ে রেখেছে স্মৃতি
লাভ আর ক্ষতি
অপরিচিত ছিল মন
অপরিচিত ছিল সুখ
সেই একই দুঃখ
অনুসরণ করেছে অদ্যবধি
শুধু কারণ বদলায়
দূঃখের
সেই পরিচিত পরিণতি
অপরিনত ইচ্ছা
পরিচিত ছিল দুঃখ
আগের মত অকপট
আগের মত চুপচাপ
কুঁড়ে কুঁড়ে খায় উইপোকার মতোন
সেই আগের মতোন

নেই

অত:পর পর্দা নামে 
যবনিকাপাত ঘটে
সব রং ধুয়ে মুছে 
পরিপাটি ভাজ হয়ে
ড্রয়ারে ঘুমিয়ে যায়
ক্লান্ত কস্টিউম
চাকা ঘষে মোড় ঘুড়ে
ট্যাক্সি এসে অপেক্ষা করে
যাত্রী নেমে গেলে
ধূয়া উড়িয়ে
অদৃশ্য হয়
মনে রাখেনা সড়কের নাম

সাদা সাদা কাগজ

সাদা সাদা কাগজে কালির আঁচর নেই
কুয়াশা কুয়াশা 
অস্পষ্ট অবয়ব 
মেঘে মেঘে জমে থাকে অভিমান
ভেবে ভেবে 
রাত ভোর হয়
কালো আর কমলা রেখার নীচে সূর্য হাসে
আলোতে সে অন্য রকম
গাড়, রক্তিম, সুদীপ্ত
তারপর ক্লান্তি
বিষাদে ছেয়ে যায় সমস্ত বিকেল
মুছে যায় সব কাহিনী
সাদা সাদা কাগজে কালির আঁচর নেই
কবিতা লেখা হয়না কোনদিন

অচল সিকি

সিকির দুই পিঠেই সেই এক মুখ
তাই বলা হলো 
যখন বিশ্বাস করবে 
তখন চোখ বন্ধ রেখো
যখন বিশ্বাস ভংগ হবে 
তখন ভাগ্যকে কষাঘাত করো
যা বলা হয়
তা বলা হয়
তার জন্য
যে বলে
যাকে বলে তাকে অন্ধ হতে বলে
চোখ বুজলেই
সর্বস্ব নিয়ে পালিয়ে যায়
শুধু ভাগ্যকে ফেলে যায়
কষাঘাতের জন্য