Sunday, May 1, 2016

অকারণে

শুধু কারণ খুঁজি 
অকারণে
ভাঙ্গা ভাঙ্গা সব অকেজো মনের টূকরো
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চারিদিকে
জোড়া লাগাতে পারিনা
কেনো পারিনা তার কারণ খুঁজি
এত বিশৃঙ্খলা
উদ্ভট সব কাজ আর কথা
কারণ খুঁজি
কেনো শুনি এইসব
কারণ খুঁজি
অকারণে
কেনো বলি এইসব
আসলে এত জঞ্জালের একটাই কারণ
খুঁজে পাই
অনেক আবর্জনা ঢেকে রাখতে
আরো অনেক আবর্জনার স্তুপ জমেছে
মন রূপান্তরিত হয়ে গেছে
আবর্জনায়

ঘাতক

শতাব্দী ধরে হচ্ছে রক্তক্ষরণ
মগজে 
লাগেনি ছিটেফোঁটা?
একটু? আধটু?
আমি তো অনুপ্রবেশকারী
টাইমলাইনে
সেখানে জাগা খালি নেই
সবখানেই গিজগিজ করে
ঠাসা ইট সিমেন্ট চূন সুরকী
দেখে এলাম
বুঝে নিলাম, যা বোঝার
হৃদয় নিখোঁজ কতকাল
হয়েছে সেও তা জানেনা
তবু রয়ে গেছে প্রত্যাশা
হৃদয়ের
ভেংগে ভেংগে
ছিঁড়েখুঁড়ে
খাবে তারে
তারপর ছুড়ে ফেলে দিতে খোসা

অরক্ষিত


তারপর?
থাকা বা না থাকা
কিছু যায় আসেনা
ধূলিঝড়ে ঝাপসা সড়কে
অবশ পা
থাকা বা না থাকা
আঁকিবুঁকি কাটাকুটি
মুছে দেয় উত্তাল ঢেউ
ফণা তুলে উঠে আসে
বিষাক্ত অজগর
কিছু যায় আসেনা
হাড়গোড় ভেংগে চুরমার
তারপর?
ডানা ভেংগে প্রজাপতি
চিত হয়ে উবে যায়
লিলুয়া বাতাসে।
তারপর
থাকা বা না থাকা
কিছু যায় আসেনা

হৃদয়ে হায়েনা


অনুভূত হলো
হৃদয়ে হায়েনা
ভেবে ভেবে বিভ্রান্ত
কার থেকে বিবর্তিত
বানর, শুকর নাকি হায়েনা
চতুষ্পদ বা দ্বিপদ
কিছু যায় আসেনা
যা বুঝতে চাও
বুঝে নাও
প্রকাশে হায়েনা
কবিতায় হায়েনা
গানে হায়েনা
বুলেটে হায়েনা
কোপে কোপে রক্ত উঠে ফিনকি দিয়ে
হৃদয়ে হায়েনা ঘুমায়
নখে রক্ত ভিজিয়ে
খাবারে হায়েনা
বালিশে হায়েনা
প্রিয়তমার দীঘল চোখে হায়েনা
সব প্রেমে হায়েনা
প্রতীক্ষার প্রহর গুনে
মাঝরাতে চুপিসারে এসে
বুকের উপরে রাখে হীম ছুড়ি
তারপর গর্ত করে
রক্ত শুষে নেয় হায়েনা
অনুভূত হলো
হৃদয়ে হৃদয়ে
আকাশে, মেঘে, বৃষ্টিতে, অশ্রুতে
হায়েনা

স্মৃতিচারণ

স্মৃতিতে ঝুলে থাকে মন
বহুযুগের অপেক্ষার মত
কথা হয়েছিল একদিন
শুধু একবার
লোডশেডিং ছিল
ল্যাপটপের আলোটা টিম টিম
নিভে গেল
ব্যাটারি মরে গেলে
স্মৃতিতে সেই মুখ ভাসে
আর কোনদিন দেখবনা তারে
সেকি জানে আমিও আসছি
তার কাছে?
এবারে তারাদের সাথে নিয়ে
বসবো মুখোমুখি যেয়ে
সেকি জানে আমিও আসছি
হৃদয়ের আলো জ্বেলে
নদীর আধখানা বাঁকে
উপচে উঠা জোছনা মেখে
সাঁকোর উপর বসবো
পা ঝুলিয়ে
সেকি জানে তার মুখ ঝুলে থাকে
আমার চোখের তারাতে?
[স্মৃতিচারণ - নরুন্নবী খোকন
ট্রাকের মুখোমুখি গাড়ি সংঘর্ষে দুর্ঘটনায় মারা যায় খোকন। খোকন ছিল আমার বন্ধু আর কবিতার অনুপ্রেরণা। খোকন ছিল আমার সুহৃদ। খোকন যখন মারা যায় তার ছয় মাস আগে আমি তার সাথে ঝগড়া করে কথা বন্ধ রেখেছিলাম।]

আয়োজন


শুরু হলো আয়োজন
রান্নাবাড়া, বাসন মাজা, গোছগাছ
সাজগোছ
রক্তশূন্যতা, ঝাপসা চোখ
শুরু হলো আয়োজন
নতুন জীবন যাত্রা
ভাবছি কি কি সাথে নেবো
এক মুঠো মেঘ
নতূন জীবনে ছাদ নেই
তাই আকাশটা সাথে নেবো
পা দু'টো এত অবশ
মেঘেদের ভেলাতে
ভেসে পৌছুবো নতুন দেশ
হাত আর আংগুলে চিন চিনে ব্যাথা
শরীর ধবসে যায়
স্লো মোশনে
প্রথমে মন মরে
তারপর দেহ মিশে যায়
ধীরে ধীরে
ফসিল হয়
বিবর্তিত হয়
তেল হয়, ঘাস হয়, পাথর হয়, কয়লা হয়
দেহ মিশে যায়
তারও বহুযুগ আগে
হৃদয় খুন হয়ে যায়
হৃদয়হীন প্রেম কাব্যঘাতে
আয়োজন চলে
নতুন জীবনের

প্রত্যক্ষদর্শী

আজ বহুদিন হলো
কেউ আমার খোঁজ করেনা
আমি তো সেই বৃক্ষও হতে পারিনি

ঝরে যাওয়া পাতা যার ফিরে আসে বারে বারে
আজ বহুদিন হলো
নাম গোত্রহীন কবর আমি
যেখানে প্রতি মাসে আনুমানিক পাঁচটি লাশ দাফন করা হয়
মৃতের বাজার ভাল আজকাল
কবর খুব জমিয়ে স্বাগত জানাচ্ছে নতুন লাশের
উৎসবে লেগে থাকে শেয়ালেরা
রাতভর শিতল চোয়াল ছিড়ে খেতে
আজ বহুদিন এইসব উৎসব চলে
চারপাশে
আমি প্রত্যক্ষদর্শী