Monday, January 19, 2015

রক্তচোষা

আজ তুমি আমার হাতের রেখা পড়ো
পয়ত্রিশ বছর আগে যেমন পড়েছিলে
সব রেখা তেমনি আছে
আঁকা বাকা ছোট খাটো
তেরচা মেরুন সরু সরু
দুর্বোধ্য প্যারিসের সাবওয়ে স্টেশনের মত
ছড়ানো ছিটানো জড়ানো বাঁকানো মোড়ানো
জটিল জীবনের মত
আজ বলো হাতের রেখা পড়ে কেউ কিছু বলতে পারেনা
চোখ দেখে বলে
ঠোট দেখে বলে
মুখ দেখে বলে
সূর্য দেখে বলে
মেঘ দেখে বলে
অশ্রু দেখে বলে
বাজারের জনপ্রিয় এন্টিবায়োটিকস এর মত
নিরুপায় দেহে প্রবেশ করে
তারপর মগজে খবর পাঠায়
তারপর কাজ শুরু হয়
তারপর ব্যর্থতা এসে ভেঙ্গে দিতে চায়
ততক্ষনে মুনাফা উঠে গেছে ঘরে ঘরে
ততক্ষনে রক্ত চোষা শেষ
ছোবড়া করে ফেলে দিয়েছে দেহ
ততক্ষনে রক্তরা সব অন্য দেহে নাচে
আমার দেহ থেকে অন্য দেহে
রক্তরা উল্লাস করে
আমার মত হাসে

Sunday, January 18, 2015

সহজ অংক

না রাখার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ প্রতিশ্রুতি
বুঝতে পারোনি আমি কি বলেছি
আমি তো এটা বলিনি
আমি তো সেটা বলিনি
আমি কি বলেছি তুমি বোঝোনি
আমার প্রতিশ্রুতি ছিল
আর আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম
সেই প্রতিশ্রুতি না রাখার জন্য

সত্যের দুর্দশা

সবাই জানে
কেউ বলে না
সত্য এক লজ্বার মত 
অপ্রকাশিত থাকে 
সত্য এক অপরাধির মত
পালিয়ে বেড়ায়
কেউ বলে না
সত্য অবাঞ্ছিত
অনাহূতের মত
দূরে থাকে
কেউ কাছে ডাকে না
সবাই জানে
সত্য আছে ছায়ার মত
মিথ্যার ঠিক পেছনে
অপ্রত্যাশিত

সান্তনা

নিরুপায়, অসহায় আর দুর্বলেরা ধর্মরে গালি দেয়
কর্তৃপক্ষের কিছু ছিড়তে পারেনা
ভারতের বানানো গাড়িতে চড়ে
কার্বন এমিশনে ভাইয়ের শ্বাসরোধ করে
নিজ দেশে ভারতীয় হুজুরের অধীনে চাকুরী করে
বেতনের পুরাটাই ভারতীয় পন্য ক্রয়ে শেষ
ঋনের জন্যেও ভারতের কাছে হাত পাতে
দুই পুরুষ ভারতের কাছে বন্ধক
ভারতের কিছু ছিড়তে পারেনা
হাজার বছর আগের কিসসা ও কাহিনীরে ছেড়ে
দুর্বল, ভিরু, কাপুরুষেরা
নিজের ভাইয়ের গলাতে পা দিয়ে দাঁড়ায়ে
ভারতের আপদমস্কক চাটাচাটি করে
মিরজাফরের বাচ্চারা এখন জেগেছে
পুজাপাঠে মেতেছে
দালালীর কমিশনে যদি আরও এক পুরুষেরে
রাখা যায় বন্ধক
আশায় বুক বেঁধে মেরুদ্বন্ডহীন স্থবির
পশুরা বুকে হাটে
লালা ফ্যালে - বিদেশী প্রভু খোঁজে
হাত ধরে উঠে দাঁড়াতে
হাজার বছরে পুরানা রুপকথা ছেড়ে
ভাঙা মেরুদ্বন্ডে গোঁজে

চক্র

অপরিচিত সব পথঘাট
অপরিচিত সব মানুষজন
শুধু আকাশ ছিল পরিচিত
সেই একই মেঘ 
অনুসরণ করছে অদ্যবধি
শুধু রঙ বদল হয়
আকাশ আর মেঘের
শুধু পরিচিত ছিল প্রতিবিম্ব
সেই একজোড়া চোখ
অনুসরণ করেছে পদচিহ্ন
সাজিয়ে রেখেছে স্মৃতি
লাভ আর ক্ষতি
অপরিচিত ছিল মন
অপরিচিত ছিল সুখ
সেই একই দুঃখ
অনুসরণ করেছে অদ্যবধি
শুধু কারণ বদলায়
দূঃখের
সেই পরিচিত পরিণতি
অপরিনত ইচ্ছা
পরিচিত ছিল দুঃখ
আগের মত অকপট
আগের মত চুপচাপ
কুঁড়ে কুঁড়ে খায় উইপোকার মতোন
সেই আগের মতোন

নেই

অত:পর পর্দা নামে 
যবনিকাপাত ঘটে
সব রং ধুয়ে মুছে 
পরিপাটি ভাজ হয়ে
ড্রয়ারে ঘুমিয়ে যায়
ক্লান্ত কস্টিউম
চাকা ঘষে মোড় ঘুড়ে
ট্যাক্সি এসে অপেক্ষা করে
যাত্রী নেমে গেলে
ধূয়া উড়িয়ে
অদৃশ্য হয়
মনে রাখেনা সড়কের নাম

সাদা সাদা কাগজ

সাদা সাদা কাগজে কালির আঁচর নেই
কুয়াশা কুয়াশা 
অস্পষ্ট অবয়ব 
মেঘে মেঘে জমে থাকে অভিমান
ভেবে ভেবে 
রাত ভোর হয়
কালো আর কমলা রেখার নীচে সূর্য হাসে
আলোতে সে অন্য রকম
গাড়, রক্তিম, সুদীপ্ত
তারপর ক্লান্তি
বিষাদে ছেয়ে যায় সমস্ত বিকেল
মুছে যায় সব কাহিনী
সাদা সাদা কাগজে কালির আঁচর নেই
কবিতা লেখা হয়না কোনদিন

অচল সিকি

সিকির দুই পিঠেই সেই এক মুখ
তাই বলা হলো 
যখন বিশ্বাস করবে 
তখন চোখ বন্ধ রেখো
যখন বিশ্বাস ভংগ হবে 
তখন ভাগ্যকে কষাঘাত করো
যা বলা হয়
তা বলা হয়
তার জন্য
যে বলে
যাকে বলে তাকে অন্ধ হতে বলে
চোখ বুজলেই
সর্বস্ব নিয়ে পালিয়ে যায়
শুধু ভাগ্যকে ফেলে যায়
কষাঘাতের জন্য